হেরোইন বহনের দায়ে তিন বাসশ্রমিকের যাবজ্জীবন

কুষ্টিয়ায় বাসে হেরোইন বহনের দায়ে বাসচালকসহ তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অনাদায়ে ১ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কুষ্টিয়া দায়রা জজ অরূপ কুমার গোস্বামী এই রায় দেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন বাসচালক সোহেল রানা, বাসের সুপারভাইজার ঠান্ডু মণ্ডল ও বাসচালকের সহকারী মো. সাগর।

বাসচালক সোহেলের বাড়ি মিরপুর উপজেলার গোবিন্দপুর মালাকারপাড়ায়। বাবার নাম নবীন প্রামাণিক। সুপারভাইজার ঠান্ডুর বাড়ি সদর উপজেলার ফকিরাবাদ নওদাপাড়ায়। বাবার নাম হামিদ আলী মণ্ডল। বাসচালকের সহকারী সাগরের বাড়ি সদর উপজেলার খেজুরতলায়। বাবার নাম আজিজুর রহমান।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া র‍্যাব ক্যাম্পের সদস্যরা গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারেন, চুয়াডাঙ্গা থেকে কুষ্টিয়াগামী যাত্রীবাহী একটি লোকাল বাসে বাসশ্রমিকেরা বিপুল পরিমাণ হেরোইন বহন করে কুষ্টিয়ায় আনছেন।

র‍্যাবের গোয়েন্দারা আলমডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রীবেশে ওই বাসে ওঠেন। অন্যরা কুষ্টিয়া বাস টার্মিনালে সাদাপোশাকে অবস্থান নেন। র‍্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে বাসশ্রমিকেরা টার্মিনালে হেরোইন না নামিয়ে ফের যাত্রী নিয়ে চুয়াডাঙ্গার উদ্দেশে রওনা দেন।

কুষ্টিয়া শহরের বটতৈল মোড়ে বাসটি থামিয়ে চালক সোহেল, সুপারভাইজার ঠান্ডু ও চালকের সহকারী সাগরকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‍্যাব। একপর্যায়ে সুপারভাইজার বাসের টুলবক্সের ভেতর থেকে ১ কেজি হেরোইন বের করে দেন। যার মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা।

পরে তিনজনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়। কুষ্টিয়া মডেল থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক মুন্সী বাহারুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন। একই বছরের ২৩ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তিনি। সাক্ষ্য নিয়ে আজ রায় ঘোষণা করেন আদালত।

কুষ্টিয়া আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি এ এস এম আসাদুজ্জামান মামুন বলেন, ১৯৯০ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯(১) ধারার টেবিলের ১(খ) ক্রমিকে আসামিদের দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিয়েছেন আদালত। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। জব্দ করা হেরোইন বিধি মোতাবেক ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আসামিপক্ষের আইনজীবী জাকির হোসাইন বলেন, তিনি তাঁর মক্কেলদের সঙ্গে আলাপ করে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।