রাইড শেয়ারিংয়ে নির্বাচনী বিড়ম্বনা

>
  • শুক্রবার মোটরসাইকেলসহ অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিংয়ে যাতায়াত সীমিত ছিল
  • অ্যাপভিত্তিক চালকেরা ওইদিন কম ট্রিপ পেয়েছেন
  • অনেকে বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এই ছাড়টুকু দেওয়া যায়

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার সারা দিন মোটরসাইকেলসহ অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিংয়ে যাতায়াত সীমিত ছিল। নির্বাচনের কয়েক দিন যান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে যাত্রী ও চালকদের কেউ কেউ কিছুটা ক্ষোভ জানিয়েছেন। তবে অনেকে বলেছেন, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এই ছাড়টুকু দেওয়া যায়।

গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় নগরীতে যান চলাচল কম ছিল। সেই সঙ্গে নগরীতে অ্যাপভিত্তিক মোটরসাইকেল এবং বাহনের সংখ্যাও কম দেখা গেছে। দুপুরে মালিবাগ মোড়ে কথা হয় পাঠাওয়ের চালক মো. সাঈদুর রহমানের সঙ্গে। সকাল নয়টার দিকে তিনি মোটরসাইকেল নিয়ে বের হন। তিনি বলেন, ‘সারা দিনে ট্রিপ পাইছি মাত্র দুইটা। ছুটির দিন, আবার তার ওপর নির্বাচন। এই কয় দিন তো কোনো কামাই হবে না। সমস্যা নাই, নির্বাচন তো অনেক বড় বিষয়। এইটুকুন ছাড় দেওনই যায়।’

মালিবাগ, মগবাজার, শাহবাগ, ফার্মগেট, মহাখালী মোড় ঘুরে বিভিন্ন রাইড শেয়ারিং অ্যাপ ব্যবহারকারী অন্তত ১২ জন মোটরসাইকেল চালক ও ৬ জন যাত্রীর সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁরা জানান, মোটরসাইকেল নিষেধাজ্ঞার আগের দিনে তাঁদের পরিচিতদের অনেকেই মোটরসাইকেল নিয়ে বের হননি। অন্যান্য দিনের তুলনায় অ্যাপভিত্তিক চালকেরা গতকাল সারা দিন কম ট্রিপ পেয়েছেন।

কয়েকজন গাড়িচালকের সঙ্গে কথা বলেজানা গেছে, নির্বাচনের কয়েক দিন মোটরবাইক বা গাড়ি চালাতে পারবেন না বলে তাঁরা বাড়িতে চলে যাবেন। তাঁদের একজন এনামুল হক। ঢাকায় তিনি পাঠাও অ্যাপের মাধ্যমে মোটরসাইকেল চালান। তাঁর গ্রামের বাড়ি নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায়। এনামুল প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনের কয় দিন তো আর বাইক চালানো যাবে না। এই চার–পাঁচ দিনের জন্য আমি বাড়ি চলে যাব। নিজের ভোটটাও দেব।’

গতকাল ঢাকায় অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিংয়ে যাতায়াত করতে অনেকে সমস্যায় পড়েছেন। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী বিকেলে মোহাম্মদপুর থেকে অফিসের কাজে কারওয়ান বাজারে আসেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই ব্যক্তি প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাঠাও অ্যাপে আবেদন জানানোর পর বাইকার এল। যাত্রা (রাইড) শুরুর আগে এই পথটুকুর ভাড়া ডিসকাউন্টে ৩৮ টাকা দেখাচ্ছিল। কিন্তু রাইড শুরুর পর আর অ্যাপ কাজ করেনি। পরে চুক্তিতে এসে ৮০ টাকা দিতে হলো। চালক আমাকে জানান, সারা দিনে মাত্র তিনটি ট্রিপ দিয়েছেন। কোনোটাই নাকি অ্যাপের মাধ্যমে হয়নি। অ্যাপেও সমস্যা হচ্ছে।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষ থেকে যানবাহনের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়া ওই নির্দেশনায় বলা হয়, ১ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেলে করে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে।

পাঠাও রাইড অ্যাপের আছে প্রায় দেড় লাখ নিবন্ধিত মোটরবাইক চালক। যান চলাচল বন্ধ থাকবে বলে গতকাল পাঠাও তার গ্রাহকদের মুঠোফোনে বার্তা পাঠিয়ে সতর্ক করে।

জানতে চাইলে পাঠাও লিমিটেডের প্রধানবিপণন কর্মকর্তা নাবিলা মাহবুব প্রথম আলোকে বলেন, ‘যান চলাচল নিয়ে সরকারের নির্দেশনা
সম্পর্কে আমাদের জানানো হয়েছে। নির্বাচনের সময় যাত্রী ও চালকের নিরাপত্তার জন্য এটা নেওয়া হয়েছে বলে আমাদের কাছে মনে হয়েছে। সাময়িক অসুবিধা হলেও এই সিদ্ধান্ত আমরা ভালো মনে করি।’