সরকারি বরাদ্দ ১০% কমায় ছোট হচ্ছে ঢাবির বাজেট

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) গত অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় এবারের বাজেট কিছুটা ছোট হচ্ছে। মূলত বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) মাধ্যমে সরকার এ বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতি বছর যে অনুদান দেয় তার ১০ শতাংশ কমায় এবার এমনটা হয়েছে। আর এর পেছনে কারণ হিসেবে কাজ করেছে গত অর্থবছরে বরাদ্দের কিছু অংশ উদ্বৃত্ত থাকা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

গত অর্থবছরে (২০২০-২১) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেটের আকার ছিল ৮৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। নতুন অর্থবছর ২০২১-২২ এ এই বাজেটের আকার দাঁড়াচ্ছে ৮৩১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।

সোমবার বিকেলে নতুন এ বাজেট আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের বার্ষিক সভায় উপস্থাপনের জন্য অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ সিনেটে বাজেট উপস্থাপন করবেন। সেখানে আলোচনার পর বাজেট চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ভবন সূত্রে জানা গেছে, ৮৩১ কোটি ৭৯ লাখ টাকার প্রস্তাবিত এই বাজেটে শিক্ষক-কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন খাতে ২৬৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা, ভাতা খাতে ২২৪ কোটি ৬৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা, পণ্য ও সেবা খাতে ১৬৮ কোটি ৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা, পেনশনে ১২২ কোটি ৭৫ লাখ টাকা এবং গবেষণা খাতে (মঞ্জুরি) ১১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেখানো হয়েছে। অর্থাৎ শুধু বেতন-ভাতা খাতেই খরচ হবে ৪৮৯ কোটি ১৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। যা বাজেটের ৫৮.৮১ শতাংশ।

এর বাইরে গবেষণাগারের সরঞ্জাম কেনায় ৬ কোটি ৫ লাখ, শিক্ষা উপকরণ কেনায় ৫ কোটি, বিভাগীয় যন্ত্রপাতি কেনায় ২ কোটি ও রাসায়নিক দ্রব্য কেনায় দুই কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেখানো হয়েছে প্রস্তাবিত এই বাজেটে। এ ছাড়া শিক্ষকদের গবেষণা ভাতা হিসেবে ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বাজেট বাস্তবায়নে ইউজিসির কাছ থেকে ৬৯৬ কোটি টাকা (বাজেটের ৮৩ শতাংশ) অনুদান পাওয়ার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব খাত থেকে আরও ৬৫ কোটি টাকা আয়ের পরও এই বাজেটে ৭০ কোটি ২৫ লাখ টাকা ঘাটতি থাকবে।

গত বাজেট বনাম এবারের বাজেট

গত অর্থবছরে (২০২০-২১) গবেষণা খাতে (মঞ্জুরি) বরাদ্দ ছিল ৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা, নতুন বাজেটে যা ১১ কোটি টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে। গত অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি ছিল ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। এবারের বাজেটে তা ৮.৪ শতাংশের মতো। মূলত করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় প্রায় ৯৫ কোটি টাকা উদ্বৃত্ত থেকেছে বিগত অর্থবছরের বাজেট থেকে।

গত কয়েক অর্থবছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট ক্রমাগত বাড়লেও এবারই সেই ধারায় ছন্দপতন হচ্ছে। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহ-উপাচার্য প্রথম আলোকে বলেন, করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় গত অর্থবছরের বরাদ্দের কিছু অংশ উদ্বৃত্ত ছিল। এ কারণেই ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয়কে বরাদ্দ ১০ শতাংশ কম দিয়েছে। বাজেটের আকার ছোট হওয়ার এটাই কারণ।