শিশুর সর্বোচ্চ বয়স ১৮ বছর থেকে কমানোর চিন্তা

চৈত্রের দাবদাহে অস্থির জনজীবন। একটু স্বস্তি পেতে একদল শিশু-কিশোর পুকুরে দুরন্তপনায় মেতে উঠেছে। কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার টিক্কারচর এলাকা থেকে তোলা, ৪ এপ্রিল
ছবি: এম সাদেক

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, ১৮ বছর পর্যন্ত শিশু। এই বয়সসীমা কমানোর চিন্তা করছে সরকার। সরকারের আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি বিদ্যমান আইনে থাকা শিশুর বয়স কমানোর আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব করেছে। শিশু আইন সংশোধনে আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে উদ্যোগ নিতে বলেছে কমিটি।

গতকাল রোববার সচিবালয়ের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় শিশু আইন নিয়ে আলোচনা হয়।

আরও পড়ুন

সভা শেষে কমিটির সভাপতি মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক সাংবাদিকদের বলেন, কিশোর গ্যাংসহ বর্তমানে যেসব সমস্যা লক্ষ করা যাচ্ছে, তাতে মনে হয়েছে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আইনের সংশোধন হওয়া উচিত। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, ১৮ বছর পর্যন্ত শিশু। বাংলাদেশের আইনে শিশুদের গ্রেপ্তার, বিচারে নানা রকমের নিষেধাজ্ঞা আছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট বাংলাদেশের সঙ্গে মেলে না। কয়েক দিন আগে দশম শ্রেণির ছাত্র শিক্ষককে মেরে ফেলেছে। কিন্তু আইনে সে শিশু হিসেবে বিবেচিত। শিশুর বিরুদ্ধে তো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। সে কারণে বাস্তবতার নিরিখে আইনগুলো পরিবর্তন হওয়া দরকার। কারণ, অপরাধীরা বয়স কম বলে ছাড় পেয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়ে আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর মাধ্যমে বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হচ্ছে।

তাহলে কি শিশুর বয়স কমানোর কথা বলছেন—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, হ্যাঁ। তবে নির্ধারিত কিছু বলা হয়নি। সময়োপযোগী করার আলোচনা হয়েছে। তবে তিনি ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন, শিশুর সর্বোচ্চ বয়স ১৪ বছর করা যেতে পারে। অপরাধীরা বয়স কম বলে ছাড় পেয়ে যাচ্ছে।

শিশু–কিশোর সংশোধন কেন্দ্রের ব্যবস্থা উন্নত হওয়া দরকার বলে মনে করেন কি না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী বলেন, ‘বাস্তব অবস্থা হলো শিশু সংশোধন কেন্দ্রে গিয়ে...বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় জেলাখানাও তাই, জেলখানা থেকে আরও অপরাধী হয়ে বের হয়ে আসে। যাই হোক চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভাবতে হবে।’

অপরাধীদের তথ্যভান্ডার হালনাগাদ করার বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির গতকালের সভায় পদ্মা সেতুসহ অন্যান্য সেতুর টোল আদায়ে পুরোপুরি ডিজিটাল ব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। এই ব্যবস্থায় বিদেশের মতো প্রতিটি গাড়িতে প্রযুক্তিগত সুবিধা থাকবে। এর মাধ্যমে সহজেই টোল পরিশোধ করা যাবে।

সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।