সীমা অতিক্রম করলে পরিণতি হবে ভয়াবহ: কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের
ছবি: ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, হেফাজতে ইসলাম নামের একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক অপশক্তি দেশের বিদ্যমান স্বস্তি ও শান্তি বিনষ্টে বিভিন্ন স্থানে যে অব্যাহত তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে, তা সহনশীলতার সব মাত্রা অতিক্রম করেছে। যারা দেশব্যাপী তাণ্ডব চালিয়েছে বা এখনো চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের সতর্ক করে দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের জনগণের ধৈর্য ও সহনশীলতার একটা সীমা আছে। সীমা অতিক্রম করলে তার পরিণতি হবে ভয়াবহ।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আজ বুধবার সকালে তাঁর সরকারি বাসভবনে আয়োজিত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, জনগণের জানমালের সুরক্ষা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সন্ত্রাস, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উসকানিদাতাদের তালিকা প্রস্তুত করে তাদের রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে হবে।

পঁচাত্তরে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হারানো গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করেছেন বলে উল্লেখ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের মাধ্যমে জাতিকে কলঙ্কমুক্ত ও বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে দাঁড় করিয়েছেন। দেশের অর্থনীতিকে দাঁড় করিয়েছেন শক্ত ভিতের ওপর।

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, সরকার পরিচালনার দায়িত্বে আছে বলেই প্রতিক্রিয়াশীল চক্রের ধ্বংসাত্মক রাজনীতির বিপরীতে আওয়ামী লীগ এখনো দায়িত্বশীল আচরণ করছে। দেখাচ্ছে সহনশীলতা।

বাংলাদেশের মানুষ ধর্মপ্রাণ, কোনো ধর্মান্ধতাকে সমর্থন দেয় না জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘আগুন নিয়ে খেলবেন না। আগুন নিয়ে খেলতে গেলে সে আগুনে আপনাদের হাত পুড়ে যাবে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ভূমি অফিসে আগুন দেওয়ায় জমিজমার গুরুত্বপূর্ণ দলিল, খতিয়ান, নামজারি রেকর্ড ছাই হয়ে গেছে। ভূমির প্রয়োজনীয় দলিল-নথিপত্রের অভাবে বংশপরম্পরায় মামলা-মোকদ্দমায় লড়তে হবে। সুতরাং, যারা এসবের সঙ্গে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি-জামায়াত নৈরাজ্য সৃষ্টি করে ধ্বংসাত্মক আগুন–সন্ত্রাসের মাধ্যমে ২০১৩-১৪ সালে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করার ঘৃণ্য খেলায় মত্ত হয়েছিল। তাদের সাবধান করে দিয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা আঘাত এলে প্রতিঘাত করতে জানেন। আক্রমণ করলে তাঁরা পাল্টা–আক্রমণও করতে জানেন।

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, ‘ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দেবেন না। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর অবমাননা জাতি আর সহ্য করবে না। বঙ্গবন্ধুর ছবি ও ভাস্কর্যের ওপর যারা হামলা করেছে, আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাদের এই ধৃষ্টতার জবাব দেবেন।’

মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের দেশপ্রেমিক জনগণকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, আগুন–সন্ত্রাস ও অশুভ শক্তিকে প্রতিহত করতে হবে। পরাজিত করতে হবে।

‘পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের কাছে নতিস্বীকার করে সরকার গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে’—এমন অভিযোগের জবাবে সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ঢাকাসহ দেশের সব কটি সিটি করপোরেশনে জনস্বার্থে গণপরিবহন চালুর যে সিদ্ধান্ত সরকার নিয়েছে, সে ব্যাপারে কেউ কেউ বিরূপ মন্তব্য করছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। জনগণের দাবির মুখে জনস্বার্থে দুর্ভোগ কমাতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ নিয়ে কোনো বিভ্রান্তির অবকাশ নেই।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দু-এক দিনের মধ্যে দূরপাল্লার বাস সার্ভিস চালুর ব্যাপারে কেউ কেউ অপপ্রচার চালাচ্ছে। বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করেছে। যা মোটেও সত্য নয় বলে জানান তিনি।