শিলাইদহে কুঠিবাড়ি সংরক্ষণ বাঁধের ভাঙন পরিদর্শন পানিসম্পদ সচিবের

বাঁধের ভাঙন পরিদর্শন করছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার। ছবি: প্রথম আলো
বাঁধের ভাঙন পরিদর্শন করছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার। ছবি: প্রথম আলো

পদ্মার তীর ও শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি সংরক্ষণ বাঁধের ভাঙন পরিদর্শন করেছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার। এ সময় সচিব বলেন, যেকোনো মূল্যে ভাঙন থেকে কুঠিবাড়িকে রক্ষা করা হবে।

গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টায় ঢাকা থেকে সরাসরি কুমারখালী উপজেলার কালোয়া খাঁপাড়া ভাঙন এলাকায় যান। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান।

উপস্থিত সাংবাদিকদের সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, পদ্মার পানির স্রোত প্রতি সেকেন্ডে প্রায় সাড়ে তিন মিটার বা ১০ ফুটের বেশি। প্রাকৃতিক ধাক্কাতেই বাঁধ ভেঙেছে, বাঁধের নকশায় কোনো ত্রুটি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে। আপাতত বালুর বস্তা ফেলে ভাঙন ঠেকানো হবে প্রধান কাজ।

পদ্মায় পানি অব্যাহতভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় তীব্র স্রোতে পদ্মার তীর ও কুঠিবাড়ি সংরক্ষণ বাঁধের প্রায় দেড় শ মিটার ব্লক বাঁধ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে গ্রামের দিকে পানি ধেয়ে গেছে প্রায় ৩০ মিটার। কয়েকটি বাড়িও তলিয়ে গেছে। ৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে কুমারখালী উপজেলার কালোয়া খাঁপাড়া এলাকায় সদ্য নির্মিত পদ্মা নদীর ব্লক বাঁধে ভাঙন দেখা যায়। এতে প্রায় ৫০ মিটার তলিয়ে যায়। গত শনিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে আবারও ভাঙন শুরু হয়। প্রায় ১০০ মিটার জুড়ে ব্লক বাঁধ ভেঙে তলিয়ে যায়।

রাতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনের সময় সচিব কবির বিন আনোয়ার ও পাউবোর মহাপরিচালক মাহফুজুর রহমান স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘পানি বাড়ার সময়ও বাঁধ ভাঙে, কমার সময়ও ভাঙে। পদ্মা, যমুনা, মেঘনা অনেক সময় অনিশ্চিত আচরণ করে। এখানে যেটুকু ভেঙেছে, সেটাকে সুরক্ষা দেওয়া হবে। যেকোনো মূল্যের বিনিময়ে নিজেরা থেকে হলেও কুঠিবাড়িকে রক্ষা করা হবে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই।’

সচিব বলেন, ‘পানি কমার পর এখানে পৃথক প্রকল্প নিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা হবে। সেটা করতে হয়তো দু-এক মাস সময় লাগতে পারে। তবে এখন থেমে থাকা হবে না। কাজ করে যেতে হবে।’

সে সময় আরও উপস্থিত ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার সোহেল রহমান, কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহীনুজ্জামান, শিলাইদহ কুঠিবাড়ি সংরক্ষণ বাঁধ প্রকল্পের পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান, কুষ্টিয়া পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান, কয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম, শিলাইদহ ইউপির চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন খান প্রমুখ।

পাউবো সূত্র জানায়, ১৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সোয়া তিন কিলোমিটার ব্লক বাঁধ নির্মাণের কাজ গত জুন মাসে কাজ শেষ হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সহযোগী ওয়েস্টার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং প্রাইভেট লিমিটেড শিলাইদহ কুঠিবাড়ি রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে।