হেফাজতকে নিষিদ্ধের দাবি জানাল আহলে সুন্নাত

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ

হেফাজতে ইসলামকে উগ্রবাদী সংগঠন ঘোষণা করে তাদের নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন ‘আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশ’-এর ৫৫১ আলেম। শনিবার সকালে এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা এই দাবি জানান। রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের উচ্চাভিলাষ থেকে দেশজুড়ে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং মানবিক বিয়ের নামে জঘন্য অপরাধ ঢাকতে ইসলামের মৌলিক বিধিবিধানের ওপর হেফাজতে ইসলামের হস্তক্ষেপ দেশের আলেম সমাজকে লজ্জায় ফেলেছে বলে তাঁদের অভিমত।
আহলে সুন্নাতে ওয়াল জামাআতের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

বিবৃতিতে আহলে সুন্নাতের আলেমরা বলেন, সামাজিক অনাচারে যুক্ত হওয়া, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করা, জানমালের ক্ষতিসাধন করা ইসলাম সমর্থন করে না। এ ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি বা সংগঠনের কাছে দেশ-মিল্লাত-মাজহাব কখনো নিরাপদ নয়।

সরকারের উদ্দেশে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘হেফাজতকে উগ্র জঙ্গি সংগঠন ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করুন। দেশে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখুন। দেশে প্রচলিত শিক্ষানীতি, আইন এবং নীতিমালাবিরোধী কওমি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান-বোর্ডগুলোর ওপর পরিপূর্ণ সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করুন।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, হেফাজতের সঙ্গে ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের দূরতম সম্পর্কও নেই। ইসলাম হেফাজতের নামে উগ্র হেফাজতিদের রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের উচ্চাভিলাষ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে গোটা আলেম সমাজ আজ লজ্জিত হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ২০১০ সালে হেফাজতের জন্মের পর থেকেই তারা সহিংসতা ছড়িয়ে দিচ্ছে। কখনো ইসলাম প্রচারক আল্লাহর অলিদের মাজার-খানকাহ শরিফ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। আবার কখনো দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সুফিবাদী জনতাকে প্রকাশ্যে হামলার হুমকি দিয়ে তারা এ দেশে উগ্র জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

বিবৃতিতে আলেমরা বলেন, বর্তমানে ইসলাম রক্ষার কথা বলে হেফাজতের কিছু চিহ্নিত দায়িত্বশীল নেতা হাজার বছর ধরে প্রচলিত ইসলামের মৌলিক বিধানের ওপর হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করছেন। শরিয়তের শাশ্বত বিধান পাল্টে দিয়ে চুক্তিভিত্তিক সাময়িক বিয়ের প্রবর্তন করার দুঃসাহস দেখাচ্ছেন, যা সমাজে অবাধ অনাচার, যৌনাচার ও যুবসমাজকে বিকৃত পথে চলতে উৎসাহ দেবে। ইসলাম সম্পর্কে ভুল বার্তা পৌঁছাবে।
হেফাজতের তথাকথিত দায়িত্বশীলেরা মূলত নিজেদের জঘন্য অপরাধ ঢাকতেই ইসলামকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেন

বিবৃতিদাতারা। আলেমরা বলেন, ইসলামে চুক্তিভিত্তিক বিয়ে হারাম।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় চেয়ারম্যান কাজী মুহাম্মদ মুঈনুদ্দীন আশরাফী, মহাসচিব সৈয়দ মছিহুদ্দৌলাহ; সৈয়দ অছিয়র রহমান, সোলাইমান আনসারী, আবদুল বারী জিহাদি, এম এ মান্নান, নুরুল আলম হেজাজী, কাজী আবদুল ওয়াজেদ, এম এ মতিন, কাজী হারুনুর রশীদ, আশরাফুজ্জমান কাদেরি, মুখতার আহমদ, স উ ম আবদুস সামাদ, শাইখুল হাদিস আফজাল হোসাইন, অধ্যক্ষ আল্লামা আবদুল আলিম রেজভী, অধ্যক্ষ আল্লামা মুফতি আহমদ হোসাইন কাদেরী, অধ্যক্ষ মাহবুবুর রহমান, আবুল কাশেম ফজলুল হক, লিয়াকত আলী, ছাদেকুর রহমান হাশেমী, জুলফিকার আলী চৌধুরী, আবু বকর ছিদ্দিকী, আবদুল মতিন, খোরশিদ আলম, আবদুর রহিম কাদেরী, ইসমাইল নোমানী, গোলাম মুস্তফা, আবদুল আজিজ আনোয়ারী, আলী আকবর রেজভি, মহিউদ্দীন হাশেমী, বদিউল আলম রেজভি, শোয়াইব রেজা, খলিলুর রহমান নিজামী, মুহাম্মদ ইদ্রিস, মুশতাক আহমদ, ছালেকুর রহমান কাদেরী, আবুল কালাম আমিরী, খলিলুর রহমান, আবুল আসাদ মুহাম্মদ জুবাইর রজভি, শাহ নুর মুহাম্মদ আল কাদেরী, জসিম উদ্দীন আজাহারি, মুহাম্মদ উল্লাহ, আবদুল আওয়াল, আলাউদ্দিন আল কাদেরী, গোলাম মুস্তফা মুহাম্মদ নুরুন্নবী, মুহাম্মদ আনিসুজ্জামান, জালাল উদ্দীন কাদেরি, মাহমুদুল হাসান, জামেউল আখতার আশরাফী, জসিম উদ্দীন কাদেরী, মুহাম্মদ সরওয়ার উদ্দীন, আনোয়ার হোসাইন, জালাল উদ্দীন আজহারী, মুহাম্মাদ আবদুল হালিম, মুহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মুহাম্মদ সাইফুল আলম, মুহাম্মদ হাফিজুর রহমানসহ আহলে সুন্নাতের বিভিন্ন পদে থাকা ৫৫১ জন আলেম।