
প্রকল্পের আওতায় নগরের জিইসি মোড়ের অদূরে সিঅ্যান্ডবি কলোনির মুখ থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়ক খোঁড়ার কাজ শুরু করেছে চট্টগ্রাম ওয়াসা। এই সড়ক খোঁড়ার জন্য তারা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) বলছে, এই রাস্তার কর্তৃত্ব এখনো তাদের হাতে। এখানে সিটি করপোরেশনের এখতিয়ার নেই। কর্তৃত্বের দ্বন্দ্ব থাকায় খোঁড়াখুড়ির পর ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাটি সংস্কার করে যান চলাচলের উপযোগী করবে কোন সংস্থা তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
ওয়াসা সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নগরের পানি সরবরাহ উন্নীতকরণ ও পয়োনিষ্কাশন প্রকল্পের আওতায় মদুনাঘাট থেকে নগরের বিভিন্ন জায়গায় ৫৬ কিলোমিটার পাইপলাইন বসানোর কাজ চলছে। ইতিমধ্যে প্রায় ৫০ কিলোমিটার রাস্তায় মাটি খুঁড়ে পাইপলাইন বসানো হয়েছে। কিন্তু নগরের বহদ্দারহাট থেকে লালখান বাজারের ইস্পাহানি মোড় পর্যন্ত উড়ালসড়কের নির্মাণকাজ চলায় এত দিন মুরাদপুর থেকে সিঅ্যান্ডবি কলোনির মুখ পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তার নিচে পাইপলাইন স্থাপন সম্ভব হয়নি।
ওয়াসার প্রকৌশলীরা দাবি করেন, এর আগে নগরের সব রাস্তা খোঁড়ার জন্য তারা সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছে। এই রাস্তাটিও সিটি করপোরেশনের কর্তৃত্বাধীন মনে করে এবারও তাদের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। আগামী অক্টোবরের মধ্যে পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শেষ করতে হবে।

সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে অনুমতি নেওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন লালখান বাজার থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত নির্মাণাধীণ আখতারুজ্জামান চৌধুরী উড়ালসড়কের প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে সড়কটির কর্তৃত্ব সিডিএর হাতে। উড়ালসড়কের নির্মাণকাজ চলাকালীন রাস্তার সংস্কার কাজও সিডিএ করছে। সেখানে মাটি খোঁড়াখুড়ি করে ওয়াসার পাইপলাইন বসানোর ব্যাপারে সিডিএর আপত্তি নেই। কিন্তু সিডিএর সঙ্গে পরামর্শ না করে কীভাবে সিটি করপোরেশন রাস্তা কাটার অনুমতি দিয়েছে বুঝলাম না।
সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমদ এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, সিটি করপোরেশনের বিধির ১৮ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাস্তা খোঁড়াখুড়ির অনুমতি দেওয়ার ক্ষমতা কেবল সিটি করপোরেশনের। নিয়ম মেনে করপোরেশন ওয়াসাকে অনুমতি দিয়েছে।
তবে দুই সংস্থাই ওই রাস্তার কর্তৃত্ব দাবি করলেও সংস্কারকাজ করার দায়িত্ব নিতে রাজি নয় কেউই। এটি চট্টগ্রামের অন্যতম সড়ক।
এ প্রসঙ্গে উড়ালসড়কের প্রকল্প পরিচালক মাহফুজুর রহমান বলেন, ক্ষতিপূরণ নেবে সিটি করপোরেশন। সিডিএ কেন মেরামতের দায় নেবে? খোঁড়াখুঁড়ির পর সিডিএ ওই অংশ স্পর্শও করবে না।
সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী বলেন, করপোরেশনের কাছে রাস্তা বুঝিয়ে দেওয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মেরামতের দায়িত্ব সিডিএর।

এদিকে এই দুই সরকারি সংস্থার মধ্যে রশি টানাটানির মধ্যে দিয়ে ওয়াসার নিয়োজিত ঠিকাদার গত মঙ্গলবার রাতে মুরাদপুর থেকে রাস্তা কাটা শুরু করে দিয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরের পানি সরবরাহ উন্নীতকরণ ও পয়োনিষ্কাশন প্রকল্পের উপপরিচালক আরিফুল ইসলাম বলেন, ওয়াসা সিটি করপোরেশনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে রাস্তা কাটার কাজ শুরু করেছে। ক্ষতিপূরণের অর্থ বাবদ ১ কোটি ৭ লাখ টাকা সিটি করপোরেশনকে দেওয়া হবে। কারা রাস্তা মেরামত করবে সেটা করপোরেশন ও সিডিএ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।