হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিলেন সাক্ষী রিকশাচালক রিপন

পুরান ঢাকায় দর্জিদোকানি বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় গতকাল মঙ্গলবার সাক্ষ্য দিয়েছেন বিশ্বজিৎকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া রিকশাচালক রিপন সরদার। জবানবন্দিতে তিনি ওই হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন এবং কাঠগড়ায় থাকা আট আসামিকে শনাক্ত করেন। পরে আসামিপক্ষের জেরায় রিপন সরদার বলেন, ৫০ কোটি টাকা দিলেও তিনি মিথ্যা বলবেন না। যা দেখেছেন তা-ই আদালতে বলেছেন। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪-এ এই মামলায় গতকাল রিপন সরদার ছাড়াও বিশ্বজিতের মামাতো ভাই নন্দ ঘোষ, ফুফাতো ভাই অপু চন্দ্র দাস ও মহানগর হাকিম শাহরিয়ার মাহমুদ আদনান সাক্ষ্য দেন। পরে বিচারক এ বি এম নিজামুল হক বৃহস্পতিবার এই মামলার পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন। রিপন আদালতে বলেন, গত বছরের ৯ ডিসেম্বর বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে তিনি মান্ডা থেকে সকালে যাত্রী নিয়ে বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় যান। সেখানে অনেক পুলিশ ছিল। এক দল মিছিল করছিল। তিনি ভাড়ার জন্য দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় একটি বোমা বিস্ফোরণের শব্দ পান। বোমার শব্দে এক ব্যক্তি ওই পার্কসংলগ্ন পেট্রলপাম্পের দিকে দৌড় দেন। ওই মিছিল থেকে ধাওয়া করে কয়েকজন ওই ব্যক্তিকে মারতে থাকে। ওই ব্যক্তি মার খেতে খেতে পাশের ভবনে উঠে যান। লোকগুলো সেখানেও তাঁকে চাপাতিসহ বিভিন্ন জিনিস দিয়ে মারতে থাকে। এরপর তিনি রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড়ে নিচে নেমে শাঁখারীবাজারের গলির মুখে গিয়ে পড়ে যান। তখন ওই ব্যক্তি পানি চাইলে পাশের এক দোকানি পানি খাওয়ান। এরপর কয়েকজন ওই ব্যক্তিকে ধরে তাঁর রিকশায় তুলে দিলে তিনি মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান।
রিপন আরও বলেন, হাসপাতালে নিয়ে রিকশা থেকে নামানোর অনেক পর চিকিৎসক এসে ওই ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করেন। এর অনেক পরে ওই ব্যক্তির বড় ভাই উত্তম আসেন। তখন তিনি জানতে পারেন, ওই ব্যক্তির নাম বিশ্বজিৎ। এ সময় রিপন কাঠগড়ায় থাকা আসামি রফিকুল ইসলাম, মাহফুজুর রহমান, এমদাদুল হক, জি এম রাশেদুজ্জামান, এইচ এম কিবরিয়া, কাইউম মিয়া, সাইফুল ইসলাম ও গোলাম মোস্তফাকে শনাক্ত করেন।
সাক্ষী নন্দ ঘোষ ও অপু আদালতে বলেন, তাঁরা মিটফোর্ড হাসপাতালে গিয়ে বিশ্বজিৎকে মৃত দেখেন। পরে তাঁকে গ্রামে নিয়ে সৎকার করেন।
গতকাল পর্যন্ত এই মামলায় ২৫ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হলো। এই মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত বাকি ১৩ আসামি পলাতক রয়েছেন। আসামিরা সবাই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী।