সৌদিতে আগুনে ৯ বাংলাদেশির মৃত্যু

শাহ আলমের মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর মা ও স্ত্রী। ছবি: এম সাদেক
শাহ আলমের মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর মা ও স্ত্রী। ছবি: এম সাদেক

সৌদি আরবের রিয়াদে আসবাব তৈরির একটি কারখানায় আগুন লেগে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে বাংলাদেশি ও ভারতীয়সহ ১১ জন মারা গেছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নয়জন বাংলাদেশি।
সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
সৌদি আরবের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জানানো হয়, রিয়াদের শিফা সানাইয়া এলাকায় অবস্থিত ‘তিতাস ফার্নিচার’ নামের আসবাব তৈরির কারখানায় গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে আগুন লাগে। কারখানায় ১৫ জন শ্রমিক কর্মরত ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ১৩ জন বাংলাদেশি ও দুজন ভারতীয়। আগুনে পুড়ে ঘটনাস্থলে ১১ জন মারা গেছেন। তাঁদের মধ্যে নয়জন বাংলাদেশি। বাকি দুজন ভারতীয়। আগুনে পুড়ে বিকৃত হয়ে যাওয়ায় লাশগুলো শনাক্ত করা যায়নি। দুর্ঘটনা থেকে চারজন বাংলাদেশি রক্ষা পেয়েছেন। তাঁরা অক্ষত আছেন।

আগুন থেকে রক্ষা পাওয়া মানিকগঞ্জের আবদুল হান্নানের বরাত দিয়ে সৌদি আরবে বাংলাদেশ দূতাবাসের দ্বিতীয় সচিব (শ্রম) মো. মিজানুর রহমান মোবাইলে প্রথম আলোকে জানান, মারা যাওয়া বাংলাদেশিদের মধ্যে সাতজনের বাড়ি কুমিল্লায়। তাঁরা হলেন মো. জালাল, আবদুল গাফফার, বাহা উদ্দিন, শাহ আলম, নাজির হোসেন, মো. সেলিম ও মতিউর রহমান। অন্য দুজন ফেনীর জাকির হোসেন ও মাদারীপুরের মো. আক্কাস।
এই নয়জনের মধ্যে পাঁচজনের পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা পাওয়া গেছে। বাহা উদ্দিনের বাড়ি কুমিল্লার হোমনা উপজেলার চাঁদেরচর গ্রাম। বাবা ইসমাইল হোসেন। একই গ্রামের সেলিম। তাঁর বাবার নাম জানা যায়নি। মতিউর রহমানের বাড়ি হোমনার কলাগাছিয়ায়। তাঁর বাবা আবদুল করিম। জালালের বাড়ি তিতাস উপজেলার দুলারমপুর গ্রামে। তিনি রুস্তম আলীর ছেলে। একই উপজেলার কালিপুর গ্রামের হবি মিয়ার ছেলে শাহ আলম।
হান্নান ছাড়া আগুন থেকে বেঁচে যাওয়া বাকি বাংলাদেশি তিনজন হলেন দুলাল, রাজু ও মাসুদ। তাঁদের সবার বাড়ি কুমিল্লায়।

মিজানুর রহমান প্রথম আলেকে আরও জানান, মরদেহগুলো স্থানীয় সমোচি হাসপাতালের হিমাগারে রাখা হয়েছে। লাশ শনাক্ত করার পর দ্রুত দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। এ ছাড়া সরকারি বিধি অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রবাসীদের দেখভাল করার দায়িত্বে থাকা ওয়েজআর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের পরিচালক মো. জিয়াউল হক প্রথম আলোকে জানান, সৌদি আরবে নয়জন বাংলাদেশির মারা যাওয়ার বিষয়টি তাঁরা জেনেছেন। এ ব্যাপারে সেখানকার দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে যত দ্রুত সম্ভব তাঁদের লাশ দেশে আনা হবে।