সংবিধানের বাইরে যাব না, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেব না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান
ফাইল ছবি

ভাস্কর্য ইস্যুতে আলেম-ওলামাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেছেন, ‘স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা সংবিধানের বাইরে যাব না। আবার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেও কিছু করব না।’

আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

আসাদুজ্জামান খান বলেন, আওয়ামী লীগ নতজানু রাজনীতি করে না। আলোচনা শুরু হয়েছে এবং চলবে।

ভাস্কর্য নির্মাণকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের সঙ্গে গতকাল সোমবার রাতে বৈঠক করেন দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেমরা। রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাঁরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমন্ডির বাসায় যান। মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁরা প্রায় এক ঘণ্টা আলোচনা করেন।

বৈঠকে আলেমদের পক্ষে নেতৃত্ব দেন কওমি মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার (বেফাক) সভাপতি মাহমুদুল হাসান। ১২ জন আলেম ওই বৈঠকে অংশ নেন।

আজ আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। যেহেতু আমরা আলোচনা শুরু করেছি, শিগগির এর একটি ফলপ্রসূ ফলাফলও পাবেন। তাঁরা (আলেমরা) যে পাঁচটি প্রস্তাব দিয়েছেন, সেসব নিয়ে আলোচনা চলবে। আমরা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করব না। আমরা সংবিধানের বাইরে কোনো কিছুই করব না।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি, একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। কেউ যেন ভাঙচুর বা আইনশৃঙ্খলা নষ্ট না করে, সে বিষয়ে তাঁরা আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন। ফেসবুকের অপপ্রচার বন্ধে আমাদের সজাগ হতে বলেছেন। তাঁরা (আলেমরা) বলেছেন, কোনো রকম আন্দোলন তাঁরা করবেন না। তাঁরা পাঁচটি প্রস্তাব আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে শেষ করতে চান।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভাস্কর্যের বিষয়ে আলেম-ওলামাদের সঙ্গে আলোচনা পাঁচ দফা প্রস্তাব অনুযায়ী আলোচনা চলছে। তাঁরা ভাস্কর্যের বিপরীতে মিনার স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন। আলেমরা বঙ্গবন্ধুর নামে মিনার স্থাপনের প্রস্তাব করছেন। কী করা হবে, এসব নিয়ে আলোচনা চলছে। এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

ভাস্কর্য সরানো হবে কি না বা নির্মাণকাজ বন্ধ রাখা হবে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এ বিষয় নিয়েও আলোচনা চলছে। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে তো পূজা করা হয় না।

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য করা হয়েছে যাতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাঁকে স্মরণ করতে পারে।
এর আগে ৫ ডিসেম্বর যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসায় কওমি আলেমদের এক সভা থেকে ভাস্কর্যের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ ছাড়া ১০ ডিসেম্বর একই দাবি জানায় হেফাজতে ইসলাম।

রাজধানীর দোলাইরপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের কাজ বন্ধের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি ধর্মভিত্তিক সংগঠন আন্দোলন করে আসছে। এর মধ্যে ৪ ডিসেম্বর রাতে কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মাণাধীন ভাস্কর্য ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দেশজুড়ে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে।