লাইনচ্যুত ট্রেনের মতো রাজনীতিও লক্ষ্যচ্যুত

পঙ্কজ ভট্টাচার্য ঐক্য ন্যাপের সভাপতি ও সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। ৮১ বছর বয়সী এই রাজনীতিক বাংলাদেশ ও পাকিস্তান আমলের প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। আন্দোলন করতে গিয়ে বিভিন্ন সরকারের আমলে জেল খেটেছেন। সমাজ ও রাজনীতির হালচাল নিয়ে তিনি কথা বলেছেন প্রথম আলোর সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান

  • আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব যে আদর্শের কথা বলে, তৃণমূলের নেতারা তা পালন করেন না। সেখানে দেখা যায়, টাকা দিয়ে পদপদবি কেনা যায়। জামায়াতের লোকজনও আওয়ামী লীগে ঢুকে পড়েছে। দুর্নীতিবাজেরা ঢুকে পড়েছে।

  • বাংলাদেশ ও পাকিস্তান আমলে যত অর্জন হয়েছে, সব রাজনৈতিক আন্দোলনের ফল নয়। সামাজিক শক্তিরও বিরাট ভূমিকা ছিল। ছাত্রদের ভূমিকা ছিল। শুধু রাজনীতি দিয়ে সমাজ বদলানো যাবে না।

পঙ্কজ ভট্টাচার্য

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: পাকিস্তান আমলে ছাত্রাবস্থা থেকে রাজনীতি করে আসছেন। জেল খেটেছেন। কিন্তু এখন তো রাজনীতিই নেই।

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: জনগণকে নিয়ে যে রাজনীতি, জনগণের জন্য যে রাজনীতি এবং জনগণকে নিয়ে যে নির্বাচন; তা এখন অনেকটা গৌণ হয়ে গেছে। লাইনচ্যুত ট্রেনের মতো রাজনীতিও লক্ষ্যচ্যুত হয়ে পড়েছে। অপরাজনীতিই রাজনীতির পোশাক পরে আছে। এখন জনগণ রাজনীতিবিমুখ হয়ে গেছে। আর নির্বাচন হয় ভোটার ছাড়া।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: রাজনৈতিক দল আছে, নেতা আছেন, সংসদ আছে, কিন্তু রাজনীতি নেই। এ কী রকম অবস্থা?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও ব্যবসায়ী গোষ্ঠী রাজনীতিকে গ্রাস করে ফেলেছে। মাঝেমধ্যে আলোর ঝলক দেখা যায়; কিন্তু রাজনীতির সামগ্রিক চিত্রটা সুখকর নয়। স্বয়ং রাষ্ট্রপতি বলেছেন, জাতীয় সংসদে ৮২ শতাংশ ব্যবসায়ী। পাকিস্তান আমলে ছিল ৮ শতাংশ। তখন শিক্ষক, আইনজীবী, ছোটখাটো ব্যবসায়ীরা রাজনীতি করতেন। এখন বড় বড় পয়সাওয়ালা রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছেন। রাজনীতিবিদদের মধ্যকার টানাপোড়েনের সুযোগে পয়সাওয়ালারা রাজনীতিতে ঢুকে পড়েছেন। বিশেষ করে পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু হত্যার পরই আদর্শের রাজনীতি পেছনে হটতে শুরু করে। রাজনীতিতে পাকিস্তানি ও সাম্প্রদায়িক ধারা বেগবান হয়ে ওঠে। জিয়া-এরশাদ সেই ধারা বহন করলেন। আওয়ামী লীগও তার রাজনৈতিক ঐতিহ্য থেকে সরে এসে সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে আপস করে চলছে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: তাহলে কি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে কোনো তফাত নেই?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: তফাত আছে। তবে কমে আসছে। দুই দলের জন্ম ও ঐতিহ্য ভিন্ন। অতীতে আওয়ামী লীগ রাজনীতির প্রশ্নে, গণতন্ত্রের প্রশ্নে অনড় অবস্থানে ছিল। আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করেছে। বিএনপি এটা করত না। কিন্তু আওয়ামী লীগও ক্ষমতার জন্য সাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গে সমঝোতা ও আপস করছে। অন্যদিকে বিএনপি নেতৃত্বহীন, নড়বড়ে অবস্থায় আছে। রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক ধারাই ক্ষীণতর হয়ে পড়েছে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: আপনারা বলেন, পঁচাত্তরের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরই সব অধোগতির শুরু। কিন্তু তিয়াত্তরের নির্বাচনেও তো কারচুপি হয়েছে।

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: তিয়াত্তরের নির্বাচনেও কারচুপি হয়েছে। ১২-১৩টি আসনে ফলাফল বদলে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া আসনে ন্যাপের বিজয়ী প্রার্থীকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিরোধী দলের অনেকে মনোনয়নপত্রও জমা দিতে পারেননি। তবে সেই নির্বাচনে কারচুপি না হলেও আওয়ামী লীগই জয়ী হতো। ক্ষমতার পরিবর্তন হতো না।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: তখনকার রাজনীতির সঙ্গে এখনকার ফারাকটা কোথায়?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: একাত্তরে পাকিস্তানি সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাস্ত করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। স্বাধীনতার পর রাষ্ট্র পরিচালনায় চার মূলনীতি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। ৯ মাসের মধ্যে সংবিধান রচিত হয়েছিল। সেই সংবিধানে নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠীর স্বীকৃতি ছিল না। এরপরও বলব, এটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান ছিল। এরপর সংবিধান অনেকবার কাটাছেঁড়া করা হলো। আওয়ামী লীগের ব্যর্থতা আছে। আমাদেরও ব্যর্থতা আছে। আশির দশকে, নব্বইয়ের দশকে আওয়ামী লীগ যেখানে ছিল, সেখানে নেই।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: আওয়ামী লীগের আপসটা কী?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: তারা বলছে সংবিধানে চার মূল নীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে। আবার রাষ্ট্রধর্মও রেখে দিয়েছে। দুটি একসঙ্গে চলতে পারে না। তারা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ করার কথা বলছে। আবার হেফাজতে ইসলামের পরামর্শে পাঠ্যপুস্তক পরিবর্তন করেছে। আওয়ামী লীগ মনে করছে, ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে এসব করতে হবে। জনগণের ওপর আস্থা কমে গেলে এ অবস্থা হয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্ব যে আদর্শের কথা বলে, তৃণমূলের নেতারা তা পালন করেন না। সেখানে দেখা যায়, টাকা দিয়ে পদপদবি কেনা যায়। জামায়াতের লোকজনও আওয়ামী লীগে ঢুকে পড়েছে। দুর্নীতিবাজেরা ঢুকে পড়েছে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: স্বাধীনতার পর আপনারা (ন্যাপ-সিপিবি) আওয়ামী লীগের সঙ্গে লীন হয়ে গেলেন কেন?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ও পাকিস্তানকে পরাস্ত করে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও আমাদের চিন্তাধারার মিল ছিল। ১৯৬২ সালে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সিপিবি নেতা মণি সিংহ ও খোকা রায়ের বৈঠকে হয়েছিল। ছাত্র আন্দোলন ও শ্রমিক আন্দোলন আমরা একসঙ্গে করেছি। যদিও ঐক্যের বিষয়ে মতভেদ ছিল। স্বাধীনতার পর আন্তর্জাতিক বাস্তবতা আমাদের ওই দিকে ঠেলে দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়ন ও ভারতের সমর্থন ছিল। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের বিরোধিতা এবং উসকানি ছিল। তখন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশকে টিকিয়ে রাখাই মুখ্য ছিল। এরপরও মনে করি, আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিশে না গিয়ে গঠনমূলক বিরোধী দলের দায়িত্ব পালন করা উচিত ছিল।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: একদা বাম রাজনীতি করতেন। সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই ছিল আপনাদের মূল স্লোগান। সেখান থেকে সরে এলেন কেন?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আমরা উপলব্ধি করলাম, অন্য কোনো দেশের মডেল বা মতাদর্শের রাজনীতি দিয়ে এগোনো যাবে না। বাংলাদেশের সমাজবাস্তবতায় অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক ও মানবতাবাদী রাজনীতি করতে হবে। এ কারণেই প্রচলিত বাম ধারা থেকে বেরিয়ে এসে মানবতাবাদী রাজনীতি করেছি।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: একসময় চীনপন্থীদের সম্পর্কে দল ভাঙার অভিযোগ ছিল। এখন মস্কোপন্থীরাও নানা ভাগে বিভক্ত। এর পেছনে আদর্শ না নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব কাজ করেছে?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: এখানে আদর্শ গৌণ। মূলত ব্যক্তির সঙ্গে ব্যক্তির দ্বন্দ্বই নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করেছে। আমি নতুন করে ঐক্যের চেষ্টা করছি। গণতান্ত্রিক পার্টি, ন্যাপ মোজাফ্‌ফরের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে। ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গেও কথা হয়েছে। তাঁদের মধ্যেও পরিবর্তন এসেছে। তাঁদের অনেকেই একমত যে আওয়ামী লীগের সঙ্গে যুক্ত না হয়ে বাইরে থেকে একটা চাপ সৃষ্টি করা দরকার, যাতে রাষ্ট্র অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক চেতনা থেকে দূরে সরে না যায়। আমরা সমাজের ন্যায়–নীতিনিষ্ঠ মানুষগুলোকে একত্র করতে চাই। গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক শক্তির উদ্বোধন চাই।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রত্যয় ছিল গণতন্ত্র। সেই গণতন্ত্রের এখন কী অবস্থা?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: এটি একটি বড় বিষয়। পাকিস্তান আমলে যে গণতন্ত্র ছিল, যে নির্বাচন ছিল, যাতে জনগণের রায়ের প্রতিফলন ঘটেছে; এখন তো সেই নির্বাচন নেই। ১৯৭০ সালের নির্বাচনই তো দেশকে স্বাধীনতার পথে নিয়ে গেল। গণতন্ত্র এখন মাথার ওপর দিয়ে যাচ্ছে, মানুষের অন্তরে নেই। বর্তমানে গণতন্ত্র হলো প্রশাসনিক গণতন্ত্র, আমলাতান্ত্রিক গণতন্ত্র।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে পাকিস্তান আমল থেকে আপনারা আন্দোলন করেছেন। আন্দোলন করে সামরিক শাসককে পদত্যাগে বাধ্য করেছেন। যার লক্ষ্য ছিল সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন। এখন সেই পরিবেশ কি আছে?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: মানুষ আস্থা হারিয়েছে। স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন একের পর এক দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে চলেছে। এই ব্যবস্থা না বদলালে মানুষকে নির্বাচনমুখী করা যাবে না। ভোটারশূন্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে ব্যবস্থা চালু হয়েছে, তাতে জনগণের রায়ের প্রতিফলন ঘটছে না। আমরা যদি সুষ্ঠু নির্বাচনী ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে না পারি, তাহলে প্রতিক্রিয়াশীল ও মৌলবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। গণতন্ত্রের যে ক্ষীণধারা চলছে, তা–ও হয়তো হারিয়ে যাবে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: নির্বাচনী ব্যবস্থা যে ভেঙে পড়ল, এ জন্য কাকে বেশি দায়ী করবেন? সরকার না নির্বাচন কমিশন?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: নির্বাচন কমিশন সিংহভাগ দায়ী। এই কমিশন হলো মেরুদণ্ডহীন। ১০ শতাংশ ভোটার উপস্থিত হলেই তারা সন্তুষ্ট হয়। সরকারও সন্তুষ্ট। সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে তারা এটি করতে পেরেছে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: ২৩ বছর আগে পার্বত্য চুক্তি সই হয়েছে। কিন্তু চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণ কী?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: চুক্তি বাস্তবায়ন না হওয়া বাঙালি জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। সরকার বলছে তিন ভাগের দুই ভাগ বাস্তবায়ন হয়েছে। পাহাড়ি জনগোষ্ঠী বলছে, তিন ভাগের এক ভাগ বাস্তবায়িত হয়েছে। মনে রাখতে হবে, বাঙালিদের পাশাপাশি পাহাড়ি ও সমতলের জাতিগোষ্ঠী থেকেও মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। তাঁদের ওপর ঔপনিবেশিক শাসন চালানো গৌরবের কথা নয়। সমতলের জাতিগোষ্ঠীর লোকজনও বাসস্থান থেকে উচ্ছেদ হয়ে যাচ্ছেন। প্রশাসন নির্বিকার। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়। বাস্তবায়ন হয় না। গাইবান্ধায় তিনজন সাঁওতালের বাড়িঘর পুড়িয়ে দেওয়া হলো। রাষ্ট্র দায় নিল না। যাঁরা উচ্ছেদ হলেন, তাঁরা পৈতৃক সম্পত্তিও ফেরত পেলেন না। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে সমতলের জাতিগোষ্ঠীর জন্য পৃথক ভূমি কমিশন গঠনের কথা বলেছিল। বাস্তবায়িত হয়নি।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: করোনাকালে সাধারণ মানুষের অবস্থা কী?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: করোনার কারণে চাকরি হারানো, জীবিকা হারানো মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। সরকারের অর্থনৈতিক নীতি বৈষম্যকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। দারিদ্র্যের হার বাড়ছে। সংকট উত্তরণে প্রধানমন্ত্রীর সদিচ্ছা আছে। কিন্তু তৃণমূল পর্যায়ে তাঁর নির্দেশ পৌঁছায় না। আজ স্বাস্থ্য বিভাগ, শিক্ষা বিভাগ, সড়ক বিভাগের অবস্থা খুবই নাজুক। সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য হাইকোর্ট যে রায় দিলেন, তা–ও বাস্তবায়িত হয় না।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: রাজনীতির পাশাপাশি আপনি সামাজিক আন্দোলনের সঙ্গেও জড়িত। সেটি কি রাজনৈতিক হতাশা থেকে?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: ১৯৯৬ সালে এসে দেখলাম রাজনীতি বৃহত্তর মানুষের জীবনকে তেমন স্পর্শ করতে পারছে না। বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ নিজেদের মতো প্রতিবাদ করছে। এই সামাজিক প্রতিবাদ-প্রতিরোধের ধারাকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে আমরা সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলেছিলাম। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, অজয় রায়ের মতো মানুষ এর সঙ্গে ছিলেন। এর মাধ্যমে আমরা অসাম্প্রদায়িক শক্তির সমাবেশ ঘটাতে চেয়েছিলাম। অনাচারের বিরুদ্ধে মানুষকে জাগাতে চেয়েছিলাম। ২০১৩ সালে গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি হলো। ডাকসুর নির্বাচনেও নতুন শক্তির উত্থান দেখলাম। সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ নামে একটি সংগঠন নির্বাচনে জয়ী হলো। প্রচলিত ছাত্রসংগঠনগুলো সাধারণ ছাত্রদের সমর্থন পেল না। এরপর কিশোর-তরুণেরা নিরাপদ সড়ক আন্দোলন করল। এ কারণে এখনো আশাবাদ আছে। নতুন প্রজন্ম জাগবে। সবাইকে নিয়েই পরিবর্তন আনতে হবে।

বাংলাদেশ ও পাকিস্তান আমলে যত অর্জন হয়েছে, সব রাজনৈতিক আন্দোলনের ফল নয়। সামাজিক শক্তিরও বিরাট ভূমিকা ছিল। ছাত্রদের ভূমিকা ছিল। শুধু রাজনীতি দিয়ে সমাজ বদলানো যাবে না।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: আপনি যা বলতে চান, বলতে পারেন কি?

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: হিসাব করে কথা বলতে হয়। যদিও আমি বেহিসেবি হতে চাই।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: আপনাকে ধন্যবাদ।

পঙ্কজ ভট্টাচার্য: আপনাকেও ধন্যবাদ।