হকারদের জন্য ভালোবাসা

হকাররাই আসল হিরো

মো. রাসেল রানা

ছাপা পত্রিকা বিতরণকারী হকারই হলেন আমাদের আসল হিরো। যাঁরা ভোরের আলো ফোটার আগেই কাজে নেমে পড়েন এবং অক্লান্ত পরিশ্রম করে পাঠকদের হাতে হাতে প্রথম আলো পৌঁছে দেন।

ঢাকা শহরে দুটি এজেন্টের (ঢাকা হকার্স ও কল্যান সমিতি) ৯৬টি সেন্টারে ১৭৮ জন সুপারভাইজার–ডিস্ট্রিবিউটরের পাশাপাশি আছে প্রায় চার হাজার হকার। এসব হিরোদের সঙ্গে আমাদের দৈনন্দিন কাজ। এই হিরোরা রোদ, বৃষ্টি, ঝড় উপেক্ষা করে প্রতিদিন নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। তাঁরা প্রত্যেকে প্রথম আলোকে হৃদয়ে ধারণ করেন এবং বিশ্বাস করেন যে প্রথম আলো তাঁদের ব্যবসায়ের মূল চালিকা শক্তি।

করোনাকালে অনেকেই ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এবং ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় নিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন। এই শিল্পকে ধরে রাখতে, আরও সমৃদ্ধ করতে তাঁদের ভূমিকা সত্যিই প্রশংসনীয়। তাঁদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সেন্টার সুপারভাইজার–ডিস্ট্রিবিউটররাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

দুই সমিতির নেতা–কর্মী এবং অফিস কর্মীরাও প্রথম আলোকে ভালোবাসেন অন্তর দিয়ে। সর্বদাই আমাদের সুপরামর্শের পাশাপাশি সহযোগিতা করেন সব ধরনের কাজে। ভালো লাগে যখন জানতে পারি, তাঁদের অনেকেরই ছেলে–মেয়ে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হয়েছেন কিংবা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন বা উচ্চতর ডিগ্রির জন্য দেশের বাইরে পড়াশোনা করছেন। প্রথম আলোর ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে এই সব হিরোদের জানাই আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।

মো. রাসেল রানা: সহকারী ব্যবস্থাপক, বিপণন, ঢাকা

এই বন্ধন ভালোবাসার

মোহাম্মদ জিয়াউল হাসান

সারা দেশের মতো চট্টগ্রামেও মানুষের প্রথম পছন্দ প্রথম আলো। দিনের শুরুতে পাঠকের প্রথম পছন্দের কাগজটি তাঁদের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেন হকার আর এজেন্টরা। গত ২৩ বছর ধরে তাঁরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। তাঁদের সঙ্গে আমাদের দুই যুগের বন্ধন। এই বন্ধন শুধু আর্থিক নয়, আত্মিকও। এই বন্ধন ভালোবাসার।

পরস্পরেরর প্রতি ভালোবাসা আর আন্তরিকতা আছে বলেই তাঁরা প্রথম আলো বিলি করতে আনন্দ পান। বিশেষ করে চট্টগ্রাম শহরের সবচেয়ে বড় চার এজেন্ট, চট্টগ্রাম হকার্স সমিতি, মো. ইসহাক, মো. ইব্রাহিম ও আল হারুন। পত্রিকার প্রচারসংখ্যা বৃদ্ধি এবং পত্রিকার বিপননের জন্য তাঁদের যে আন্তরিকতা, তা দেখে আমাদের খুব ভালো লাগে। প্রথম আলোকে তারা নিজেদের পত্রিকা বলেই মনে করেন। প্রথম আলোর প্রসঙ্গ এলে তাঁরা বলেন, ‘আমাদের পত্রিকা’। তাঁদের এই মনোভাব আমাদের সামনে এগিয়ে চলার পথে শক্তি এবং প্রেরণা যোগায়।

সবার শেষে আমি চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর এলাকার সকল সেন্টার সুপারভাইজার, হকার ভাই এবং সম্মানিত এজেন্টদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি প্রথম আলোর প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসার জন্য। আগামী দিনগুলোতে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করে আমাদের পুরোনো পাঠকদের ফিরিয়ে আনব —এটাই আমাদের আশা।

মোহাম্মদ জিয়াউল হাসান: সহকারী ব্যবস্থাপক, বিপণন, চট্টগ্রাম

সম্পর্ক পেশাগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নেই

মো. আখতারুজজামান সরকার

প্রথম আলোর সার্কুলেশন কর্মী হিসেবে প্রায় এক দশকধরে উত্তরবঙ্গ অঞ্চলের এজেন্ট-হকার ভাইদের সঙ্গেকাজ করছি।
তাঁদের সঙ্গে আমার সম্পর্ক এখন শুধু পেশাগত পর্যায়ে সীমাবদ্ধ নেই। আমি অনুভব করি, তা এখন অনেক ক্ষেত্রে আরও গভীরে পৌঁছে গেছে।

এজেন্ট-হকারদের ভালোবাসা আর সহযোগিতা পেয়ে পেয়ে একধরনের অধিকার জন্মেছে। শুরু থেকেই সব কাজে তাঁদের পাশে পেয়েছি, সহযোগিতা পেয়েছি। তাঁরা ভালোবেসে প্রথম আলোর প্রচারসংখ্যা উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। এ জন্য আপনাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।আগামী দিনেও আমাদের আস্থার সম্পর্ক এগিয়ে যাবে।

মনে পড়ে, ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বগুড়ায় প্রথম আলো ছাপা শুরু হয়। নিয়মিত খুব সকালেই যাতে পাঠকের হাতে পত্রিকা তুলে দেওয়া যায়, সে জন্য প্রথম আলোর পক্ষ থেকে বগুড়ায় নিজস্ব ছাপাখানা স্থাপন করা হয়। এরপর থেকে সকালে এজেন্ট পয়েন্টে এসে প্রথম আলোর জন্য আর অপেক্ষা করে বসে থাকতে হয় না।

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুতে সংবাদপত্রেরঅনেক পাঠক আতঙ্কিত হয়ে বাসায় পত্রিকা রাখা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। সেই সময়হকার ভাইয়েরা যেভাবে সাহসের সঙ্গে পত্রিকা বিতরণ করে গেছেন, তা সত্যিই স্মরণ করার মতো।

এখন সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে যাচ্ছে। সচেতন পাঠকেরা জেনেছেন, সংবাদপত্রের মাধ্যমে করোনাভাইরাস ছড়ায় না। তাই পাঠকেরাওবাসায় পত্রিকা রাখতে শুরু করেছেন। আশা করছি, আগামী দিনগুলোতে আমরা সবাই মিলে প্রথম আলোকে আরওসামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাব।

মো. আখতারুজজামান সরকার: জোনাল ব্যবস্থাপক, উত্তরবঙ্গ