যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তানি সেনার তালিকা প্রকাশ গণবিচার আন্দোলনের

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে চিহ্নিত ১৯৫ জন পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী সেনাসহ ২০০ জন সেনার নামের তালিকা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ গণবিচার আন্দোলন। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচার স্বাধীনতা হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তালিকা প্রকাশ করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক ও নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান।
সংবাদ সম্মেলনে শাজাহান খান বলেন, ‘আমাদের কাছে আরও কিছু তথ্য-উপাত্ত আছে। সেগুলো আমি পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করব।’ তিনি বলেন, ‘এরই মাঝে আমাদের আন্দোলনের ও দাবির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল উল্লেখিত পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী সেনাদের বিচারের প্রাথমিক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আমরা এই উদ্যোগকে অভিনন্দন জানাই সেইসঙ্গে ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক গঠিত তথ্য সংগ্রহ কমিটিকে আমাদের পক্ষ থেকে সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করছি।’
শাজাহান খান বলেন, আমাদের দাবিসমূহ জাতীয় সংসদে উত্থাপনের জন্য স্পিকারের কাছে স্মারকলিপি প্রেরণ করা হবে। আগামীকাল বিকেল তিনটায় জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে কয়েক হাজার মানুষের এক বিশাল মিছিল সহকারে আমরা সংসদ অভিমুখে যাত্রা করব। এ সময় ওই কর্মসূচিতে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি।
লিখিত বক্তব্যে শাজাহান খান বলেন, আন্দোলনের এই পর্যায়ে এসে আজ আমরা সেই একাত্তরের হানাদার নরপশু পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধী সেনা কর্মকর্তাদের তালিকা আপনাদের মাধ্যমে জনগণের সামনে প্রকাশ করছি। আমরা ইতিমধ্যে অপরাধীদের তালিকা সংগ্রহ ও তৈরি করতে গিয়ে পূর্বঘোষিত ১৯৫ জন সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে পাকিস্তান বিমানবাহিনী ও নৌ-বাহিনীর আরও পাঁচজন কর্মকর্তার সন্ধান পেয়েছি। ফলে বর্তমানে আমাদের হাতে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী পাকিস্তান বাহিনীর সেনা সদস্যদের যে তালিকা রয়েছে তার সংখ্যা হলো মোট ২০০ জন। এর মধ্যে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের ঘটনাগুলোর নীল-নকশা প্রণয়ন ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নেতৃত্বদানের অভিযোগে অভিযুক্ত ৬৮ জন। জেনেভা কনভেনশনসহ আন্তর্জাতিক সব যুদ্ধনীতি লঙ্ঘন করে সরাসরি গণহত্যা, ধর্ষণ, লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগে অংশ নেয় ১১৮ জন। ব্যাপক গণহত্যায় অংশ নেয় ১৪ জন। এই ১৪ জনের মাঝে পাকিস্তান নৌ-বাহিনীর তিনজন এবং বিমানবাহিনীর তিনজন।’
সম্প্রতি বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েন সম্পর্কে শাজাহান খান বলেন, ‘আমরা পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নষ্ট করতে চাইনি। কিন্তু পাকিস্তান শিষ্টাচার বহির্ভূত কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, দূতাবাসের একজন লোক ঘুরে বেড়াবে, ভারতীয় রুপি ও দুটি পাসপোর্ট তার কাছে পাওয়া যাবে; এটা অনৈতিক কাজ। সে জন্য পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই পারে।’
সংবাদ সম্মেলনে চলচ্চিত্রকার কাজী হায়াত, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন মহাসচিব ওসমান গণি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।