‘শিক্ষকদের জন্য জাতি বেঁচে আছে’

শিক্ষকেরা আমাদের সমাজের ভিত গড়ে দেন। শিক্ষকদের জন্য আমরা বেঁচে আছি, জাতি বেঁচে আছে। কিন্তু আমাদের সমাজের অনেকেই এখনো শিক্ষকদের যথাযথ মর্যাদা দেন না। আইপিডিসি ও প্রথম আলো শিক্ষকদের সম্মাননা দেওয়ার যে উদ্যোগ নিয়েছে সেটি সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। এ কার্যক্রম যেন অব্যাহত থাকে।
আইপিডিসি-প্রথম আলো প্রিয় শিক্ষক সম্মাননা উপলক্ষে সোমবার সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ অঞ্চলে আয়োজিত অনলাইন সুধী সংযোগে বক্তারা এসব কথা বলেন। দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে এ ভার্চুয়াল সুধী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে শিক্ষক, কবি, লেখক, সমাজসেবক ও স্বেচ্ছাসেবীসহ নানা পেশার মানুষ যোগ দেন।

সন্ধ্যা সাতটায় সুধী সংযোগটি শুরু হয়। প্রথম আলোর ময়মনসিংহ প্রতিনিধি কামরান পারভেজের সঞ্চালনায় শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর যুব কার্যক্রম ও ইভেন্টস বিভাগের প্রধান মুনির হাসান। তিনি বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা আদর্শ শিক্ষকদের খুঁজে বের করা আমাদের এ কার্যক্রমের উদ্দেশ্যে। সবার সহযোগিতায় এ কার্যক্রম আমরা অব্যাহত রাখতে চাই।’
এরপর শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন আইপিডিসি ফাইনান্স লিমিটেডের হেড অব আইটি অ্যান্ড বিজনেস ট্রান্সফরমেশন আলেয়া রফিক ইকবাল। তিনি বলেন, সমাজে শিক্ষকের যে ভূমিকা, তা বলে শেষ করা যাবে না। তাঁদের কাছে সমাজের সবাই কৃতজ্ঞ। আইপিডিসি-প্রথম আলো সেসব শিক্ষকদের সম্মাননা দিয়ে তাঁদের ঋণ কিছুটা শোধ করার চেষ্টা করছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কমিউনিটি বেজ্ড মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মির্জা মানজুরুল হক। তিনি প্রথম আলো ও আইপিডিসির কাছে অনুরোধ করেন, দেশের আনাচে কানাচের কিংবদন্তিতুল্য শিক্ষকদের তালিকা করে তাঁদের যেন সম্মাননা দেওয়া হয়।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুব বোরহান বলেন, শিক্ষকদের সমাজে কতটুকু মর্যাদা দেওয়া হয় তা নিয়ে এখন অনেকের সংশয় জাগে। অথচ শিক্ষকদের জন্য আমরা বেঁচে আছি, জাতি বেঁচে আছে।
মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ আবু তাহের বলেন, কাগজে কলমে অনেকেই শিক্ষকদের মর্যাদা দেন, কিন্তু বাস্তবে অনেকেই মর্যাদা দেন না। এমন সময়ে আইপিডিসি ও প্রথম আলো যে উদ্যোগ নিয়েছে, সেটি সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য।
নেত্রকোনা সরকারি কলেজের অধ্যাপক আফজালুর রহমান বলেন, ‘যে শিক্ষক শুধু ক্লাসের সিলেবাস পড়ান, তাঁদের কেউ চাইলেও মনে রাখতে পারেন না। যেসব শিক্ষক সিলেবাসের বাইরে ছাত্রদের চেতনা গড়ে দেন সেসব শিক্ষকদের আমরা মনে রাখি। কাজেই শিক্ষকদের শুধু সিলেবাস পড়ালে চলবে না।’
অনুষ্ঠানে আরও যুক্ত ছিলেন, ২০১৯ সালে প্রিয় শিক্ষক সম্মাননাপ্রাপ্ত নাছিমা আক্তার ও মফিজ উদ্দিন, আইপিডিসি ফাইনান্স লিমিডেটের ময়মনসিংহ শাখা ব্যবস্থাপক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক শফিকুর ইসলাম, কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ এখলাস উদ্দিন খান, কেবি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ রায়হান উদ্দিন, লেখক আবুল কালাম আল আজাদ, চিত্রশিল্পী মো. রাজন, কলসিন্দুর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মালা সরকার প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে একাধিক ভিডিওচিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ ছাড়া প্রিয় শিক্ষক সম্মাননার মনোনয়ন জমা দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হয়। ময়মনসিংহ বন্ধুসভার সদস্যরা এ অনুষ্ঠান আয়োজনে সার্বিক সহযোগিতা করেন।