সৌদি নারীরা গাড়ি চালাবেন: পাঠক প্রতিক্রিয়া
সৌদি সরকার সম্প্রতি তাদের দেশের নারীদের গাড়ি চালানোর এবং ফতোয়া দেওয়ার অধিকার দিয়েছে। সেখানকার সরকারের এ পদক্ষেপের বিষয়ে প্রথম আলোর ফেসবুক পেজ থেকে পাঠক প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হয়েছিল। অনেক পাঠক সেখানে মন্তব্য করেছেন। বেশির ভাগ পাঠকই এটাকে যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত বলেছেন, আবার কেউ কেউ করেছেন নেতিবাচক মন্তব্য।
মেহেদি হাসান রুবেল নামের এক পাঠক লিখেছেন, ‘ইসলামের নাম দিয়ে চালিয়ে দেওয়া নানাবিধ কুসংস্কারকে সৌদি আরব নিন্দা জানাতে শুরু করেছে দেখে ভীষণ ভালো লাগছে। নারীরা যে শুধু নারী নন, মানুষও, সে রায়টাই দিয়েছে সৌদি। ধন্যবাদ সৌদি আরব।’ নুরুল ইসলাম লিখেছেন, ‘খুব ভালো, শালীনতা বজায় রেখে নারীদের যোগ্যতা অনুযায়ী সব কাজের অনুমতি দেওয়া উচিত।’ নানা অজুহাতে নারীদের দমিয়ে রাখাকে অমানবিক মনে করছেন জেমস হালদার। তিনি লিখেছেন, ‘নারীরাই পুরুষ জন্ম দেন, তাহলে পুরুষ জামানায় নারী কেন পুরুষের মতো সমান অধিকার পাবে না? অজুহাত দিয়ে দমন অমানবিক। সৌদি দেরিতে হলেও বুঝতে পারছে। নারীরা আরও অনেক অধিকার ফিরে পাবে সৌদিসহ অন্যান্য দেশে।’
এম এ আমিন খান লিখেছেন, ‘নারীদের ফতোয়া দেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে, এটা ভালো কথা। যারা ফতোয়া দেবেন, সেসব নারী আলেমরা কোরআন ও সহিহ হাদিস মেনেই ফতোয়া দেবেন। এ ক্ষেত্রে পুরুষ আলেমদের সঙ্গে তাঁদের ফতোয়ার মৌলিক পার্থক্য হওয়ার সুযোগ নেই।’
এত দিন পর্যন্ত সৌদি আরব ছিল একমাত্র দেশ, যেখানে নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি ছিল না। এমনকি জনসমক্ষে গাড়ি চালালে তাদের গ্রেপ্তার ও জরিমানা করা হতো। গাড়ি চালানোর অধিকার দেওয়াকে আমাদের পাঠকের অনেকেই নেতিবাচক মনে করছেন।
ইতি হালদার নামের একজন পাঠক লিখেছেন, ‘আমি চাই, কোরআন-হাদিসে ঠিক যতটুকু অধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে, ততটুকু দেওয়া হোক। এর বাইরে কিছু করলে তা কখনো ভালো ফল বয়ে আনবে না।’ শারমিন সাথি লিখেছেন, ‘সৌদি হলো নবী-রাসুলদের দেশ। আসল ইসলামের সূচনা ও নিয়মনীতি সেখানে। তো, নারীদের হাদিস-কোরআনের নিয়মেই চালানো উচিত। নইলে ধীরে ধীরে আরও অনেক সুবিধা চাইবে। আর এখানেই যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে সেই দেশের আসল পরিচয় আর মর্যাদাই থাকবে না। অন্যান্য দেশ তাহলে কী শিখবে আর ধর্মীয় নিয়ম মানবে।’ মাসরুর তানিম বলেন, ‘গাড়ি চালানোর নিয়মটা একটি ইসলামিক দেশে না থাকা ভালো।’
পাঠকদের কেউ কেউ এ দুটি পদক্ষেপকে যথেষ্ট মনে করছেন না। তানজিলা জিহা লিখেছেন, ‘নারীদের গাড়ি চালানোর অনুমতি দিয়েছে, তার মানেই কিন্তু আমূল পরিবর্তন নয়।’ শুক্লা দেব লিখেছেন, ‘কী অভিমত জানাব, নারীর স্বাধীনতা দেবে পুরুষ, এটাই তো সবচেয়ে বড় লজ্জার।’ তৌসিফ হোসেন বলেছেন, ‘মন্তব্য দিয়ে কী হবে, সেখানে তো রাজতন্ত্র!’
বিশ্বের বেশির ভাগ ইসলামি দেশ সৌদি আরবকে আদর্শ মনে করে। ফলে নারী অধিকার সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত দুটি বিশ্বের অন্যান্য দেশের কর্মকাণ্ডেও প্রভাব ফেলবে। হয়তো বদলাবে নারী সম্পর্কিত তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতিনির্ধারণী পন্থা।