শোকাবহ আগস্টজুড়ে নানা কর্মসূচি আওয়ামী লীগের

করোনার সংক্রমণের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আজ থেকে মাসজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

শুরু হলো বাঙালির শোকের মাস আগস্ট। এ মাসেই সংঘটিত হয়েছিল বাংলাদেশের ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকাণ্ড। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবার হত্যা করে একদল বিপথগামী সেনাসদস্য।

আর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয় আওয়ামী লীগের জনসভায়। সেদিন সৌভাগ্যক্রমে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও নিহত হন মহিলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সভাপতি আইভী রহমানসহ ২৪ জন।

প্রতিবছরের মতো এবারও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আগস্ট মাসজুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। করোনার সংক্রমণের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এসব কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আলোচনা সভা ও সেমিনারে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের অনেকেই ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন।

শোকের মাসের প্রথম প্রহরে গতকাল শনিবার রাত ১২টা ১ মিনিটে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর অভিমুখে আলোর মিছিল বের করে স্বেচ্ছাসেবক লীগ। একই কর্মসূচি পালন করে ছাত্রলীগও। আজ রোববার যুবলীগের পক্ষ থেকে মাসব্যাপী কোরআন খতম শুরু হবে। এ ছাড়া সংগঠনের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে খাবার বিতরণ করা হবে। কৃষক লীগের উদ্যোগে আজ ধনামন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে রক্তদান কর্মসূচি শুরু করা হবে।

বঙ্গবন্ধু ছাড়াও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে তাঁর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশুপুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, বঙ্গবন্ধুর ফোন পেয়ে তাঁর জীবন বাঁচাতে ছুটে আসা কর্নেল জামিল, এসবির কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনাসদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককে হত্যা করা হয়।

ওই কালরাতেই বিপথগামী সেনাসদস্যদের আরেকটি দল বঙ্গবন্ধুর ভাগনে যুবলীগের নেতা শেখ ফজলুল হক মণির বাসায় হামলা চালিয়ে তাঁকে, তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আরজু মণি এবং বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাসায় হামলা করে তাঁকে ও তাঁর কন্যা বেবী, পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, নাতি সুকান্ত বাবু, সেরনিয়াবাতের বড় ভাইয়ের ছেলে সজীব সেরনিয়াবাত এবং এক আত্মীয় আবদুল নঈম খানকে হত্যা করা হয়।

ওই সময় বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করায় বেঁচে যান।

বাঙালির মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করতে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনও পৃথক কর্মসূচি পালন করবে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, সেমিনার, রক্তদান কর্মসূচি, কোরআনখানি, দোয়া, দুস্থদের মধ্যে খাবার ও করোনার সুরক্ষাসামগ্রী বিতরণ। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক সংগঠন যথাযোগ্য মর্যাদা, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় শোকাবহ আগস্ট পালন উপলক্ষে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান ও সমাধিস্থল টুঙ্গিপাড়াতেও আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।