রিজেন্টের সাহেদের সঙ্গে আসামি হচ্ছেন স্বাস্থ্যের সাবেক ডিজিও

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ।
ফাইল ছবি

অবশেষে রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাহেদের প্রতারণার মামলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদকে অন্তর্ভুক্ত করেই অভিযোগপত্র তৈরি করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আরিফ সাদেক সাংবাদিকদের জানান, শিগগির অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে।

এ মামলায় রিজেন্টের মো. সাহেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক আমিনুল হাসান, উপপরিচালক (হাসপাতাল-১) মো. ইউনুস আলী, সহকারী পরিচালক (হাসপাতাল-১) মো. শফিউর রহমান ও গবেষণা কর্মকর্তা মো. দিদারুল ইসলাম আসামি ছিলেন। নতুন করে স্বাস্থ্যের সাবেক মহাপরিচালককে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার খরচ বাবদ মোট ৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে গত বছর ২৩ সেপ্টেম্বর পাঁচজনকে আসামি করে এ মামলা করেন দুদকের উপপরিচালক মো. ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারি।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে লাইসেন্স নবায়নবিহীন বন্ধ রিজেন্ট হাসপাতালকে ডেডিকেটেড কোভিড হাসপাতালে রূপান্তর, মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং সম্পাদন ও সরকারি প্রতিষ্ঠান নিপসমের ল্যাবে ৩ হাজার ৯৩৯ জন কোভিড রোগীর নমুনা বিনা মূল্যে পরীক্ষা করিয়েছেন। যেখান থেকে অবৈধ পারিতোষিক বাবদ রোগীপ্রতি সাড়ে তিন হাজার টাকা হিসেবে ১ কোটি ৩৭ লাখ ৮৬ হাজার ৫০০ টাকা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া রিজেন্ট হাসপাতালের মিরপুর ও উত্তরা শাখার চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ডবয় ও অন্যান্য কর্মকর্তার খাবার খরচ বরাদ্দের বিষয়ে ১ কোটি ৯৬ লাখ ২০ হাজার টাকার মাসিক চাহিদা তুলে ধরেছেন।

আসামিদের বিরুদ্ধে এ মামলায় দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়। দীর্ঘ এক বছর পর এ মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্র অনুমোদন চেয়ে কমিশনে প্রতিবেদন দেন তদন্ত কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারি। আজ সোমবার তা অনুমোদন করল কমিশন।

সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার শাখরা কোমরপুর এলাকায় র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তারের সময় রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ (হাতকড়া লাগানো)
ফাইল ছবি

দুদকের মামলায় ছয় বছর ধরে নবায়ন বন্ধ রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে কোভিড চিকিৎ​সায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করা চুক্তিকে অবৈধ বলে উল্লেখ করা হয়। তখন চুক্তি নিয়ে সমালোচনার মুখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দাবি করে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের’ নির্দেশে ওই চুক্তি করা হয়েছিল। পরে অধিদপ্তরের ওই বক্তব্যের ব্যাখ্যা চায় মন্ত্রণালয়। জবাবে আরেক চিঠিতে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ দাবি করেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সাবেক সচিব আসাদুল ইসলামের ‘নির্দেশে’ রিজেন্ট হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল।

পরে অভিযোগ অনুসন্ধানকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তৎকালীন সচিব আসাদুল ইসলাম ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ—দুজনকেই দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। একপর্যায়ে আজাদ মহাপরিচালক পদ থেকে ইস্তফা দেন। কিন্তু মামলায় অবৈধ চুক্তির সঙ্গে সম্পৃক্ত দুজনের কাউকেই আসামি করা হয়নি। দীর্ঘ তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রে আবুল কালাম আজাদকে আসামি করছে দুদক।

আরও পড়ুন