সংবাদপত্রের স্বাধীন ও দল নিরপেক্ষ অবস্থানই কাম্য

বিতর্ক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাই স্বাধীন সংবাদপত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য হওয়া উচিত। লক্ষ্য হওয়া উচিত সঠিক তথ্যনির্ভর, স্বাধীন ও দলনিরপেক্ষ অবস্থান। তবে দেশে গণতন্ত্র না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা কঠিন হয়ে দাঁড়ায়।


রিডিং ক্লাব ট্রাস্ট আয়োজিত ৪০০তম সাপ্তাহিক গণবক্তৃতায় বক্তারা এসব কথা বলেন। শনিবার সন্ধ্যায় ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর ও সংবাদপত্র’ শীর্ষক বক্তৃতা করেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। ভার্চ্যুয়ালি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অনারারি অধ্যাপক সাখাওয়াত আলী খান।


বাংলাদেশের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক ঘটনায় সংবাদপত্রের ভূমিকা প্রসঙ্গে মতিউর রহমান বলেন, এ দেশে সংবাদপত্রের গৌরবময় অতীত রয়েছে। সামরিক সরকারের সময়ে কঠিন পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশে সংবাদপত্র কাজ করেছে। বিভিন্ন সরকারের হাতে মামলা, হামলা, হয়রানির শিকার হয়েও সংবাদপত্র গণতন্ত্র ও মানুষের কথা বলে যাচ্ছে। তবে বিগত তিন দশকে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক স্বার্থে সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠা ও পরিচালিত হয়েছে।

মতিউর রহমান আরও বলেন, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সংবাদপত্র এখন অনলাইন বাস্তবতার সম্মুখীন। বেশ কয়েক বছর ধরেই বিশেষজ্ঞরা অনলাইন মাধ্যমের বিকাশের কথা বলে আসছিলেন। এখন তা বাস্তব। ছাপা পত্রিকার প্রচারসংখ্যা ও আয় কমেছে; অন্যদিকে অনলাইনে পাঠক ও আয় বাড়ছে। দেশের পত্রিকাগুলোকে এই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে হবে।


সভাপতির বক্তব্যে সাখাওয়াত আলী খান বলেন, সংবাদপত্রকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ বলা হয়। নির্বাহী বিভাগ, বিচার বিভাগ ও সংসদ—এই তিন স্তম্ভের মতো সংবাদপত্রকেও স্বতন্ত্র অস্তিত্ব রক্ষা ও দায়িত্ব পালন করে যেতে হবে।


যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী বাংলাদেশে অনেক অর্জনের পাশাপাশি সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা হলো কথা বলার অধিকার ক্রমে সংকুচিত হয়ে আসা।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত গুণীজনদের মধ্যে ছিলেন গোলাম মুরশিদ, ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, ডা. শুভাগত চৌধুরী, আবুল বারকাত, এম এম আকাশ, জাকির হোসেন রাজু, জাকিয়া আফরিন প্রমুখ।