শেষ বিকেলে বই অনুরাগীদের আনাগোনা

হরতালে গতকাল রোববার বইমেলার শুরুর দিকে দর্শনার্থীদের উপস্থিতি কম থাকলেও শেষ বিকেলে শুরু হয় বই অনুরাগীদের আনাগোনা।
ছবি: সাবিনা ইয়াসমিন।

হেফাজতে ইসলামের হরতালে গতকাল ঢাকা শহর ছিল অনেকটাই ফাঁকা। তার রেশ ছিল অমর একুশে বইমেলাতেও। নিয়মমতো রোববার বেলা তিনটায় মেলার ফটক খুললেও ক্রেতাদের উপস্থিতি অন্য দিনের মতো ছিল না।
 
শেষ বিকেলে মেলায় শুরু হয় বই অনুরাগীদের আনাগোনা। তবু ঢিলেঢালা নিরিবিলি ভাব গেল না। তবে লোক খুব বেশি হলেই যে বিক্রি বেশি হচ্ছে, এবার মেলার অবস্থা তেমন নয়। স্বাধীনতা দিবসের দিনে বহু মানুষ এসেছিলেন মেলায়। কিন্তু বিক্রি প্রকাশকদের প্রত্যাশা থেকে অনেক দূরেই থেকেছে।

জলছবি প্রকাশনের প্রকাশক নাসির আহমেদ কাবুল জানালেন, এবার ছুটির দিনগুলোতেও বিক্রি আগের মতো হচ্ছে না। নতুন লেখকদের বেশ কিছু বই এনেছেন তিনি। তাঁর নিজেরও একটি উপন্যাস এসেছে ‘একটি সুইসাইডাল নোট’ নামে। তাঁদের স্টলে ছিলেন লেখক সঞ্জয় মুখার্জি। তাঁর উপন্যাস ‘অপরাজিতার আকাশ’ ও ‘গল্পগুলো ফাগুন হাওয়ার’ এসেছে এবার। মেলার শেষ দিকে বিক্রি বাড়বে বলে আশা করছেন তাঁরা।

গতকাল সন্ধ্যায় অমর একুশে বইমেলার একটি স্টলে বই দেখছেন একজন
ছবি: প্রথম আলো।

লেখক বলছি: মেলায় হরতালের কারণে বই কিনতে আসা গ্রন্থানুরাগীদের উপস্থিতি কম থাকলেও মেলার ‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে লেখকেরা এসেছিলেন যথারীতি। এ পর্বে অংশ নেন আবদুল মান্নান, আদিত্য নজরুল ও আহমেদ শিপলু।

প্রথমার বই: আজ মেলায় প্রথমার স্টলে এসেছে দুটো নতুন বই। মহিউদ্দিন আহমদের ‘অপারেশন ভারতীয় হাইকমিশন’। ১৯৭৫ সালের ২৬ নভেম্বর সকালে ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসে বেধে যায় তুলকালাম। জাসদের তৈরি বিপ্লবী গণবাহিনীর একটি দল হাইকমিশনার সমর সেনকে জিম্মি করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ে। অভিযান ব্যর্থ হয়, নিহত হন চার তরুণ। ইতিহাসের টালমাটাল এই পর্বের রোমাঞ্চকর বিবরণ আছে এ বইয়ে। সেই সঙ্গে উঠে এসেছে কয়েক স্বপ্নবান তরুণের জীবনের গল্প।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাস নিয়ে মহিউদ্দিন আহমদের একাধিক বই পাঠকপ্রিয় হয়েছে। অপর বইটি আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক শিশির ভট্টাচার্য্যের ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: অ-সুখ ও প্রতিকার কিংবা আলিফ লাইলা’।

নতুন বই: আজ মেলায় নতুন বই এসেছে ১২২টি। এদিনের উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে জার্নিম্যান বুকস এনেছে কবি ও কথাশিল্পী আনিসুল হকের বাংলা–ইংরেজি দ্বিভাষিক কাব্য ‘তুই কি আমার দুঃখ হবি’। এর পাতায় পাতায় আছে তাঁর আঁকা ছবি। পাঠক সমাবেশ এনেছে জাহিদ হায়দারের উপন্যাস ‘অশনিপর্ব’। আহমদ পাবলিশিং হাউস এনেছে অধ্যাপক আহাম্মদ আলীর ‘ত্বকের সমস্যা ও করণীয়’, ভাষাপ্রকাশ এনেছে ‘বরিশালপিডিয়া’। মূর্ধন্য এনেছে সরকার আমিনের কবিতা ‘মৃদু বেদনার হাসপাতালে’, অন্বেষা এনেছে সুরমা জাহিদের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ‘বহির্বিশ্বে গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ’, সমগ্র প্রকাশন এনেছে শওকত হোসেন তারা সম্পাদিত ‘নোবেল বিজয়ী লেখকদের ছোটদের গল্প’, গ্রন্থকুটির এনেছে সৌমিত্র শেখর সম্পাদিত প্রবন্ধ ‘বিদ্যাসাগর ২০২০’, ভাষাচিত্র এনেছে গাজী মাজহারুল আনোয়ারের সংগীতবিষয়ক বই ‘অল্প কথার গল্প গান’, শিশু গ্রন্থ কুটির এনেছে হাবীবুল্লাহ সিরাজীর ছড়া ‘তিনে নেত্র চারে বেদ’, পাঞ্জেরী এনেছে স্বকৃত নোমানের উপন্যাস ‘উজানবাঁশি’।