হুমকি দিয়ে বাল্যবিবাহ ঠেকাল স্কুলছাত্রী

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকিয়েছে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী (১৫)। গত সোমবার সন্ধ্যায় বিয়ের আগে সে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে আত্মহত্যার হুমকি দেয়। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিয়ে বন্ধ হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার কালেরপাড়া ইউনিয়নের একটি গ্রামে ওই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। মেয়েটির বাবা ২০০৪ সালে মারা গেছেন। মেয়েটির মা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। দুই বছর আগে এক চাচাতো ভাই (৩২) মেয়েটিকে প্রেম ও বিয়ের প্রস্তাব দেন। এতে রাজি না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হন চাচাতো ভাই। মেয়ে ও মেয়ের মায়ের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও সোমবার সন্ধ্যায় বিয়ের আয়োজন করে ছেলেটির পরিবার। বরযাত্রী নিয়ে মেয়ের বাড়িতে যায় তারা। বিয়ের জন্য জোরাজুরির একপর্যায়ে মেয়েটি একটি ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। তখন চাচা ও চাচাতো ভাই দরজা ভাঙার চেষ্টা করতে থাকেন। এতে মেয়েটি আত্মহত্যার হুমকি দেয় এবং আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে প্রস্তুতি নেয়। বাড়ির অন্য লোকজন ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মেয়েটিকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন এবং বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানান।

ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিয়া সুলতানা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার এবং বিয়ে বন্ধ করেন। বরের মাকে আটক করা হয় ও মেয়েটিকে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। মেয়ের মা এ ঘটনায় বর ও তাঁর মা-বাবার বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে থানায় মামলা করেন। পরে পুলিশ বরের মাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।

বরের মা বলেন, ‘আমার দেবরের মেয়ে বলেই তাকে ছেলের বউ করতে চেয়েছিলাম। এলাকাবাসী শত্রুতা করায় এ ঘটনা ঘটেছে।’

মেয়েটি অভিযোগ করেছে, ওই চাচাতো ভাই তাকে বিয়ে করার কথা বলে দুই বছর ধরে উত্ত্যক্ত করছেন। সোমবার জোর করে বিয়ে করার চেষ্টা করায় সে আত্মহত্যার হুমকি দেয়। মেয়ের মা দাবি করেন, তিনি বিয়েতে রাজি ছিলেন না।

ইউএনও রাজিয়া সুলতানা বলেন, ‘আমি সেখানে গিয়ে থানা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাল্যবিবাহ থেকে তাকে উদ্ধার করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’