শর্ত শিথিল করেও বিশেষ পুনর্বাসন ঋণে সাড়া কম: প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ

বিশেষ পুনর্বাসন ঋণ নিতে শুরুতে আবেদন কম আসায় শর্ত শিথিল করার পরও প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিনি বলেন, ‘করোনার প্রভাবে দেশে ফিরে আসা প্রবাসী কর্মীদের জন্য সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে। তাঁদের জন্য ৭০০ কোটি টাকার তহবিল করা হয়েছে। আমরা চাই, ৭০০ কোটি টাকার পুরোটাই প্রবাসী শ্রমিক বা তাঁর পরিবারের কাছে যাক।’

আজ রোববার রাজধানীর একটি হোটেলে অভিবাসন খাতের জাতীয় পর্যায়ের অংশীজনদের এক পরামর্শ সভায় এসব কথা বলেন প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী। সভাটি যৌথভাবে আয়োজন করে সরকারের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এবং বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক।

ইমরান আহমদ বলেন, ‘কোভিড বিশ্বব্যাপী একটি অপ্রত্যাশিত মহামারি। এতে আক্রান্ত হয়েছে প্রতিটি খাত। কোভিডের কারণে অভিবাসন খাতে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা মোকাবিলা করতে সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থা, আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে এক ছাতার নিচে আসতে হবে। তবেই কার্যকরভাবে কোভিড মোকাবিলা করে এ খাতের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ঘটাতে পারব।’ প্রবাসীকল্যাণমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী কর্মীরা দেশে ফিরে এসে কী কাজ করবেন, কীভাবে করবেন, সে বিষয় নিয়েও ভাবতে হবে।

অনুষ্ঠানে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, করোনার কারণে পাঁচ ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে দেশের অভিবাসন খাত। প্রথমত, যাঁরা বিদেশে আছেন, তাঁরা কীভাবে সেখানে ভালোভাবে থাকতে পারেন, কীভাবে চাকরির নিশ্চয়তা পেতে পারেন। দ্বিতীয়ত, যাঁরা ফিরে আসতে চাচ্ছেন, তাঁদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন কীভাবে নিশ্চিত করা যায়। তৃতীয়ত, যাঁরা ফেরত এসেছেন, তাঁদের কীভাবে আবার পাঠানো যায়। চতুর্থত, যাঁরা দেশেই থাকবেন, তাঁদের কীভাবে সমাজে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা যায়। আর সবশেষ, নতুন করে কীভাবে আবার বৈদেশিক কর্মসংস্থান শুরু করা যায়। সরকারের নানামুখী উদ্যোগের মধ্য দিয়ে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা হচ্ছে।

স্বাগত বক্তব্যে বিএমইটির মহাপরিচালক মো. শামছুল আলম বলেন, রেকর্ড রেমিট্যান্স এলেও বিদেশে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা এবার পূরণ হবে না। এখন পর্যন্ত দুই লাখ সাত হাজার কর্মী এ বছর বিদেশে গেছেন। তবে অচিরেই ঘুরে দাঁড়াবে প্রবাসী খাত।

ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ বলেন, পুরো অভিবাসন খাতকে এমনভাবে ডিজিটালাইজেশন করতে হবে, যেন বিদেশে যাওয়া বা ফেরত আসা প্রতি অভিবাসীর তথ্য সরকারের হাতে থাকে। আর চাইলেই যেন সেখানে প্রবেশ করে তার সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানা যায়।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বায়রার সভাপতি সাংসদ বেনজির আহমেদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত নাথালি চুয়ার্ড। অনুষ্ঠানে বিএমইটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক মীর খাইরুল আলম ও ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান দুটি নিবন্ধ তুলে ধরেন।