সংস্কারে প্রকল্প নেওয়া হলেও আটকে আছে অনুমোদন

ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় এক যুগের বেশি সময় ধরে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এটি সংস্কার করতে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ব্যয় নির্ধারণের জটিলতায় সেটির অনুমোদন আটকে আছে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, কুলাউড়া জংশন রেলস্টেশন থেকে বড়লেখার শাহবাজপুর স্টেশন পর্যন্ত রেলপথটির দৈর্ঘ্য ৪২ কিলোমিটার। এর মধ্যে জুড়ী, দক্ষিণভাগ, কাঁঠালতলী, বড়লেখা ও মুড়াউল রেলস্টেশন পড়েছে। ১৯৮৮ সালে প্রকৌশলীরা পরীক্ষা করে রেলপথটি ট্রেন চলাচলের অনুপযোগী বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দেন। এর ১৪ বছর পর ২০০২ সালের ৮ জুলাই এ পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে জুড়ী, কুলাউড়া ও বড়লেখা উপজেলার আট লাখের বেশি মানুষ দুর্ভোগে পড়ে।

সূত্র জানায়, রেলপথটি সংস্কার করে ট্রেন চলাচল চালু করতে ২০১৩ সালে ১১৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। পরে তা বাড়িয়ে ৫০০ কোটি টাকা করা হয়। ভারত সরকারের কাছ থেকে পাওয়া ঋণের অর্থ দিয়ে প্রকল্পের ব্যয় মেটানোর কথা। তবে ব্যয় নির্ধারণ জটিলতায় প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে আটকে রয়েছে। সর্বশেষ ৩ ফেব্রুয়ারি পরিকল্পনা কমিশনে এ-সংক্রান্ত একটি বৈঠক হয়। এতে প্রকল্প ব্যয় বেশি বলে অনেকে মতামত দেন। পরে প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই করে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে পরিকল্পনা কমিশনের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগে (আইএমইডি) আবার পাঠানো হয়।

রেল মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শশী কুমার সিংহ ৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম আলোকে জানান, পরিকল্পনা কমিশন প্রস্তাবটি অনুমোদন করলে তা একনেকে (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি) যাবে। সেখানে অনুমোদিত হলে কাজ শুরু করা হবে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় এ রেলপথ ঘেঁষে দোকানপাট, বসতঘরসহ নানা স্থাপনা গড়ে উঠেছে। কয়েকটি স্থাপনার মালিক দাবি করেন, তাঁরা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জমি ইজারা নিয়েছেন। তবে এ-সংক্রান্ত কোনো দলিল তাঁরা দেখাতে পারেননি।

জানতে চাইলে রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগের কুলাউড়া কার্যালয়ের জরিপকারক (সার্ভেয়ার) আমিন উদ্দিন বলেন, কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথে ৮৫ থেকে ৯০টি অবৈধ স্থাপনা রয়েছে। এসব স্থাপনার তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। এগুলো উচ্ছেদে অর্থও বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে, কিন্তু পাওয়া যায়নি। তিনি জানান, আইন অনুযায়ী রেলপথের দুই পাশে ২০ ফুট দূরত্বের মধ্যে কোনো জায়গা ইজারা দেওয়া হয় না।