‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের’ মাধ্যমে ইসির তদন্ত চান ৪২ নাগরিক

নির্বাচন কমিশন ভবন
ফাইল ছবি

কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগ এনে ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের’ মাধ্যমে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন দেশের ৪২ জন নাগরিক। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের কাছে আবেদন করেছেন তাঁরা।

আজ শনিবার এক ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলন করে নাগরিকদের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়। রাষ্ট্রপতির বরাবর দেওয়া আবেদনে ইসির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উপস্থাপন করা হয়, তা সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়। এতে বলা হয়, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই বিভিন্নভাবে গুরুতর অসদাচরণে লিপ্ত হয়েছেন। কমিশনের সদস্যরা একদিকে গুরুতর আর্থিক দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, যা অভিশংসনযোগ্য অপরাধ। একইভাবে তাঁরা বিভিন্নভাবে আইন ও বিধিবিধানের লঙ্ঘন করে গুরুতর অসদাচরণ করে চলেছেন।

রাষ্ট্রপতির কাছে দেওয়া আবেদনে পত্রিকায় প্রকাশিত আর্থিক অনিয়মের খবর, কর্মচারী নিয়োগে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বিরুদ্ধে আরেক নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের করা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ, নিয়মবহির্ভূতভাবে তিনজন নির্বাচন কমিশনারের তিনটি গাড়ি ব্যবহার, ইভিএম কেনা ও ব্যবহারে অনিয়ম, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে অসদাচরণ, অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়।

ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি এবং নির্বাচনসংক্রান্ত গুরুতর অসদাচরণের কারণে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের মাধ্যমে তদন্ত হওয়ার উচিত। এরপর এই তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রপতি বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে অনিয়মের কারণে অপসারণ করবেন বলে তাঁরা আশা করেন।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশে সব সময়ই নির্বাচন কমিশন কমবেশি বিতর্কিত ছিল। কিন্তু সরাসরি আর্থিক অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ছিল, তা দেখা যায়নি। রাষ্ট্রপতির পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর কাছেও এই বিষয়গুলো দেখার জন্য অনুরোধ করেন তিনি। আর সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনারেরা স্বেচ্ছায় দায়িত্ব থেকে দূরে থাকবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সম্পূর্ণ আইনানুগভাবে ও সংবিধান মেনেই তাঁরা এসব অভিযোগ করেছেন। এখন নির্বাচন কমিশনকে স্বেচ্ছা সরে দাঁড়ানো দরকার।

ভার্চ্যুয়াল এই সংবাদ সম্মেলনে আরও যুক্ত ছিলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এম হাফিজউদ্দিন খান, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক আসিফ নজরুল, অধ্যাপক সি আর আবরার প্রমুখ।