সর্বজনীন পেনশন: টাকা জমা ও সুবিধা পাওয়া যাবে যেভাবে

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‌সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২২–এর খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে
ছবি: পিআইডি

সাধারণ নিয়ম হলো ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী ব্যক্তিরা সর্বজনীন পেনশনের সুযোগ পাবেন। কিন্তু বিশেষ ব্যবস্থায় এর বেশি বয়সীরাও এ পেনশনের সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন। পেনশনের আওতায় আসার জন্য কমপক্ষে ১০ বছর পর্যন্ত নির্ধারিত পরিমাণ চাঁদা দিতে হবে। আর একজন ব্যক্তি পেনশন সুবিধা ভোগ করবেন ৬০ বছর বয়স হওয়ার পর থেকে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ সুবিধা ভোগ করবেন।

এমন বিধান রেখে ‌সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনা আইন, ২০২২–এর খসড়া ভেটিং (আইনি যাচাই) সাপেক্ষে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এখন আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ থেকে আইনি যাচাই করে ঠিক আছে বললে সেটি জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের জন্য পাঠানো হবে।

আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে অলোচিত এ আইনের খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ভিত্তি ধরে ১৮ বছর বয়স থেকে ৫০ বছর পর্যন্ত সব বাংলাদেশি নাগরিক এ সর্বজনীন পেনশনে অংশ নিতে পারবেন। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীরাও এতে অংশ নিতে পারবেন। তাঁরা যদি নিবন্ধন করেন এবং প্রিমিয়াম দেন, তাহলে তাঁরাও অংশ নিতে পারবেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিশেষ বিবেচনায় আলাদা বিধি অনুযায়ী ৫০ বছরের বেশি বয়সীদেরও এ পেনশন সুবিধার আওতায় আনা যাবে।

কত বছর পর্যন্ত চাঁদা দিতে হবে, কখন থেকে পেনশন সুবিধা পাওয়া যাবে, সে বিষয়ে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সবাইকে কমপক্ষে ১০ বছর নিয়মিত চাঁদা দিতে হবে। তিনি বলেন, ১৮ বছর থেকে শুরু হবে ৬০ বছর বয়সে গিয়ে চাঁদা দেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। তারপর ৬০ থেকে তিনি যত দিন জীবিত থাকবেন, তত দিন পেনশন সুবিধা পাবেন।

এ প্রিমিয়ামের (চাঁদা) টাকা এবং কে কত টাকা পেনশন সুবিধা পাবেন, তা বিধি দিয়ে নির্ধারিত করা হবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তিনি বলেন, পেনশনে থাকাকালে কেউ যদি মারা যান, তাহলে তিনি যাঁকে নমিনি করবেন, তিনি ওই ব্যক্তির ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত হিসাব করে সুবিধা পাবেন।

এ বিষয়টি উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, কোনো পেনশনভোগী ব্যক্তি যদি ৬৫ বছর বয়সে মারা যান, তাহলে তাঁর নমিনি আরও ১০ বছর পেনশন সুবিধা পাবেন। তবে ব্যক্তি জীবিত থাকলে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ সুবিধা পাবেন।

আবার কেউ যদি চাঁদা দেওয়াকালীন মারা যান, কিন্তু তাঁর বয়স ৬০ বছর হয়নি, তাহলে ওই ব্যক্তির নমিনি জমা করা টাকা এবং এককালীন সুবিধা পাবেন। পেনশন পাবেন না। যেমন কোনো ব্যক্তির বয়স ২০ বছর হলো এবং এ পেনশনের জন্য চাঁদা দিচ্ছিলেন, তিনি যদি ৩০ বছর বয়সে মারা যান, তাহলে তাঁর নমিনি ওই ব্যক্তির জমা করা টাকা এবং এককালীন সুবিধা পাবেন।