রিমান্ড শেষে সাদিয়া জান্নাত কারাগারে

সাদিয়া জান্নাত
সংগৃহীত

বিয়ের নামে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার জান্নাতুল ফেরদৌসি ওরফে সাদিয়া জান্নাতকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দুদিনের রিমান্ড শেষে গতকাল সোমবার সাদিয়া জান্নাতকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করা হলে বিচারক ওই আদেশ দেন।
পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পক্ষ থেকে গতকাল সাদিয়াকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে তাঁকে জেলগেটে এক দিন জিজ্ঞাসাবাদ করার আদেশ দেন আদালত। ঢাকা মহানগর পুলিশের অপরাধ ও তথ্য বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) লিয়াকত আলী প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক শরিফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আসামি সাদিয়ার বিরুদ্ধে এর আগে মামলা হয়েছে। সেই মামলায় তিনি গ্রেপ্তার হয়ে জেলও খেটেছেন।

গত বৃহস্পতিবার বনানী সুপার মার্কেট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সাদিয়া জান্নাতকে (৩৮)। তাঁর গ্রামের বাড়ি বরিশাল।

মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, ৩৭ বছর বয়স। ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি লম্বা। সন্তানহীন ডিভোর্সি। কানাডার নাগরিক এবং সেখানকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। সর্বোপরি নামাজি। পত্রিকার পাতায় এমন পাত্রীর জন্য পাত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন দেখে আগ্রহ দেখিয়েছিলেন রাজধানীর পুরান ঢাকার ৭০ বছর বয়সী এক ব্যবসায়ী। গুলশান ২ নম্বরের একটি থাই রেস্টুরেন্টে পাত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তাঁর। এরপর কানাডায় নিয়ে যাওয়া, নাগরিকত্বের আবেদন করাসহ নানাভাবে প্রতারণা করে ওই ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন সাদিয়া। এরপর বিষয়টি টের পেয়ে ওই ব্যবসায়ী পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ঢাকা মেট্রো (পশ্চিম) ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি গুলশান থানায় মামলাও করেন।

সিআইডি বলছে, সাদিয়া জান্নাত ও তাঁর স্বামী মো. এনামুল হাসান সংঘবদ্ধভাবে এই প্রতারণার কাজ করতেন। ২০১৫ সাল থেকে সাদিয়া এই কাজ করে আসছেন। সাদিয়াকে গ্রেপ্তারের পর পুরান ঢাকার ওই ব্যবসায়ী ছাড়াও আরও সাতজন ব্যক্তি জানিয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকেও একইভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই চক্র।

গ্রেপ্তারের সময় সাদিয়ার কাছ থেকে তিনজন ভুক্তভোগীর পাসপোর্ট, ১০টি মুঠোফোন, ৭টি সিল, অনেকগুলো ব্যবহৃত সিমকার্ড, হিসাবের খাতা এবং একটি বেসরকারি ব্যাংকে ৪৮ লাখ টাকা জমা দেওয়ার রশিদ উদ্ধার করা হয়।