হঠাৎ বড় হওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় সবাই ব্যস্ত: গণপূর্তমন্ত্রী

জাইকা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য দিচ্ছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। গণপূর্ত অধিদপ্তর অডিটোরিয়াম, সেগুনবাগিচা, ঢাকা, ২ জানুয়ারি। ছবি: বিজ্ঞপ্তি
জাইকা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত সেমিনারে বক্তব্য দিচ্ছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। গণপূর্ত অধিদপ্তর অডিটোরিয়াম, সেগুনবাগিচা, ঢাকা, ২ জানুয়ারি। ছবি: বিজ্ঞপ্তি

গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, হঠাৎ উত্থানের প্রচেষ্টা বর্তমান সময়ের বড় ব্যাধি। অনেকেই শর্টকাট উপায়ে এগোতে চায়। কেউ গ্রুপ অব কোম্পানিজের মালিক হতে চায়, কেউ কোটি টাকা আয় করতে চায়, আবার কেউ দ্রুততার সঙ্গে চেয়ারম্যান, সাংসদ, মন্ত্রী হতে চায়। হঠাৎ বড় হওয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতায় সম্পদ আহরণে সবাই ব্যস্ত। এ প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। মাইন্ড সেটআপ পরিবর্তন করতে হবে। ঐকান্তিক ইচ্ছা, গভীর মনোনিবেশ, অধ্যবসায় ও নিরলস প্রচেষ্টা থাকলে সাফল্য আসতে বাধ্য।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় গণপূর্ত অধিদপ্তর অডিটোরিয়ামে জাইকা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ আয়োজিত ‘সুশাসন ও উন্নয়ন’ এক শীর্ষক সেমিনারে গণপূর্তমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রণালয়ের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, ‘চাকরিজীবী সবাই সততা অবলম্বন করছেন তা নয়, আবার সিস্টেম একেবারে স্বচ্ছ তাও সঠিক নয়। টেন্ডার পদ্ধতি ও ঠিকাদারদের কাজের পদ্ধতির কারণে প্রকৌশলীরা ভয় পেয়ে ফাইলে হাত না দিলে উন্নয়ন আটকে যাবে, তাঁদের ভয় যুক্তিসংগত। আমরা কাজের সিস্টেমকে এখনো আপডেট করতে পারিনি। কাজেই কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি হবেই। তবে দেখা উচিত, এই বিচ্যুতি ইচ্ছাকৃত, না প্রয়োজনের তাগিদে। এখন কাজের পদ্ধতি এমন যে, নিয়ম প্রতিপালনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করার সুযোগ না দিয়ে জোর করলে প্রকৌশলীদের কিছুই করার থাকে না। সিস্টেমের কারণে কাজে ব্যত্যয় ঘটলে সামান্য ত্রুটির জন্য প্রকৌশলীরা যদি হয়রানির শিকার হন, তাহলে তাঁদের কর্মোদ্যম ও মানসিকতা ভেঙে যাবে। এ কারণে উন্নয়নের মহাসোপানে অবকাঠামো উন্নয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই সিস্টেমের পরিবর্তন করতে হবে।’

অহেতুক তথ্যহীন সংবাদের ভিত্তিতে গণপূর্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যাতে হয়রানি না হন, সে জন্য মন্ত্রী দুদক কমিশনারকে অনুরোধ জানান। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘কেউ অন্যায় ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হলে তাদের ছাড় দিতে রাজি নই। এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স। কিন্তু কেউ অন্যায়ভাবে হয়রানির শিকার যেন না হয়, সেটা দেখতে হবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের লক্ষ্য বাস্তবায়নে আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করতে চাই। আমরা স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার বলেন, জনকল্যাণে সুশাসন রাষ্ট্রব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ। সুশাসনের মধ্যে জবাবদিহি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। গণপূর্ত অধিদপ্তর সবার আগে শতভাগ ই-জিপিতে টেন্ডার কার্যক্রম শুরু করেছে। ফলে, নিশ্চিত হচ্ছে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি। এই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির মাধ্যমে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। নিজেদের মধ্যে আত্মশুদ্ধি থাকতে হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং সভাপতিত্ব করেন জাইকা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার ড. মোজ্জাম্মেল হক খান। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম। স্বাগত বক্তব্য দেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী ও জাইকা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাহফুজ আহমেদ।