শুরু থেকে বিএনপির ছিল গা-ছাড়া ভাব

ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে অংশ নিলেও শুরু থেকে এ নির্বাচন নিয়ে গা-ছাড়া ভাব ছিল বিএনপির। প্রথম দুই ধাপের নির্বাচনের পর কেন্দ্রীয় নেতাদের এলাকায় যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তা খুব একটা কার্যকর হয়নি। অনেক জায়গায় নির্বাচনী মাঠে নিষ্ক্রিয় ছিলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
বিএনপির সূত্র জানায়, এ নির্বাচনে জয়ের চেয়ে বিএনপির কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল প্রমাণ করা যে বর্তমান সরকার ও কমিশনের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। দলটির নেতাদের কেউ কেউ মনে করেন, বিএনপির এ লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। কিন্তু এর বাইরে এ নির্বাচন থেকে বিএনপির যতটুকু রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের সুযোগ ছিল, তা অর্জন করতে পারেনি।
নির্বাচনে মোট ৫৫৪টি ইউপিতে বিএনপির প্রার্থী ছিল না। বিএনপির সূত্র জানায়, এর মধ্যে ১০২টি ইউপিতে বিএনপি প্রার্থীই খুঁজে পায়নি। এর বাইরে ১৮৮টি ইউপিতে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীরা সরকারদলীয় নেতা-কর্মীদের বাধার মুখে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেননি। আর ৫৯টি ইউপিতে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা চাপ দিয়ে বিএনপির প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারে বাধ্য করেন। অনেক জায়গায় মনোনয়নপত্র বাতিল হয়।
বিএনপির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি যদি যথাযথ গুরুত্ব দিত, তাহলে হয়তো এ অবস্থা হতো না। শতাধিক ইউপিতে প্রার্থী না পাওয়া বিএনপির জন্য গ্রহণযোগ্য নয়।
তবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মনে করেন না এ চিত্র দলের সাংগঠনিক দুর্বলতার প্রমাণ। স্বাভাবিক পরিবেশ থাকলে, নিরপেক্ষ কমিশনের অধীনে নির্বাচন হলে বোঝা যেত বিএনপির অবস্থা।
জানতে চাইলে কেন্দ্রীয়ভাবে বিএনপির ইউপি নির্বাচন সমন্বয়ক সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মো. শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, সরকার ও নির্বাচন কমিশনের পরীক্ষা নেওয়া, দলের তৃণমূলের অবস্থা যাচাই করা, দলকে সংগঠিত করাসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক গুরুত্ব ছিল এ নির্বাচনের। এসব বিবেচনায় নিয়ে অবশ্যই বিএনপি এ নির্বাচনকে গুরুত্ব দিয়েছে। হয়তো সবাই যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠে ছিলেন কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে মো. শাহজাহান বলেন, হয়তো প্রার্থীরা যেভাবে চেয়েছিলেন, সব ক্ষেত্রে তাঁদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। তবে কেন্দ্রীয় নেতারা চিঠি পেয়ে অনেকেই নির্বাচনী প্রচারে গেছেন।