রক্ত চাইতেই রাজি হলেন ইউএনও

কিডনির রোগে আক্রান্ত ৮০ বছরের এক নারীর জন্য রক্ত প্রয়োজন। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে রক্তদাতা সংগঠনের বেশির ভাগ সদস্য গ্রামের বাড়ি গেছেন। এ অবস্থায় মনে পড়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কথা। ফোন করে রক্ত চাইতেই এককথায় রাজি হলেন তিনি।

এ কথা জানালেন ময়মনসিংহের স্বেচ্ছায় রক্তদাতা সংগঠন ব্রহ্মপুত্র ব্লাড কল্যাণ সোসাইটির উপদেষ্টা আলী ইউসুফ। তিনি সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) মহানগর শাখারও সম্পাদক। তিনি বলেন, রক্তদান করার পর ইউএনও বিষয়টি গোপন রাখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মানুষকে রক্তদানে উৎসাহী করতে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রচার করেন স্বেচ্ছাসেবীরা।

ওই ইউএনও হলেন শেখ হাফিজুর রহমান। সোমবার বিকেলে নিজের কার্যালয়ে বসে ওই কিডনির রোগীর জন্য রক্ত দিয়েছেন তিনি।

আলী ইউসুফ বলেন, কয়েক মাস আগে তিনি থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত এক শিশুর জন্য রক্ত চেয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেন। এর কিছুক্ষণ পর ইউএনও শেখ হাফিজুর রহমান ফোন করে শিশুটির জন্য রক্ত দিতে চান। কিন্তু ততক্ষণে শিশুটির রক্ত জোগাড় হয়ে যায়। পরে ইউএনও জানান, তিনি স্বেচ্ছায় রক্তদান করেন। খুব জরুরি প্রয়োজন হলে যেন তাঁকে বলা হয়। তিনি নিজের রক্তের গ্রুপও জানিয়ে দেন। ওই ঘটনার কয়েক মাস পর গত সোমবার কিডনি রোগে আক্রান্ত একজন নারীর জন্য রক্তের প্রয়োজন হয়। ওই নারী একটি ক্লিনিকে ভর্তি। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে স্বেচ্ছায় রক্তদাতারা অনেকেই গ্রামের বাড়িতে গেছেন। এ অবস্থায় হঠাৎ ইউএনওর কথা মনে হয়। ফোন করতেই তিনি রাজি হয়ে যান। পরে তাঁর কার্যালয় থেকেই রক্ত সংগ্রহ করা হয়।

জানতে চাইলে ইউএনও শেখ হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এটি প্রচারের বিষয় নয়। তবে ময়মনসিংহের স্বেচ্ছাসেবীরা বিষয়টি ফেসবুকে প্রচার করায় অনেকেই আমাকে ফোন করেছেন। আমি সবাইকে রক্তদানে উৎসাহ দিয়েছি। আর যাঁকে রক্তদান করেছি, তাঁর উপকার হয়েছে ভেবে ‍তৃপ্তি পেয়েছি।’