মেলার নামে অশ্লীল নৃত্য ভিড় বাড়ছে শিক্ষার্থীদের

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নের আজাদ মেলায় বিভিন্ন প্যান্ডেলে যাত্রা, ভ্যারাইটি শো ও পুতুল নাচের নামে চলছে অশ্লীল নৃত্য। আর এসব প্রদর্শনীতে দর্শক সারিতে ভিড় বাড়ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের।
গত শুক্রবার মেলায় গিয়ে দেখা যায়, চারটি প্যান্ডেলে পুতুল নাচ ও ভ্যারাইটি শো চলছে। একটি সার্কাস ও দুটি যাত্রাপালা বসেছে। প্রতিটি প্যান্ডেলেই অশ্লীল নাচ-গান চলছিল। এসব প্যান্ডেলে নানা বয়সী স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের ভিড় দেখা গেছে। ১৫ নভেম্বর থেকে মেলা শুরু হয়েছে বলে মেলা পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, গরু-মহিষ কেনাবেচার জন্য রুহিয়া আজাদ মেলার নামডাক ছিল। মেলা থেকে পছন্দের পশু ক্রয় করতে ভিড় করত বিভিন্ন এলাকার মানুষ। কিন্তু এখন মেলার প্রথম দু-এক দিনেই পশু বিক্রি শেষ হয়ে যায়। এ বছর মেলায় মাত্র ২৭টি পশু বিক্রি হয়েছে। আর প্রথম দিন থেকেই বিভিন্ন প্যান্ডেলে চলছে যাত্রা, সার্কাস, পুতুল নাচের নামে অশ্লীল নাচ-গান। শুক্রবার জুমার নামাজের পর রুহিয়া-রামনাথহাট সড়কে মেলার নামে অশ্লীলতা বন্ধে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় লোকজন।
শিক্ষক গোলাম হাফিজ বলেন, মেলায় যাত্রা ও ভ্যারাইটি শোর নামে প্রকাশ্যে যে অশ্লীল নাচ-গান চলছে, তাতে উঠতি বয়সের কিশোর ও যুবকেরা নষ্ট হতে বাধ্য। রুহিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শহিদুল ইসলাম, নাজমুল হক ও আহসান হাবিব জানায়, তাদের অনেক সহপাঠী নিয়মিত যাত্রা দেখতে যায়। এ জন্য তারা পড়ালেখায় পিছিয়ে পড়ছে। অনেকেই যাত্রা ও পুতুল নাচ দেখে এসে সহপাঠীদের কাছে বর্ণনা করছে।
রুহিয়া মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী ফেরদৌসী বেগম ও নাজমা আক্তার জানান, বিকেল হলেই মাইকে উচ্চ স্বরে গান-বাজনা শুরু হয়। সন্ধ্যার পর তা বাড়তে থাকে। এ কারণে পড়ালেখায় মনোযোগ থাকে না। চৈতালী অপেরার পরিচালনা কমিটির এক সদস্য জানান, শুধু দর্শক টানতে বাইরের শিল্পীরা নৃত্যের নামে কিছুটা অশ্লীলতা দেখান। মেলা পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেন বলেন, আজাদ মেলা একটি ঐতিহ্যবাহী মেলা। এ মেলায় যাত্রার নামে কোনো অশ্লীলতা মেনে নেওয়া হবে না। প্রথম কয়েক দিন অশ্লীল নাচ-গান চললেও এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, অভিযোগ সত্য হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।