শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকতে হবে

দ্বিতীয় ধাপের পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির অনেক মেয়র প্রার্থী প্রচারের শুরু থেকে ভোটের ফল ঘোষণা পর্যন্ত মাঠে সক্রিয় ছিলেন। আবার অনেকে সেভাবে সক্রিয় ছিলেন না। প্রথম আলো বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছে বিএনপির দুজন মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে। তাঁদের মধ্যে জাহাঙ্গীর আলম গত শনিবার অনুষ্ঠিত ভোটে দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। আর শরীয়তপুর পৌরসভায় নির্বাচনে ভোটে পরাজিত হয়েছেন লুৎফর রহমান ঢালি। টেলিফোনে দুজনের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন প্রথম আলোর ডেপুটি হেড অব রিপোর্টিং ইমাম হোসেন সাঈদ

জাহাঙ্গীর আলম

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: প্রচারে বাধা, নেতা–কর্মীদের হুমকি, হয়রানি, এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখানো—এসব অভিযোগ গত কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ধারাবাহিকভাবে করে আসছে বিএনপি। আপনি ঠিকমতো প্রচারও চালালেন, কেন্দ্রে কেন্দ্রে এজেন্টও দিলেন, দিনাজপুর পৌরসভা নির্বাচনে কী কৌশল নিয়েছিলেন?

জাহাঙ্গীর আলম: মারধর, হুমকি–গ্রেপ্তারের ঘটনা এখানেও ঘটেছে। তবে দিনাজপুরে নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে। আর জনগণ যখন কোনো প্রার্থীর ‘কর্মী’ হয়ে যায়, তখন সেই প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রশাসনের কিছু করা কঠিন হয়ে পড়ে। নির্যাতন, অত্যাচার, রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে প্রচারের শুরু থেকে ভোট শেষ না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকতে হবে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: পরের ধাপের পৌরসভা নির্বাচনগুলোতে বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের জন্য আপনার কী পরামর্শ থাকবে?

জাহাঙ্গীর আলম: দল, প্রতীক, ব্যক্তিগত ইমেজ—ভোটের মাঠে এই তিনটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ। আর নির্বাচন হচ্ছে ‘ভোটযুদ্ধ’। তাই যা কিছুই হোক, শেষ পর্যন্ত ভোটের মাঠে থাকতে হবে। ভোটের মাঠে থাকলে ‘নীরব বিপ্লব’ হবে। আরেকটি বিষয় শুধু বিএনপির কর্মী, সমর্থক নয়, ভোটের প্রচারে সবার কাছে যেতে হবে। আওয়ামী লীগের ভোটারদের কাছেও যেতে হবে।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: আন্দোলনের অংশ হিসেবে নির্বাচন করছে বিএনপি, দলের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এটি বারবার বলা হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচন তো শেষ পর্যন্ত জয়–পরাজয়ের বিষয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে দেওয়া বার্তা কি ভোটার, কর্মী–সমর্থকদের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে?

জাহাঙ্গীর আলম: ২০১৮ সালের নির্বাচনে এবং এর পরে সরকার বিএনপিকে দাঁড়াতেই দেয়নি। যে কারণে নির্বাচনও আন্দোলনের অংশ হয়ে গেছে। সুষ্ঠু ভোটের মাধ্যমেই ক্ষমতার পরিবর্তনে বিশ্বাসী বিএনপি। সুষ্ঠু ভোট নিশ্চিত করার জন্য জনগণের সঙ্গে থাকতে হবে সব সময়।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় আপনি এ নিয়ে তিনবার বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হলেন। আপনার এলাকার সাংসদ ক্ষমতাসীন দলের, উন্নয়নকাজে সহযোগিতা পান?

জাহাঙ্গীর আলম: আমি মেয়র নির্বাচিত হয়ে জনগণের সঙ্গে কখনো অফিসারের মতো আচরণ করিনি। জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমার কাছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, সাধারণ মানুষ সবাই সমান। সব দলের লোককে সম্মান করি। তবে পৌরসভার উন্নয়নকাজে স্থানীয় সাংসদের সহযোগিতা পাওয়া যায় না। উল্টো বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বাধার সৃষ্টি করা হয়। এখানে প্রভাব খাটিয়ে কাউন্সিলরদের দল পাল্টাতে বাধ্য করার ঘটনাও ঘটেছে। সুবিধার জন্য আর যাই হোক, আমি জার্সি পাল্টাতে পারব না।