রায় বাস্তবায়নে নেওয়া পদক্ষেপ জানাতে নির্দেশ

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষার নির্দেশসহ আট দফা নির্দেশনার রায় বাস্তবায়নে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। এ বিষয়ে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি রক্ষায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষার নির্দেশসহ আট দফা নির্দেশনা দিয়ে ১০ বছর আগে রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

রায় সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ার প্রেক্ষাপটে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে রিটকারী পক্ষের এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ রোববার এ আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে আগামী ২৫ এপ্রিল পরবর্তী আদেশের জন্য দিন রেখেছেন আদালত।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা ও মর্যাদা রক্ষা এবং শহীদ মিনারের পাশে জাদুঘর স্থাপনের নির্দেশনা চেয়ে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে ২০১০ সালে হাইকোর্টে রিট করা হয়। এর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে ২০১০ সালের ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ রায় দেন। রায় সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত না হওয়ার প্রেক্ষাপটে ৪ মার্চ আদালত অবমাননার অভিযোগে আবেদন করে এইচআরপিবি। এর ওপর শুনানি নিয়ে আজ এ আদেশ দেওয়া হয়।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আদালত অবমাননার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট পদক্ষেপ জানতে চেয়ে আদেশ দিয়েছেন। সংস্কৃতিসচিব, ঢাকা সিটি করপোরেশনের মেয়র, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী, স্থপতিসহ বিবাদীদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

১০ বছর আগে হাইকোর্টের দেওয়া আট নির্দেশনা


এক: ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি রক্ষার্থে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পবিত্রতা রক্ষা করা। ওই এলাকায় ভবঘুরে লোকজনের আনাগোনা ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে পাহারার ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
দুই: শহীদ মিনারের মূল বেদিতে সভা-সমাবেশ করা থেকে বিরত থাকা। তবে মূল বেদিতে ফুল দেওয়া যাবে। ২১ ফেব্রুয়ারির অনুষ্ঠান করা যাবে। আর বেদির পাদদেশে সভা-সমাবেশ করা যাবে। একই সঙ্গে শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তিনজন নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দিতে তথ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ।
তিন: ভাষা আন্দোলনে শহীদদের মরণোত্তর পদক ও জীবিতদের জাতীয় পদক প্রদান করা।
চার: জীবিত ভাষাসৈনিকেরা আর্থিক সহায়তা চাইলে, তা প্রদান।
পাঁচ: বিশ্ববিদ্যালয় ও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ ও এর মর্যাদা রক্ষা করা।
ছয়: শহীদ মিনারের পাশে একটি গ্রন্থাগারসহ জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা এবং ওই জাদুঘরে ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসসমৃদ্ধ তথ্যপঞ্জিকা রাখা, যাতে আগত ব্যক্তিরা এ সম্পর্কে জানতে পারেন।
সাত: ভাষাসৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরির জন্য কমিটি গঠন করা এবং ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ওই তালিকা গেজেট আকারে প্রকাশ।
আট: ভাষাসৈনিকদের সব রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো এবং সাধ্যমতো সরকারি সুযোগ নিশ্চিত করা।