হোম অফিস ও সৃজনশীল কাজের স্বীকৃতি

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে প্রথম আলোর কর্মীদের সুরক্ষায় হোম অফিস শুরু হয়। ঘরে থাকতে থাকতে কর্মী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে যাতে একঘেয়েমি কাজ না করে তাই প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান একটি পুরস্কারের ঘোষণা দেন।  তিনি কর্মীদের কাছে সৃজনশীল কাজ (লেখা/ছবি/ভিডিও) আহ্বান করেছিলেন। সম্পাদকের আহ্বানে মোট ১৪২ জন কর্মী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লেখা/ তোলা ছবি/ ধারণকৃত ভিডিও মানবসম্পদ বিভাগে জমা দেন। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নির্ধারিত মূল্যায়নকারীরা নিরপেক্ষভাবে সেরা সৃজনশীল কাজ যাচাই-বাছাই করেন। এ বাছাইপর্বে সম্পাদক নিজেও যুক্ত হন।

সৃজনশীল কাজের পুরস্কারের মূল্যায়নকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন- জাফর আহমেদ রাশেদ (সাবেক কর্মী), ফটো এডিটর আবীর আব্দুল্লাহ, ডিজিটাল ইমেজিং স্পেশালিস্ট সৈয়দ লতিফ হোসাইন , উপসম্পাদক (অনলাইন, ফিচার) শেখ সাইফুর রহমান এবং চিফ অপারেটিং অফিসার,চরকি রেদওয়ান রনি।

পুরস্কার হিসেবে বিজয়ীরা পেয়েছেন নিজের পছন্দে প্রথমা প্রকাশনের বই। প্রতি বিভাগে প্রথম পুরস্কার হিসেবে ৩ হাজার টাকা সমমূল্যের বই, দ্বিতীয় পুরস্কার ২ হাজার টাকা এবং তৃতীয় পুরস্কার বিজয়ী ১ হাজার টাকা সমমূল্যের বই পেয়েছেন।

আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম, ফখরূল ইসলাম হারূন (বাঁ থেকে)

সেরা লেখক: প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন আবু হেনা মোস্তফা কামাল।
বিদেশ সংস্করণে (উত্তর আমেরিকা) ‘নীল সার্কাসের ঘোড়া’য় তিনি নিদারুণ উপলব্ধির কথা তুলে ধরেছেন। দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ভিডিও বিভাগের সাদিয়া মাহ্জাবীন ইমাম। জীবনের উপেক্ষিত বিষয়কে তিনি করোনার সঙ্গে সম্পৃক্ত করে তুলে ধরেছেন। তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন বাণিজ্য বিভাগের ফখরূল ইসলাম হারূন। শামসুর রাহমানের কাব্যগ্রন্থের নামের মধ্য দিয়ে করোনাসময়ের অসাধারণ অনুভব প্রকাশিত হয়েছে তাঁর ‘করোনাদিনে কবি শামসুর রাহমান ও তুমি’ লেখনীর মাধ্যমে।

রোজিনা ইসলাম, মাহবুব কায়সার, মুহাম্মদ আব্দুল মুহাইমেনের ছেলে মনন মাহমুদ (বাঁ থেকে)

সেরা ছবি: সাঈদ রিমন। এই যুবক করোনায় অসহায় মানুষের কাছে দাঁড়িয়েছেন। এই যুবকের ছবির গল্প তুলে ধরে এ বিভাগে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন রিপোর্টিং বিভাগের রোজিনা আক্তার (রোজিনা ইসলাম)। সেরা ছবি বিভাগে দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছেন মানবসম্পদ বিভাগের মাহবুব কায়সার। মা গিয়েছেন সাহায্যের আশায়, আর ছেলে বসে কাঁদছে পেটের ক্ষুধায়- প্রথম আলো অনলাইনে ছবিটি প্রকাশিত হলে প্রথম আলো ফেসবুকে শেয়ার হওয়ার পর ছবিটি আলোচিত হয়েছিল। অনেকে শিশুটিকে সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেন। পরে মাহবুব বিভিন্ন সূত্র ধরে সম্পূর্ণ অপরিচিত এই ছেলেটিকে খুঁজে বের করেন এবং যাঁরা সাহায্য করতে চেয়েছিলেন তাঁদের সঙ্গে শিশু ও তার পরিবারকে যোগাযোগ করিয়ে দেয়।
এ বিভাগে তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন ফিচার বিভাগের মুহাম্মদ আব্দুল মুহাইমেনের ছেলে মনন মাহমুদ। লকডাউনের শুরুতে ২৭ মার্চ ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সে ছবি তুলেছিল।

মো. সাইফুল্লাহ, অনামিকা মণ্ডল, হাসান মাহমুদ (বাঁ থেকে)

সেরা ভিডিও: ফিচার বিভাগের মো. সাইফুল্লাহ একটি শিক্ষণীয় ভিডিও তৈরি করে এ বিভাগে প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার অনামিকা মণ্ডল পেয়েছেন দ্বিতীয় পুরস্কার। হোম অফিস করার সময় নিজের পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে ভিডিও তৈরি করেই তিনি এ বিভাগে বিজয়ী হয়েছেন। পাবনার আলোকচিত্রী হাসান মাহমুদ তাঁর স্ত্রীর গাওয়া গান আর করোনাকালীন সাংবাদিকদের ত্যাগের বার্তা নিয়ে ভিডিও তৈরি তৃতীয় পুরস্কার পেয়েছেন।