সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নির্দেশনা

সরকারি চাকরিজীবীদের সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যমে সরকার বা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়, এমন কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে বলেছে সরকার। একই সঙ্গে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোনো সার্ভিস বা পেশাকে হেয়প্রতিপন্ন করে, এমন কোনো পোস্ট দেওয়া থেকেও বিরত থাকতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার নির্দেশিকা, ২০১৯ (পরিমার্জিত সংস্করণ)’ অনুসরণ করার বিষয়ে পরিপত্র জারি করে এসব বিধিনিষেধ মনে করিয়ে দিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অপব্যবহার বা নিজ অ্যাকাউন্টের ক্ষতিকারক বিষয়বস্তুর জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মচারী ব্যক্তিগতভাবে দায়ী হবেন এবং এ জন্য প্রচলিত আইন ও বিধিবিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়।
আরও যেসব বিধিনিষেধ
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রে বলা হয়েছে, জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থী কোনো রকম তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনো সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে, এমন বা ধর্মনিরপেক্ষতা নীতির পরিপন্থী কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট বা আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে, এরূপ কোনো পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। লিঙ্গবৈষম্য বা এ-সংক্রান্ত বিতর্কমূলক কোনো তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করা যাবে না। জনমনে অসন্তোষ বা অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোনো বিষয় লেখা, অডিও বা ভিডিও ইত্যাদি প্রকাশ বা শেয়ার করা যাবে না। ভিত্তিহীন, অসত্য ও অশ্লীল তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ছাড়া অন্য কোনো রাষ্ট্র বা রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্যসংবলিত পোস্ট, ছবি, অডিও বা ভিডিও আপলোড, কমেন্ট, লাইক ও শেয়ার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
পরিপত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বিষয়বস্তু ও বন্ধু নির্বাচনে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সতর্কতা অবলম্বন এবং অপ্রয়োজনীয় ট্যাগ, রেফারেন্স বা শেয়ার করা পরিহার করতে বলা হয়েছে।

জানতে চাইলে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুন প্রথম আলোকে বলেন, দেখা যাচ্ছে কোনো কোনো কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম কীভাবে ব্যবহার করতে হয় সেটা সম্পর্কে জানেন না। তাঁরা বিভিন্ন জাতীয় ব্যক্তিত্ব বা অন্য ক্যাডার সম্পর্কে এমন মন্তব্য, শেয়ার বা লাইক করেন যা একজন কর্মকর্তার জন্য শোভণীয় নয়। পরিপত্রটি জারি করা হয়েছে যেন কর্মকর্তা-কর্মচার্রীরা বিষয়গুলো মেনে চলেন। পরস্পর ক্যাডারের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে যেন জনগণকে আরও উন্নত সেবা করা যায়।