শীতলক্ষ্যায় রাতে চলছে বাল্কহেডসহ বড় নৌযান

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যা নদীতে রাতে চলাচল করছে বালুবাহী বাল্কহেডসহ মালবাহী কার্গো। এ কারণে গত তিন বছরে ৩০টির বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে খেয়া পারাপার হচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শিল্প ও বাণিজ্যনগরী নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় শীতলক্ষ্যা নদীতে যাত্রীদের খেয়া পারাপারের জন্য ঘাট আছে নয়টি। ঘাটগুলো হলো শহরের লঞ্চ টার্মিনাল এলাকার সেন্ট্রাল খেয়াঘাট, ৫ নম্বর সারঘাট, নবীগঞ্জ, সোনাকান্দা, মদনগঞ্জ, টানবাজার, বরফকল জামাল সোপ, লক্ষ্মণখোলা ও কুড়িপাড়া খেয়াঘাট। এসব ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী খেয়া পারাপার হয়। কিন্তু শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝুঁকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে কার্গো, বালুবাহী বাল্কহেডসহ বড় বড় নৌযান। এসব নৌযানের বেপরোয়া চলাচলের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। প্রাণহানির ঘটনাও ঘটছে। নৌ পুলিশের হিসাবমতে, গত তিন বছরে ছোট-বড় মিলিয়ে ৩০টির বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে।

বন্দর উপজেলার শাহী মসজিদ এলাকার বাসিন্দা পাভেল আহম্মেদ বলেন, ‘প্রতিদিন বন্দরের সেন্ট্রাল খেয়াঘাট দিয়ে ট্রলার ও নৌকায় করে লক্ষাধিক মানুষ পারাপার হয়। কিন্তু বেপরোয়াভাবে কার্গো, বাল্কহেড চলাচলের কারণে আতঙ্ক নিয়ে আমাদের খেয়া পারাপার হতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে।’

একই উপজেলার ঘাড়মোড়া এলাকার বাসিন্দা নাসির হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন ট্রলার ও নৌকাযোগে আমাদের খেয়া পারাপার হতে হয়। বেপরোয়াভাবে বাল্কহেড ও কার্গো চলাচলের কারণে শান্ত শীতলক্ষ্যা নদীতেও আতঙ্কে থাকি। খেয়া পারাপার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠায় আমরা বৃদ্ধ ও শিশুদের নিয়ে কোথাও যেতে পারি না।’

শীতলক্ষ্যায় খেয়া পারাপারকারী নৌকার মাঝি তোরাব আলী বলেন, নৌ দুর্ঘটনার জন্য একমাত্র দায়ী বাল্কহেড। বাল্কহেড লোড হয়ে চলাচল করলে পানির সঙ্গে মিশে থাকায় এটাকে দেখা যায় না। এ ছাড়া বাল্কহেড দ্রুতগতিতে চলায় দুর্ঘটনা বেশি ঘটে। বিশেষ করে রাতে বাল্কহেড চলাচল করলে দেখা যায় না।

বাল্কহেড ও কার্গো শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সবুজ সিকদার বলেন, আইনেই আছে, রাতে বাল্কহেড ও মালবাহী কার্গো চলাচল নিষিদ্ধ। কিন্তু শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গায় রাতের বেলায় এসব নৌযান চলাচল করছে, এটা সত্য। অধিক মুনাফার লোভে মালিকেরা রাতে শ্রমিকদের নৌযান চলাচলে বাধ্য করছেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নদীতে বেপরোয়াভাবে এবং রাতে যেসব নৌযান নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলাচল করছে, সেগুলোর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এ ছাড়া নদীতে নৌ পুলিশের টহল রয়েছে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এসব নৌযানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনাও আছে।