সাংবাদিকতাকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন মিজানুর রহমান খান

সাংবাদিক মিজানুর রহমান খানের স্মরণে সভার আয়োজন করে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)। সভায় সহকর্মী ও পরিচিতজনেরা স্মৃতিচারণ করেন। ঢাকা, ২৬ জানুয়ারি
হাসান রাজা

একে একে বর্তমান ও সাবেক সহকর্মীরা স্মৃতিচারণা করছেন। কেউ স্মরণ করছেন মিজানুর রহমান খানের সাংবাদিকতার জীবন। কেউ বলছেন ব্যক্তিজীবনে তাঁর সরলতা ও সততার কথা। স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে চোখ ভিজে আসছে অনেকের। তাঁরা বলছেন, মিজানুর রহমান এ দেশের সাংবাদিকতাকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। তাঁর শূন্যতা পূরণ করা কঠিন।

প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খানকে এভাবেই স্মরণ করেছেন সাংবাদিকসহ তাঁর সহকর্মীরা। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এই আয়োজন করে ডিআরইউ।

মিজানুর রহমান খান একজন আপাদমস্তক সাংবাদিক ছিলেন উল্লেখ করে সভায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, এত অল্প বয়সে মিজানুর রহমানকে চলে যেতে হলো, এটা মানা যায় না। তাঁকে অনুসরণ করলে সাংবাদিকতায় নিঃসন্দেহে ভালো করা যাবে।

জাতীয় প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ শাহেদ চৌধুরী বলেন, ভালো সাংবাদিকের বাইরেও মিজানুর রহমান একজন ভালো মানুষ ছিলেন।

মিজানুর রহমান খান একজন পরিপূর্ণ সাংবাদিক ছিলেন বলে উল্লেখ করেন ডিআরইউর সভাপতি মুরসালিন নোমানী। তিনি মিজানুর রহমান খানের নামে সেরা প্রতিবেদনের একটি পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেন।

স্মরণসভায় প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, মিজানুর রহমান একজন আদর্শ ও খ্যাপাটে সাংবাদিক ছিলেন। বাংলাদেশের সাংবাদিকতায় তিনি একটি নতুন দিগন্ত তৈরি করেছেন। সাহস, বুদ্ধি ও সততার সঙ্গে তিনি সাংবাদিকতার সব কাজ করতেন।

প্রথম আলোর উপসম্পাদক লাজ্জাত এনাব মহছি বলেন, মূলত সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করলেও মিজানুর রহমান খানের ঝোঁক ছিল রিপোর্টিংয়ে। ছবি তোলা, রিপোর্ট লেখা, রিভিউ লেখা সবদিকেই তাঁর মনোযোগ ছিল। সাংবাদিকতাকে তিনি নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়।

মিজানুর রহমানের স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান। তিনি বলেন, জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মিজানুর রহমান খান রিপোর্টিং করেছেন। এ শূন্যতা পূরণ হওয়ার নয়।

বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মিজান মালিক বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দলিল নিয়ে মিজানুর রহমান খানের কাজ স্মরণীয়।

সভার শেষ দিকে মিজানুর রহমানের বড় ছেলে সাদমান মিজানুর রহমান খান বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, তাঁর ইচ্ছা আইনজীবী হওয়ার। আর আদালতে যাওয়ার আগে তাঁর বাবার দোয়া নিয়ে যাবেন। সেই ইচ্ছা পূরণ হয়নি। বাবার কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন তিনি।

সভায় আরও স্মৃতিচারণা করেন ডিআরইউর সাবেক সভাপতি শফিকুল করীম, রফিকুল ইসলাম ও ইলিয়াস হোসেন, প্রথম আলোর উপসম্পাদক এ কে এম জাকারিয়া, সাংবাদিক শরিফুজ্জামান, ডিইউজের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল আলম, আরেক অংশের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নুরুল আমিন প্রমুখ।