সাবেক সাংসদের বিরুদ্ধে বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপনে টাকা তোলার অভিযোগ, প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় সাবেক সাংসদ সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ শহিদুল্লার সংবাদ সম্মেলন
ছবি: প্রথম আলো

বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপনে দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছে গাজীপুরের কাপাসিয়ার সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ শহিদুল্লার বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে স্থানীয় সাংসদকে উদ্দেশ্য করে লেখা একটি চিঠি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শনিবার কাপাসিয়ায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন শহিদুল্লাহ। স্থানীয় সাংসদ সিমিন হোসেনও এ ধরনের কোনো চিঠি পাননি বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন।

ভাইরাল হওয়া চিঠিটিতে দেখা যায়, এটি স্থানীয় সাংসদ সিমিন হোসেনকে উদ্দেশ্য করে লেখা। এতে প্রেরকের নাম হিসেবে গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২–এর সদ্যবিদায়ী জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক মো. হাসান শাহনেওয়াজের নাম রয়েছে। সেখানে তাঁর স্বাক্ষরও আছে। চিঠিতে বলা হয়, কাপাসিয়ায় ১৯ হাজার ৫০০টি বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপনের সময় প্রতিটি খুঁটি বাবদ চার হাজার টাকা করে অবৈধভাবে উত্তোলন করেছেন শহীদুল্লাহ। যার অঙ্ক দাঁড়ায় ৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন, বর্তমান সাংসদ সিমিন হোসেনের নাম ভাঙিয়ে এসব টাকা উত্তোলন করে সাংসদের সুনাম ক্ষুণ্ন করেছেন। নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে তিনি সাংসদকে চিঠির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন বলে উল্লেখ রয়েছে।

এসব অভিযোগ ওঠায় শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেছেন মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ। তিনি এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। বর্তমান সংসদের সঙ্গে আমার ভালো সম্পর্কের প্রতি ঈর্ষাকাতর হয়ে কেউ হয়তো এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াচ্ছে। যারা এ ধরনের তথ্য ছড়াচ্ছে, তারা আসলে সরকারের উন্নয়নকাজকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। তারা বর্তমান সাংসদের সুনাম নষ্ট করে ফায়দা লুটার চেষ্টা করছে। আমি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রতিবাদ করেছি।’

এ বিষয়ে জানতে সদ্যবিদায়ী গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২–এর জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক শাহনেওয়াজের মুঠোফোনে বারবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তাই তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২–এর বর্তমান মহাব্যবস্থাপক (চলতি দায়িত্ব) মো. সরোয়ার জাহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি মাত্র চার-পাঁচ দিন হলো দায়িত্ব নিয়েছি। বিষয়গুলো আমার জানা নেই।’ তিনি বলেন, খুঁটিপ্রতি টাকা নেওয়া হচ্ছে, এ–সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ এই কয়েক দিনে তাঁর কাছে আসেনি।

স্থানীয় সাংসদ সিমিন হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার কাছে এমন কোনো চিঠি আসেনি। সবাই চিঠিটি যেমনভাবে দেখেছে, আমিও সেভাবেই দেখেছি। তবে চিঠিটি দেখে আমি তাৎক্ষণিক শাহনেওয়াজ সাহেবের অফিশিয়াল নম্বরে ফোন করেছি। আমি জানি না, উনি অবসরে গেছেন। তারপর অফিস থেকে উনার নম্বর নিয়ে ফোন করেছি। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, এ ধরনের কোনো চিঠি তিনি পাঠাননি। অফিসের প্যাডে লেখা চিঠিতে তাঁর স্বাক্ষর থাকার বিষয়টিও তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি এই প্রশ্নের উত্তরে দাবি করেন, এ ধরনের কোনো চিঠি লেখেননি।’