সরকারি দলের হয়ে নির্বাচন করলেই জয়, এমন ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে: আসক

আইন ও সালিশ কেন্দ্র

ভোটারবিহীন স্থানীয় নির্বাচন গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয় বলে মনে করছে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। প্রতিষ্ঠানটি এক বিবৃতিতে বলেছে, সরকারি দলের হয়ে নির্বাচন করলেই জয়, এমন ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। আজ মঙ্গলবার পাঠানো এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়।

আসকের নির্বাহী পরিচালক গোলাম মনোয়ার কামালের স্বাক্ষর করা বিবৃতিতে বলা হয়, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে একের পর এক বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এটি দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে সুদূরপ্রসারী নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এর ফলে ভোটারদের ভোট দানের তথা নিজের পছন্দ অনুযায়ী প্রতিনিধি নির্বাচন করার অধিকার ক্ষুণ্ন হচ্ছে । অনেক যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার আগ্রহ পাচ্ছেন না। এর ফলে ব্যাপকভাবে রাজনীতি ও নির্বাচনবিমুখতা তৈরি হচ্ছে, যা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির জন্য অশুভ।

গতকাল সোমবার দেশের ১৬০টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ করা হয়।

আসকের বিবৃতিতে গণমাধ্যমের সূত্র উল্লেখ করে বলা হয়, ভোটের আগেই বাগেরহাট, চট্টগ্রাম ও খুলনায় ৪৩টি ইউপিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন। এর মধ্যে বাগেরহাটে ৬৬টি ইউপির মধ্যে ৩৮টিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন না। বাকি ২৮ ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বী নিজ দলেরই বিদ্রোহী প্রার্থী। প্রথম পর্যায়ের ইউপি নির্বাচনের আগের অংশেও একই চিত্র দেখা গেছে। ২০৪ ইউপিতে ২১ জুন ভোট হয়েছে। তখন ২৮ চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন।

আসকের বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারি দলের হয়ে যিনি নির্বাচন করবেন, তিনিই জিতবেন, এমন একটি ধারণা প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। আর এ কারণে অন্য রাজনৈতিক দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন। অথচ বাংলাদেশে কিছুদিন পূর্বেও নির্বাচন মানেই ছিল তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। ভোটাররাও প্রচুর উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যে নির্বাচনে অংশ নিতেন।

আসকের বিবৃতিতে বলা হয়, নির্বাচন কমিশন তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে না পারায় ধীরে ধীরে নির্বাচন নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে। অথচ একটি গণতান্ত্রিক দেশে সব পক্ষের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন অপরিহার্য।

উদ্ভূত পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানানো হয় আসকের বিবৃতিতে।