সরকার কঠোর, আরও সময় চান অপারেটর–পরিবেশকেরা

বিজ্ঞাপনমুক্ত বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচারে দুই বছর আগে থেকে সংশ্লিষ্টদের তাগাদা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হচ্ছিল—তথ্যমন্ত্রী

বাংলাদেশে তিন দিন ধরে বিদেশি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল বন্ধ আছে। এ পরিস্থিতি থেকে শিগগিরই উত্তরণের উপায় কেউ বলতে পারছেন না। এর মধ্যেই বিদেশি চ্যানেলের বাংলাদেশি পরিবেশক ও কেব্‌ল অপারেটররা সরকারের কাছে সময় চেয়ে আবেদন করেছেন। অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে বিজ্ঞাপন ছাড়া বিদেশি চ্যানেল সম্প্রচারের বিষয়ে কঠোর অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে।

২০০৬ সালের কেব্‌ল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন অনুযায়ী সরকার বিজ্ঞাপনমুক্ত বিদেশি চ্যানেল দেশে সম্প্রচারের নির্দেশনা দেয়। কিন্তু কেব্‌ল অপারেটররা বিজ্ঞাপনমুক্ত চ্যানেল সম্প্রচার করতে সক্ষম নন—এমন যুক্তিতে সব বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেন। যদিও দেশের একমাত্র ডিটিএইচ সংযোগকারী প্রতিষ্ঠান ‘আকাশে’র গ্রাহকেরা বিবিসি, সিএনএন, আল–জাজিরার মতো বেশ কিছু সংবাদভিত্তিক চ্যানেলের সম্প্রচার দেখতে পাচ্ছেন।

তথ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার বিদেশি চ্যানেলের এদেশীয় পরিবেশকেরা তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে তাঁরা বিজ্ঞাপনমুক্ত (ক্লিন ফিড) চ্যানেল প্রচারের জন্য আরও কিছুটা সময় চান। অবশ্য এ বিষয়ে কোনো পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমকে কিছু জানানো হয়নি।

মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, বাংলাদেশে যেসব বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার হয়, সেগুলোর মধ্যে অন্তত ১৭টি চ্যানেল আছে, যেগুলো ক্লিন ফিড বা বিজ্ঞাপনমুক্ত থাকে। সেই চ্যানেলগুলো প্রচারে কোনো বাধা নেই। কেব্‌ল অপারেটরদের এ বিষয়ে বলা হয়েছে।

আন্দোলনের কথা অযৌক্তিক: তথ্যমন্ত্রী

অনুষ্ঠানের ফাঁকে বিজ্ঞাপন দেখানো বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলের সম্প্রচার আইন অনুযায়ী বন্ধের পক্ষে কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, এ নিয়ে আন্দোলনের কথা বলা অযৌক্তিক। যেসব চ্যানেল দেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে ও সংস্কৃতিকে চোখ রাঙাচ্ছে, সেগুলোর পক্ষে ওকালতি করা দেশের স্বার্থ ও আইনবিরোধী।

গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আইন অনুযায়ী বাংলাদেশে বিদেশি যেকোনো চ্যানেল বিজ্ঞাপনমুক্তভাবে প্রচার করতে হবে। এ আইন ভারতসহ বিভিন্ন দেশে আছে। কিন্তু বাংলাদেশে এই আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করা হচ্ছিল। সরকার এই আইন বাস্তবায়নের জন্য দুই বছর আগে সংশ্লিষ্টদের বলেছিল এবং তাদের তাগাদা দেওয়া হয়েছিল।

পুনরায় সম্প্রচারে ব্যবস্থা নিতে আইনি নোটিশ

বিদেশি সব চ্যানেল পুনরায় সম্প্রচারের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারসচিব এবং কেব্‌ল অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (কোয়াব) সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক বরাবর আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। নোটিশ পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।