সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা জাতীয় দাবি: ক্যাব

দেশের সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা এখন জাতীয় দাবি। এটি বাস্তবায়নে রাষ্ট্র বা সরকার অসহায় ও নতি স্বীকার করতে পারে না। এমন মত দিয়েছে ভোক্তা অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিষয় নিয়ে ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমানের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এসব কথা বলেছে।

সাত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পর আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে দেশের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েও সমন্বিতভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। গত ২৩ জানুয়ারি ইউজিসি সভা করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানায়। যদিও ওই বৈঠকে চারটি স্বায়ত্তশাসিত বড় বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) চূড়ান্তভাবে কথা দেয়নি।

ক্যাবের মতে, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। সে জন্য জাতীয় প্রত্যাশা থেমে থাকতে পারে না।

ক্যাব সভাপতি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা থাকবে ইউজিসি দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করে যাবে।’

ক্যাবের পক্ষে সেখানে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও গবেষক সৈয়দ আবুল মকসুদ। তিনি বলেন, দেশে অপরিকল্পিতভাবে একের পর এক বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে। কোথায় মানসম্পন্ন ও দক্ষ শিক্ষক পাবে, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে না। বুঝতে হবে উচ্চশিক্ষা নাগরিকের মৌলিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার নয়। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আজ অরাজকতা চলছে। কেউ কেউ সনদ–বাণিজ্য করছে। ফলে মেধাবী ও দক্ষ গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছে না। উচ্চশিক্ষা নিয়ে ব্যবসা করা অনুচিত।

ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা শামসুল আলম বলেন, কিছু বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নিতে খুবই অনীহা। এতে নাগরিক অধিকার বিপন্ন হচ্ছে। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ। ইউজিসি সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার জন্য একটি গাইডলাইন তৈরি করে দিলে ক্যাব সেটি বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে।

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার উদাহরণ টেনে ইউজিসি চেয়ারম্যান কাজী শহীদুল্লাহ বলেন, ‘সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা দৃঢ়। এটি বাস্তবায়নে কোনো ছাড় নেই। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় যদি অপারগ হয়, সে ক্ষেত্রে তাদের ছাড়াই সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা হবে।’

ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, প্রথমে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। পর্যায়ক্রমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করা হবে।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ক্যাবের ভোক্তা অভিযোগ নিষ্পত্তি জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক দিল আফরোজা বেগম, অধ্যাপক মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ আলমগীর প্রমুখ।

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ধারণা হলো সব কটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক, ব্যবসায় শিক্ষায়, বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন শাখার বিষয়গুলোর জন্য একটি করে পরীক্ষা নিয়ে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করা। এতে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ কমবে, অর্থেরও সাশ্রয় হবে। ইউজিসির সিদ্ধান্ত হলো এই পরীক্ষা হবে সংক্ষিপ্ত প্রশ্নের ভিত্তিতে। বর্তমানে বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে এমসিকিউ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হয়।