সাতক্ষীরায় শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলা মামলা বাতিল প্রশ্নে রুল শুনানি শুরু

হাইকোর্ট ভবন
ফাইল ছবি

সাতক্ষীরায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে দেড় যুগ আগে হামলার ঘটনায় করা এক মামলা বাতিল প্রশ্নে রুলের ওপর হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়েছে।

বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার এ শুনানি গ্রহণ করেন। শুনানি নিয়ে আদালত ২৯ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
আদালতে শুনানিতে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহবুব উদ্দিন খোকন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর, সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মিজানুর রহমান।

পরে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর প্রথম আলোকে বলেন, ওই ঘটনায় হত্যাচেষ্টা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে তিনটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ঘটনার সময় হত্যাচেষ্টা মামলায় আসামি রকিবের বয়স ১০ বছর ছিল উল্লেখ করে মামলা বাতিল চেয়ে ২০১৭ সালে হাইকোর্টে আবেদন করে রকিব। এর পরিপ্রেক্ষিতে গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলার কার্যক্রমে ২০১৭ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট রুলসহ স্থগিতাদেশ দেন। দীর্ঘদিন ধরে মামলাটি এভাবেই পড়ে ছিল।

বিষয়টি জানার পর সম্প্রতি এ–সংক্রান্ত রুল শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে জানান অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। তিনি বলেন, ওই রুলের ওপর গতকাল শুনানি শুরু হয়। আগামী মঙ্গলবার শুনানির পরবর্তী দিন রাখা হয়েছে। অন্য আসামিদের হাইকোর্টে করা পৃথক আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে বিস্ফোরক ও অস্ত্র আইনের মামলার কার্যক্রমও স্থগিত হয়ে আছে। এগুলো শুনানির উদ্যোগ নেওয়া হবে।

রাষ্ট্রপক্ষের তথ্যানুসারে, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরায় যান তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সড়কপথে ঢাকায় ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এতে আহত হন শেখ হাসিনার সফরসঙ্গী ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতাসহ স্থানীয় নেতা–কর্মী ও সাংবাদিক। এ ঘটনায় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোসলেম উদ্দিন কলারোয়া থানায় মামলা করতে যান, তবে তা গ্রহণ করা হয়নি।

রাষ্ট্রপক্ষের তথ্যানুযায়ী, ঘটনার এক যুগ পর ২০১৪ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সাতক্ষীরা আদালতে নালিশি অভিযোগ করেন কলারোয়া উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন। আদালত অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গণ্য করতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেন। তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ১৭ মে বিএনপির তৎকালীন সাংসদ হাবিবুল ইসলামসহ ২৭ জনের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে বিস্ফোরক দ্রব্য ও অস্ত্র আইনে পৃথক অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ২০১৭ সালের ১০ জুলাই অভিযোগ গঠিত হয়। এরপর আসামিপক্ষ হাইকোর্টে পৃথক আবেদন ও আপিল করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মামলাগুলোর কার্যক্রম স্থগিত হয়। পরে মামলার কার্যক্রম আর এগোয়নি।