সীতাকুণ্ডে রেলওয়ের জায়গায় ঝুঁকিপূর্ণ অবৈধ বসতি

সীতাকুণ্ডের কুমিরা রেলওয়ে স্টেশনের অন্তত ৬০ শতক জায়গায় অবৈধভাবে বসতঘর নির্মাণ করা হয়েছে। বর্ষায় যেকোনো মুহূর্তে ঘরগুলোর ওপর পাহাড়ধসে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে।

অভিযোগ উঠেছে, রেলওয়ের বর্তমান ও সাবেক কয়েকজন স্টেশনমাস্টার ও কর্মচারী দীর্ঘদিন এ স্টেশনে চাকরি করার সুবাদে তাঁদের দখল করা রেলের জায়গা ভূমিহারা লোকজনের কাছে বিক্রি করে দেন।

সরেজমিনে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কুমিরা রেলওয়ে স্টেশনের পুরোনো টিবি হাসপাতালের নিচে পাহাড়ের পাদদেশে টিন দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে প্রায় ৩০টি কাঁচা ঘর। কিছু পরিবার ভিটার জায়গা দখলস্বত্ব নিয়ে ঘর তুলেছে। বাকিরা ভাড়ায় থাকছে। প্রতি ভিটার দাম পড়েছে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। ভাড়ায় থাকা লোকজন ঘরপ্রতি ৮০০ থেকে দেড় হাজার টাকা ভাড়া দেন।

ট্রাকচালক মো. বেলাল উদ্দীন বলেন, ‘আমরা স্থানীয় রমজান আলী ডাক্তারের কাছ থেকে মাসে এক হাজার ২০০ টাকা দিয়ে ঘরটি ভাড়া নিয়েছি।’

 অপর বাসিন্দা দিদারুল আলম বলেন, রমজান আলী এখানে জমি বিক্রি ও ঘর তুলে ভাড়া দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, তফাজ্জল হোসেন ৬০ শতক জায়গার দখলস্বত্ব স্থানীয় কামাল উদ্দীনের কাছে বিক্রি করেন ২৫ হাজার টাকায়। তিনি তা দুই লাখ টাকায় রমজান আলীর কাছে বিক্রি করেন।

রেলওয়ের জায়গা দখলস্বত্ব বিক্রি হওয়ার কথা স্বীকার করে কুমিরা স্টেশনমাস্টার সাইফুদ্দীন বশর বলেন, ‘জনৈক আবদুর রহমান কিছু জায়গা বিক্রি করেছে। আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। তা ছাড়া বাকি জায়গাগুলোতে অবৈধ ঘর তোলা হয়েছে আমি এ স্টেশনে আসার আগে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রমজান আলী মোহাম্মদপুর এলাকায় হাতুড়ে চিকিৎসক। আর আখাউড়া থেকে আসা পুরোনো বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চাকরির সুবাদে তফাজ্জল কুমিরা রেল কলোনিতে বসবাস করছেন। আবদুর রহমান ওই স্টেশনে গ্যাং আটের মিস্ত্রি হিসেবে বর্তমানে চাকরিরত।

তফাজ্জল হোসেন জায়গাগুলো বিক্রি করার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার কাছে থাকা জায়গাগুলোর দখল ছেড়ে দিয়েছি। এগুলো বিক্রি করেছে আগের স্টেশনমাস্টার আবদুল মান্নান। আবদুল মান্নান বদলি হয়ে যাওয়ায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।’

এ বিষয়ে জানতে রমজান আলীকে ফোন করা হলে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর ফোন বন্ধ করে দেন।

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সুকুমার ভৌমিক ভূসম্পত্তি কর্মকর্তার (এস্টেট অফিসার) সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়ে মুঠোফোনে বলেন, ‘যদি কোনো কর্মকর্তা এর সঙ্গে জড়িত থাকে নাম বলেন, আমি ব্যবস্থা নেব।’

চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহকারী ভূসম্পত্তি কর্মকর্তা আবদুল বারী বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। যদি এ রকম ঘর উঠে থাকে তবে তদন্ত সাপেক্ষে তা উচ্ছেদের ব্যবস্থা করা হবে।