সাইকেল লেন ও নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার আহ্বান

বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস উপলক্ষে ওয়েবিনার আয়োজন করে ওয়ার্ক ফর আ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট।
ছবি: সংগৃহীত

যানজট, জ্বালানিসংকট, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশদূষণের মতো সমস্যাগুলোর সমাধানে বাইসাইকেল হতে পারে গুরুত্বপূর্ণ বিকল্প। বাইসাইকেলের ব্যবহারে মানুষকে উৎসাহী করতে পরিকল্পিত সাইকেল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি সাইক্লিস্টদের সাইকেলের জন্য আলাদা লেন তৈরি করতে হবে। বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।

ওয়ার্ক ফর আ বেটার বাংলাদেশ (ডব্লিউবিবি) ট্রাস্ট আজ বৃহস্পতিবার এ ওয়েবিনারের আয়োজন করে। ওয়েবিনারে অংশ নেওয়া আলোচকেরা বলেন, সাশ্রয়ী যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে সাইকেলের বিকল্প নেই। স্বল্প ও দূরবর্তী যাতায়াতে সাইকেলের রাস্তা, প্রয়োজনীয় অবকাঠামোসহ একটি সমন্বিত সাইকেল নেটওয়ার্ক তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি নিরাপদ সাইকেল পার্কিং, মেরামতের ব্যবস্থা, ছাউনি, বসার ব্যবস্থা, খাওয়ার পানি ও গণশৌচাগারের ব্যবস্থা থাকাও দরকার।

বাইসাইকেলের উপযোগিতা এবং এটিকে পরিবেশবান্ধব বাহন হিসেবে পরিচিত করে তুলতে প্রতিবছর ৩ জুন বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস পালন করা হয়। ২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে জাতিসংঘের সাধারণ সভায় ৩ জুন দিনটিকে বাইসাইকেল দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য, ‘সাইকেল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলি, পরিবেশবান্ধব নগর গড়ি’।

ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান বলেন, ঢাকায় সাইকেল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সিটি করপোরেশন, ট্রাফিক বিভাগ এবং ডিটিসিএর মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন। বিচ্ছিন্ন লেন করে সাইকেলবান্ধব পরিবেশ গড়া অসম্ভব। ঢাকা শহরের মেগা প্রকল্পগুলোতে সাইকেলের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।
ওয়েবিনারে সভাপতির বক্তব্যে ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, স্বল্প ও দূরবর্তী যাতায়াতের জন্য সাইকেলের রাস্তা, প্রয়োজনীয় অবকাঠামোসহ একটি সমন্বিত সাইকেল নেটওয়ার্ক তৈরি করা দরকার। সাইকেল লেন এমন হতে হবে যেন মানুষ সহজে ও নিরাপদে তাঁর গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে।

ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের প্রকল্প কর্মকর্তা আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, একটি সাড়ে তিন মিটার প্রশস্ত সড়কে ঘণ্টায় ব্যক্তিগত গাড়িতে করে দুই হাজার মানুষ যাতায়াত করতে পারেন। সেখানে সাইকেলে যাতায়াত করতে পারেন ১৪ হাজার মানুষ। প্রতি কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে ২৫০ গ্রাম কার্বন ডাই–অক্সাইড নির্গমন রোধ করা সম্ভব।
বিডিসাইক্লিস্টসের স্বেচ্ছাসেবক ফুয়াদ আহসান চৌধুরী বলেন, ঢাকায় সাইকেল চালানোর নিরাপদ পরিবেশ নেই, পার্কিংয়ের সুযোগ নেই। ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহারকারীদের সাইকেল ব্যবহারে উৎসাহিত করে তুলতে হবে। সাইক্লিস্টদের নিরাপত্তায় সড়কে যানবাহনের গতিসীমা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

ডব্লিউবিবি ট্রাস্টের জ্যেষ্ঠ প্রকল্প কর্মকর্তা জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক এম এ মান্নান প্রমুখ।