যুক্তরাষ্ট্রে এক বাংলাদেশির ৪৬ মাসের জেল

মেক্সিকো ও যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত প্রাচীর
রয়টার্স ফাইল ছবি

মেক্সিকো থেকে যুক্তরাষ্ট্রে মানব পাচারের পরিকল্পনায় ভূমিকা রাখার অভিযোগে দেশটিতে বসবাসকারী মোক্তার হোসেন নামের এক বাংলাদেশি নাগরিককে ৪৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। কারাদণ্ড শেষে পরের তিন বছরের জন্য তাঁকে নজরদারিতে রাখা হবে। মোক্তার হোসেন অতীতে মেক্সিকোর মন্টেরিতে থাকতেন।

আজ রোববার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

মামলার বিবরণ অনুযায়ী, মোক্তার হোসেন  স্বীকার করেছেন যে তিনি ২০১৭ সালের মার্চ থেকে ২০১৮–এর আগস্ট পর্যন্ত অর্থের বিনিময়ে টেক্সাস সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের পরিকল্পনা করে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যান। তিনি মেক্সিকোর মন্টেরিতে থেকে পাচার কাজ চালাতেন। সেখানে তিনি একটি হোটেলের ব্যবস্থা রেখেছিলেন। যেখানে বহিরাগতরা যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পথে আশ্রয় নিত। এসব লোকজনকে যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে পৌঁছে দিতে মোক্তার হোসেন গাড়িচালকদের টাকা দিতেন এবং কীভাবে রিও গ্র্যান্ডে নদী পার হতে হবে, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র যেতে আগ্রহীদের পরামর্শ দিতেন।

মার্কিন বিচার বিভাগের অপরাধ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ডেভিড পি বার্নস বলেন, মামলার আসামি একটি সংগঠিত চোরাচালান নেটওয়ার্কের একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন। যিনি মুনাফার জন্য কাজ করতেন এবং যেসব বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে চাইত, তাদের শিকারে পরিণত করতেন। এই দণ্ডাদেশ এ ধরনের আন্তসীমান্ত অপরাধ সংগঠনে জড়িতদের জন্য একটি সুস্পষ্ট নিরোধক হিসেবে কাজ করবে।

সীমান্ত নিরাপত্তা ও জাতীয় নিরাপত্তা আসলে একই বিষয় বলে মন্তব্য করেন টেক্সাসের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলার জন্য নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নি রায়ান কে প্যাট্রিক। রায়ান প্যাট্রিক বলেন, ‘আমাদের অবশ্যই জানতে হবে কারা আমাদের দেশে প্রবেশ করছে এবং কাউকে আমরা অবারিত সুযোগ দিতে পারি না। এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমার অফিস সব সহযোগী সংস্থার সঙ্গে অব্যাহতভাবে কাজ করছে।’

সান অ্যান্টোনিওর যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশনের ভারপ্রাপ্ত বিশেষ প্রতিনিধি শেন ফোল্ডেন বলেন, ‘মোক্তার হোসেনের অপরাধের তদন্ত, বিচারকার্য ও দণ্ড প্রদানের বিষয়টি আন্তর্দেশীয় তদন্তে বিশেষ জ্ঞান ও দক্ষতা এবং বিদেশি প্রতিনিধি সংস্থার সমন্বয়ে আন্তর্দেশীয় তদন্তকাজ সমন্বয়ে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশনের অনন্য সক্ষমতার ফলাফল। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার প্রতি হুমকি সৃষ্টিকারী অপরাধমূলক পাচার নেটওয়ার্কগুলোকে শক্ত হাতে নির্মূল করতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ইনভেস্টিগেশন দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে অব্যাহতভাবে কাজ করবে।’

টেক্সাসের দক্ষিণাঞ্চলীয় জেলায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাটর্নির কার্যালয়ের সহায়তায় এই মামলার বিচারকাজ পরিচালনা করেন ক্রিমিনাল ডিভিশনের হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড স্পেশাল প্রসিকিউশনস সেকশনের ট্রায়াল অ্যাটর্নি জেমস হেপবার্ন এবং এরিন কক্স।