স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অভিযান ইতিবাচক, তবে যথেষ্ট নয়: টিআইবি

অভিযানের খবরে গত রোববার কিশোরগঞ্জের ভৈরবে স্বদেশ জেনারেল হাসপাতালে তালা ঝুলিয়ে পালিয়ে যান সবাই। পরে অনুমোদনহীন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আরেকটি তালা ঝুলিয়ে দেন উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারাফাইল ছবি

সারা দেশে অবৈধ বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চলমান অভিযানকে ইতিবাচক বলেছে দুর্নীতিবিরোধী সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। তবে সংগঠনটি বলেছে, দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অনিয়ম, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার বেড়াজাল ছিন্ন করে খাতটির সার্বিক সুশাসন নিশ্চিত করতে এ অভিযান যথেষ্ট নয়।

আজ বুধবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছে টিআইবি। তারা সমস্যার দীর্ঘমেয়াদি ও স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও রোগনির্ণয় কেন্দ্রগুলোর সেবার মান পরিবীক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ ও সুশাসন নিশ্চিত করার জন্য একটি নিরপেক্ষ তদারকি কর্তৃপক্ষ গঠনের দাবি জানায়।

গত ২৬ মে সারা দেশের অনিবন্ধিত বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধের নির্দেশনা দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। পরদিন থেকে সারা দেশে শুরু হয় অভিযান, যা এখনো চলছে।

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলছেন, অভিযান শুরুর মাত্র এক দিনের মাথায় বিপুলসংখ্যক নতুন লাইসেন্স ও নবায়নের আবেদন জমা পড়ায় বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতে যে যথাযথ তদারকির প্রকট অভাব ছিল, তা প্রমাণিত হয়েছে। এমন অবস্থায় চলমান অভিযান বেহাল ও অরাজকতাপূর্ণ খাতটিতে সুশাসন নিশ্চিতে কতটা কার্যকর হবে, সেটি প্রশ্নসাপেক্ষ।

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দীর্ঘ মেয়াদে সুফল পেতে বেসরকারি চিকিৎসাসেবা নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষিত খসড়া আইনটি চূড়ান্ত করে দ্রুততার সঙ্গে আইন হিসেবে প্রণয়ন করতে হবে এবং এটির কার্যকর বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা খাতের মান পরিবীক্ষণ ও সুশাসন নিশ্চিত করতে একটি শক্তিশালী নিরপেক্ষ তদারকি কর্তৃপক্ষ গঠন করা জরুরি।

ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, বিনা লাইসেন্স, মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্সসহ স্বাস্থ্যসেবার নিয়মনীতি ভঙ্গ করে যেসব প্রতিষ্ঠান এত দিন কার্যক্রম পরিচালনা করেছে, সেসব প্রতিষ্ঠানের মালিকানার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় এনে শাস্তির সম্মুখীন করতে হবে। পাশাপাশি নিয়মবিরুদ্ধ এসব কর্মকাণ্ডকে যাঁরা বিভিন্নভাবে সুরক্ষা ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছেন, তাঁদেরও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় শর্ষের ভেতরে থাকা ভূত তাড়ানো সম্ভব হবে না।