শিবগঞ্জে ফুলকপিখেতে 'গোড়া পচা' রোগ

বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলায় ফুলকপির খেতগুলোতে ‘গোড়া পচা’ রোগ দেখা দিয়েছে। বালাইনাশক ছিটিয়েও এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাচ্ছেন না কৃষকেরা। ফলে দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তাঁরা। কৃষি বিভাগ বলছে, আবহাওয়া অনুকূল না হওয়ায় ফুলকপির খেতগুলোতে এই রোগে দেখা দিয়েছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয় থেকে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার প্রায় ৪৬০ হেক্টর জমিতে কপির চাষ হয়েছে। চাহিদা এবং দাম বেশি হওয়ায় এর মধ্যে অনেকেই আগাম জাতের ফুলকপির চাষ করেছেন। কয়েক বছর ধরে ফুলকপি চাষ করে লাভ করলেও এবার গোড়া পচা রোগ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।

উথলী গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান (৪৫) বলেন, কালো হয়ে যাচ্ছে ফুলকপির গাছগুলো। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে খেতে। ঝরে পড়ছে ফুল। ওষুধ ছিটিয়েও রোগ ঠেকাতে না পেরে এলাকার কৃষকেরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। এর আগে এভাবে ফুলকপি খেত নষ্ট হতে দেখেননি তিনি।

একই গ্রামের আবদুর রহমান (৫০) বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে লাভ হওয়ায় এ বছরও ঋণ নিয়ে ফুলকপির চাষ করেছিলাম। ফুল আসার সময়ে লক্ষ করি, গাছের গোড়ায় কালো কালো ছোপ। কোনো ওষুধেই কাজ হলো না। এক বিঘা জমির প্রায় পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে।’

উপজেলার চকভোলাখাঁ গ্রামের মোজাহার আলী বলেন, এ উপজেলায় চাষিদের কাছে ফুলকপির চাষ বেশ জনপ্রিয়। এ বছর বেশি লাভের আশায় অনেকেই ঋণ নিয়ে এই সবজির চাষ করেন। কিন্তু গোড়া পচা রোগে এখন তাঁদের সর্বস্বান্ত হওয়ার জোগাড়। বালাইনাশক দিয়েও আর ফসল বাঁচানো সম্ভব নয়।

তেঘরী গ্রামের মোজাফ্ফর হোসেন (৫৫) বলেন, ‘ধান-আলু চাষ করে এখন লাভ করা অনিশ্চিত। নিশ্চিত লাভ জেনে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ৪০ শতক জমিতে ফুলকপির চাষ করেছি। কিন্তু পচারি লেগে খেতে যে অবস্থা তাতে লাভ তো দূরের কথা, ২০ হাজার টাকা বিক্রি হওয়াটাই কঠিন হয়ে পড়েছে।’

উপজেলা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা এজাজ কামাল বলেন, কখনো গরম আবার কখনো ঠান্ডা, এর সঙ্গে কখনো আবার বৃষ্টি—এ রকম আবহাওয়ার কারণে গোড়া পচা রোগ দেখা দিয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, খেত থেকে আক্রান্ত গাছ তুলে ফেলে দিতে হবে। খেতে পানি যেন না থাকে, সে দিকে নজর দিতে হবে। এরপর মানসম্পন্ন বালাইনাশক ছিটালে এ রোগ থেকে খেত বাঁচানো সম্ভব হবে।