স্ত্রী ও সন্তান হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড কমে যাবজ্জীবন

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

নড়াইলে স্ত্রী ও চার বছর বয়সী শিশুকে হত্যার দায়ে শাহেন শাহ নামের এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। সেই সঙ্গে এক যুগের বেশি সময় ধরে কনডেমড সেলে থাকা এই আসামিকে কারাগারে রাখতে বলা হয়েছে। একই মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তাঁর বোন আলেয়া বেগমকে খালাস দিয়েছেন আপিল বিভাগ। অন্য কোনো মামলা না থাকলে তাঁকে মুক্তি দিতেও বলা হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের ভার্চ্যুয়াল আপিল বিভাগ আজ বুধবার এই রায় দেন। শাহেন শাহ ও আলেয়া বেগমের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের করা জেল আপিল আংশিক মঞ্জুর করে এ রায় দেওয়া হয়।

নথিপত্র থেকে জানা যায়, নড়াইলে এক নারী ও তাঁর চার বছর বয়সী কন্যাশিশুকে হত্যার ঘটনায় ২০০০ সালের ১৪ জুলাই একটি হত্যা মামলা হয়। এই মামলায় ২০০৭ সালের ১৩ আগস্ট বিচারিক আদালত রায় দেন। রায়ে চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে আসে। আসামিরা আপিল করেন। শুনানি নিয়ে ২০১১ সালের ১৯ জুন হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে শাহেন শাহ ও আলেয়া বেগমের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে। অপর দুই আসামি শাহেন শাহর অন্য দুই বোন তানজিলা ও রুমার সাত বছরের কারাদণ্ড হয়।

হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০১২ সালে জেল পিটিশন করেন শাহেন শাহ ও আলেয়া বেগম। এর ধারাবাহিকতায় জেল আপিলের শুনানি শেষে আজ রায় দেওয়া হয়। আর ২০০৭ সাল থেকে এই দুই ভাইবোন কনডেমড সেলে আছেন বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

মৃত্যুদণ্ড বহাল

হবিগঞ্জের রাজনগরে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরাজের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে এই আসামির জেল আপিল খারিজ করে আজ রায় দেওয়া হয়। আদালতে পৃথক জেল আপিলের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত হিসেবে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এ বি এম বায়েজীদ। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, সাধারণত জেল আপিল করা আসামির ব্যক্তিগত আইনজীবী না থাকায় আপিল নজরে এনে তা দ্রুত শুনানির উদ্যোগ দেখা যায় না। এসব জেল আপিলকারীদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত হিসেবে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। সর্বোচ্চ আদালত অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দ্রুত এসব পুরানো মামলা শুনানির উদ্যোগ নিয়েছেন। এতে করে সাধারণ বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হচ্ছে।

হবিগঞ্জের রাজনগরে ২০০৪ সালের ৭ মার্চ শাহিদা আক্তারকে হত্যার ঘটনায় তাঁর ভাই বাদী হয়ে নবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। ২০০৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালত ওই নারীর স্বামী সিরাজুল ইসলামকে মৃত্যুদণ্ড দেন। ২০১২ সালের ১ আগস্ট হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে সিরাজের মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে। এর বিরুদ্ধে সিরাজ জেল পিটিশন করেন। আজ সেই জেল আপিল খারিজ করে রায় দেন সর্বোচ্চ আদালত। ২০০৭ সাল থেকে সিরাজ কনডেমড সেলে আছেন বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।