লকডাউনে সবজি ও ফলবাহী ট্রেন চলবে চার পথে

রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন
ফাইল ছবি

লকডাউনে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল একেবারেই বন্ধ। মালবাহী ট্রেন চালু থাকলেও চাহিদা কম। এ সময় কৃষিপণ্য পরিবহনে চার জোড়া (আটটি) বিশেষ পার্সেল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এসব ট্রেনে শাকসবজি, ফলমূল ও জরুরি প্রয়োজনের পণ্য পরিবহন করা হবে। এসব পণ্য পরিবহনে মূল ভাড়ার ওপর ২৫ শতাংশ ছাড় দেওয়া হবে। বাড়তি কোনো মাশুলও দিতে হবে না।

আজ মঙ্গলবার রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম রেলভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। আগামীকাল বুধবার এই বিশেষ ট্রেন চলাচল শুরু হবে। রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলেন, গত বছরও লকডাউনের সময় বিশেষ পার্সেল ট্রেন চালু করা হয়েছিল। সেবার আম পরিবহনের জন্য ঢাকা-উত্তরবঙ্গের পথে ‘ম্যাঙ্গো স্পেশাল’ ট্রেন চালু করা হয়েছিল। এ ছাড়া করোনাকালে ঈদুল আজহা উপলক্ষে কোরবানির পশুবাহী ‘ক্যাটল ট্রেন’ চালু করে রেল কর্তৃপক্ষ।

রেল কর্তৃপক্ষের দেওয়া তথ্য অনুসারে, যেসব পথে বিশেষ পণ্যবাহী ট্রেন চলবে, সেই পথগুলো হচ্ছে ঢাকা-সিলেট ও চট্টগ্রাম-সরিষাবাড়ী, খুলনা-চিলাহাটি, ঢাকা-ঠাকুরগাঁও। এর মধ্যে ঢাকা-সিলেট ও চট্টগ্রাম সরিষাবাড়ী পথে প্রতিদিন একটি করে ট্রেন আসা-যাওয়া করবে। খুলনা থেকে চিলাহাটিগামী ট্রেনটি চলবে শনি, সোম ও বুধবার। আবার চিলাহাটি থেকে খুলনামুখী ট্রেনটি চলবে রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার। ঠাকুরগাঁও থেকে ঢাকামুখী ট্রেনটি চলবে শনি, সোম ও বুধবার। ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও যাবে রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার। অর্থাৎ, একটা ট্রেনই একদিন পরপর দুই দিক থেকে মালামাল পরিবহন করবে।

রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, ঢাকা-সিলেট, চট্টগ্রাম-সরিষাবাড়ী পথের পার্সেল ট্রেনগুলো কিশোরগঞ্জের ভৈরববাজার স্টেশনে বিরতি দিয়ে মালামাল ওঠানামা করা হবে। অন্যদিকে ঢাকা-ঠাকুরগাঁও, খুলনা-চিলাহাটি পথের ট্রেনের যাত্রাবিরতির স্থান হবে ঈশ্বরদী।

রেলওয়ের পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন পথের ভাড়ার তালিকাও প্রকাশ করা হয়েছে। ঢাকা থেকে রেলপথে সিলেটের দূরত্ব ৩১৯ কিলোমিটার। এই পথে প্রতি কেজি মালামাল পরিবহনে ভাড়া গুনতে হবে ১ টাকা ১১ পয়সা। ঢাকা-চট্টগ্রামের দূরত্ব ৩৪৬ কিলোমিটার। এই পথে প্রতি কেজির ভাড়া পড়বে ১ টাকা ১৭ পয়সা। চট্টগ্রাম থেকে সরিষাবাড়ীর দূরত্ব ৪৬৯ কিলোমিটার। প্রতি কেজি মালামালের ভাড়া হবে ১ টাকা ৩৫ পয়সা। চট্টগ্রাম থেকে সিলেটের দূরত্ব ৩৯০ কিলোমিটার। প্রতি কেজি মাল পরিবহন করতে লাগবে ১ টাকা ৩০ পয়সা। খুলনা থেকে রেলপথে চিলাহাটির দূরত্ব ৪৯০ কিলোমিটার। প্রতি কেজি পণ্যের পরিবহনে গুনতে হবে ১ টাকা ৩৭ পয়সা। ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের দূরত্ব ৫৯৩ কিলোমিটার। এই পথে প্রতি কেজির ভাড়া পড়বে ১ টাকা ৫৬ পয়সা।

সংবাদ সম্মেলনে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, করোনার পরিস্থিতিতে জীবন এবং জীবিকা চালু রাখতে হবে। লকডাউনে কৃষক যাতে কৃষিপণ্য সহজে পরিবহন করতে পারে, সে জন্য রেলওয়ে এই বিশেষ পার্সেল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিনি বলেন, রেলওয়ে বর্তমানে যাত্রী পরিবহন না করলেও জ্বালানি তেল, সারসহ অন্যান্য মালামাল পরিবহন করছে। এ সময় রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সেলিম রেজা, রেলের মহাপরিচালক ধীরেন্দ্রনাথ মজুমদার, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদত আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।