সৌদির সঙ্গে মিল রেখে ১০১ গ্রামে আজ ঈদ
সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে পাঁচ জেলার ১০১টি গ্রামে আজ মঙ্গলবার পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হচ্ছে। অনেকই সকাল থেকেই নতুন জামাকাপড় পরে ঈদের জামাতে অংশ নেন। দেশ ও জাতি এবং মুসলিম জাহানের শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। নামাজ আদায় শেষে পশু কোরবানি দিচ্ছেন।
প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
শেরপুর: ছয় গ্রামে ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হচ্ছে। এসব গ্রাম হলো শেরপুর সদর উপজেলার চরখারচর পূর্বপাড়া ও পশ্চিমপাড়া; নকলা উপজেলার চরকৈয়া ও নারায়ণখোলা; ঝিনাইগাতী উপজেলার চতল এবং নালিতাবাড়ী উপজেলার নন্নী মধ্যপাড়া গ্রামে আজ ঈদ উদ্যাপিত হচ্ছে। এ ছয়টি গ্রামের প্রায় দুই হাজার মানুষ আজ সকালে ঈদের নামাজ আদায় করেন। একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সদর উপজেলার বেতমারী-ঘুঘুরাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আবদুল মজিদ আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, এসব গ্রামের মানুষ ৪৩ বছর ধরে সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদ উদ্যাপন করে আসছেন। তাঁরা ফরিদপুরের সুরেশ্বর পীরের অনুসারী বলে তিনি জানান।
পটুয়াখালী: সকাল নয়টায় সদর উপজেলার বদরপুর ইউনিয়নের বদরপুর দরবার শরিফ জামে মসজিদে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ইমামতি করেছেন বদরপুর দরবার শরিফের প্রধান হাফেজ মাওলানা মহাজন লিল্লাহি। সকাল থেকেই নতুন জামাকাপড় পরে ঈদের নামাজ আদায় করেন অনেক মানুষ।
বদরপুর দরবার শরিফের পরিচালক মোহাম্মদ নাজমুস সায়াদাত আখন্দ বলেন, এ বছরও জেলার সদর উপজেলার বদরপুর ও ছোট বিঘাই; গলাচিপা উপজেলার সেনের হাওলা, পশুরীবুনিয়া, নিজ হাওলা ও কানকুনিপাড়া; বাউফল উপজেলার মদনপুরা, শাপলাখালী, বগা, ধাউরাভাঙ্গা, সুরদী, সাবুপুরা ও আমিরাবাদ এবং কলাপাড়া উপজেলার লালুয়া, নিশানবাড়িয়া, মরিচবুনিয়া, উত্তর লালুয়া, মাঝিবাড়ি, টিয়াখালীর ইটবাড়িয়া; পৌরশহরের নাইয়াপট্টি, বাদুরতলী এবং মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের সাফাখালী—এই ২২ গ্রামের পাঁচ হাজারের বেশি পরিবার ঈদুল আজহা উদ্যাপন করছে।
এসব এলাকায় অনেকেই পটুয়াখালীর সদর উপজেলার বদরপুর দরবার শরিফের পীর, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া পীর এবং চট্টগ্রামের পটিয়ার এলাহাবাদ পীরের অনুসারী। ১৯২৮ সাল থেকে এসব এলাকায় প্রতিবছর সৌদি আরবের দিনক্ষণের সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদ্যাপন করা হয়।
চাঁদপুর: হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, শাহরাস্তি ও মতলব উত্তরের ৪০টি গ্রামে আজ পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হচ্ছে। সকাল নয়টায় জেলার ফরিদগঞ্জের টোরা মুন্সিরহাটের ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে ইমামতি করেন মাওলানা রহমত উল্যাহ।
জেলার হাজীগঞ্জের সাদ্রা দরবার শরিফের মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহ.) ১৯৩৩ সাল থেকে এই এলাকায় এমন ধর্মীয় প্রথা চালু করেন। এরপর থেকে তাঁর অনুসারীরা সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে এভাবে দুটি পবিত্র ঈদ ও রোজা পালন করছেন।
পিরোজপুর: মঠবাড়িয়া ও নাজিরপুর উপজেলার আটটি গ্রামের ৬০০ পরিবার আজ ঈদ উদ্যাপন করছে। সকাল নয়টায় মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়নের ভাইজোড়া গ্রামের খোন্দকারবাড়ি ও কচুবাড়িয়া গ্রামের হাজী ওয়াহেদ আলী হাওলাদারবাড়িতে ঈদের দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। একই সময়ে নাজিরপুরের খেজুরতলা বাজারের একটি মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় করেছে সেখানের ৭০টি পরিবার। তবে আজ ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করলেও তাঁরা আগামীকাল বুধবার পশু কোরবানি দেবেন।
নাজিরপুরের শেখ মাটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান হাওলাদার বলেন, এক যুগ ধরে আহলে হাদিসের অনুসারী শেখ মাটিয়া ইউনিয়নের রঘুনাথপুর ও খেজুরতলা গ্রামের ৭০টি পরিবার সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখা ও দুটি ঈদের নামাজ আদায় করে আসছে।
মাদারীপুর: চারটি উপজেলার ২৫ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ঈদ উদ্যাপন করছেন। জেলার বেশ কয়েকটি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হলেও প্রধান ও বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে সদর উপজেলার তাল্লুক গ্রামের চরকালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে। সকাল নয়টায় তাল্লুকে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। ইমামতি করেন মাস্টার আবদুল হাশেম মিয়া। জামাত শেষে একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি করে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।