১৬ জেলায় প্রায় ২৪ হাজার আসামি

আসামি ও গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী রয়েছেন।

  • সবচেয়ে বেশি—২৪টি মামলা হয়েছে নোয়াখালীতে। আসামি ৭৯৬১।

  • সর্বোচ্চ গ্রেপ্তার হয়েছে চট্টগ্রামে—২০১ জন।

  • কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের তিনজন কাউন্সিলরও আসামি।

গ্রেপ্তার
প্রতীকী ছবি

কুমিল্লার ঘটনার জের ধরে সম্প্রতি দেশের ১৬ জেলায় হিন্দুদের বাড়িঘর, পূজামণ্ডপ, মন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলার ঘটনায় দায়ের করা ৮৫টি মামলায় ২৩ হাজার ৯১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৮৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আসামি ও গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মী রয়েছেন। আবার রাজনৈতিক পরিচয় নেই, এমন অনেককে এসব মামলায় আসামি ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে প্রায় ২৪ হাজার আসামির বেশির ভাগই অজ্ঞাতনামা বলে মামলার এজাহার পর্যালোচনায় দেখা গেছে। প্রথম আলোর প্রতিনিধিরা খোঁজ নিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

আসামিদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতা–কর্মীও আছেন

চাঁদপুর, নোয়াখালী, রংপুর, চট্টগ্রাম ও ফেনীতে দায়ের করা মামলাগুলোতে আসামির নামের তালিকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী আছেন। এর মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীই বেশি। আবার গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যেও বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মী রয়েছেন। রংপুরে গ্রেপ্তার হওয়াদের মধ্যে ছাত্রলীগের এক নেতা রয়েছেন।

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে পূজামণ্ডপে ভাঙচুর ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় জামায়াত নেতা ও সাবেক শিবির সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন আব্বাসিকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা তিনি স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, হাজীগঞ্জের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১০টি মামলা নেওয়া হয়েছে। এসব মামলায় প্রায় ৫ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। ঘটনার পর থেকে জামায়াত নেতা কামাল উদ্দিনসহ ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের সবাই এখন জেলহাজতে আছেন।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে হামলা-ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় চৌমুহনী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) জামাল হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাকেও হুকুমের আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় ৩ নম্বর আসামি করা হয়েছে জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম ওরফে সুমনসহ দলের ১০-১২ জন নেতা-কর্মীকে।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, নোয়াখালী-৩ আসনের সাবেক সাংসদ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা তাঁর অনুগত স্থানীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণের সঙ্গে বিভিন্ন
মাধ্যমে প্রচার করে হামলায় ইন্ধন দেন বলে স্থানীয়ভাবে জনশ্রুতি রয়েছে।

মামলার আসামি জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি চৌমুহনীতে হামলা-ভাঙচুরের আগের দিন (১৪ অক্টোবর) আদালতে হাজিরা দিয়ে ঢাকায় চলে যান। সেই থেকে তিনি ঢাকায় আছেন। পরে জানতে পারেন, ১৫ অক্টোবর চৌমুহনীতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় তাঁকেও আসামি করা হয়েছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।

এ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইনজীবী আবদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মন্দিরে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনার পর ক্ষমতাসীন দলের ইন্ধনে পুলিশ বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে একের পর এক মামলা দিচ্ছে। এতে মন্দিরে হামলাকারী প্রকৃত অপরাধীরা আড়ালে চলে যাচ্ছে। আর বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

রংপুরের পীরগঞ্জে মাঝিপাড়া গ্রামের বড়করিমপুর এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে ছাত্রলীগের এক নেতা ও মসজিদের একজন মুয়াজ্জিন রয়েছেন। গতকাল রোববার তাঁরা দুজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে পীরগঞ্জে সহিংস ঘটনার সঙ্গে তাঁদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন। ছাত্রলীগ নেতা সৈকত মণ্ডল কারমাইকেল কলেজের দর্শন বিভাগের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ থেকে সদ্য বহিষ্কৃত। অন্যদিকে র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার রবিউল ইসলাম রামনাথপুর ইউনিয়নের বটেরহাট জামে মসজিদের ইমাম।

পীরগঞ্জ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, পীরগঞ্জে সহিংসতার ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক তিনটি মামলা এবং একটি অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের মামলায় এখন পর্যন্ত ৬৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় পূজামণ্ডপে হামলা ও তোরণ ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক সাতটি মামলায় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির জাফর সাদেক, বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান, হাটহাজারী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম চৌধুরীসহ বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের আসামি করা হয়।

এ ছাড়া চট্টগ্রাম নগরের জে এম সেন হলের পূজামণ্ডপে তোরণ ভাঙচুরের মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হকের নেতৃত্বাধীন যুব ছাত্র অধিকার পরিষদের ১০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, তাঁরা পরিকল্পনা ও হামলাকারী। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে।

সাধারণ মানুষ, প্রতিবন্ধীও আসামি

ফেনীতে চারটি মামলায় ৬৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এঁদের মধ্যে একজন যুবদল, অপরজন স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা। বাকি ১৬ জন হলেন ফেনী পৌরসভার মধ্যম রামপুর গ্রামের আহনাফ তৌসিফ মাহমুদ লাবিব (২২), ফেনী সদর উপজেলার দক্ষিণ লেমুয়া গ্রামের মেহেদী হাসান মুন্না (২২), পৌরসভার মাস্টারপাড়ার আবদুল মান্নান (৪৬), ফেনী সদর উপজেলার পূর্ব মোটবী গ্রামের এনামুল হক রাকিব (২০), ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার দক্ষিণ ডেমরা এলাকার মো. মিরাজ (৩৩), কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার আমান সরকার বাজার এলাকার ফয়সল আহম্মেদ আল আমিন (১৯), ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামের আবদুস সামাদ জুনায়েদ (১৯), লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মাওলানা পাড়ার মো. সোহেল (২৬), ফেনী সদর উপজেলার পাঁচগাছিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন (৩২), সাইফুল ইসলাম (৩৮), বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জের মো. রোমন শেখ (১৬), তৌহিদুল ইসলাম জিদান (১৯), নোয়াখালীর সেনবাগের আবদুল্লাহ আল মিয়াজী (১৯), ফেনী পৌরসভার শান্তি কোম্পানি রোডের আজিম শরিফ (২৮) ও হাজারী রোডের ছাইদুল ইসলাম (২৯)।

জানতে চাইলে ফেনী সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মনির হোসেন বলেন, তদন্ত চলছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তারা গ্রেপ্তার আসামিদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছেন। তবে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার আসামিদের কারও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বা পরিচয় জানা যায়নি।

তবে ফেনী জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন দাবি করেন, তাঁদের দলের অঙ্গসংগঠন ফেনী পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ছয়েদুল ইসলাম ও পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আজিম শরিফকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। ফলে অন্য নেতা-কর্মীরাও আতঙ্কে রয়েছেন। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনায় জড়িত প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তি দাবি করেন। এ জেলায় চার মামলায় ৬৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার ১৮ জন।

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের ধুরিয়াইল শ্রীশ্রী কাজীরপাড় সর্বজনীন মন্দিরে হামলার অভিযোগে এক প্রতিবন্ধীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলার এজাহারে ওই প্রতিবন্ধী ব্যক্তি প্রতিমা ভাঙচুর করে দৌড়ে পালিয়ে গেছেন—এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

প্রতিবন্ধী ওই ব্যক্তির নাম রফিকুল ইসলাম ওরফে শাহীন (৫৬)। তাঁর বাড়ি গৌরনদী উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের ধুরিয়াইল গ্রামে। তিনি উপজেলা বিএনপির সদস্য। বিএনপির নেতা হওয়ায় বার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রাজ্জাক মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদককে দিয়ে মামলা করিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে আওয়ামী লীগের ওই নেতা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ক্ষোভ প্রকাশ করে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি জন্মগতভাবে একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। আমার বাঁ পা খাটো। আমি ঠিকমতো হাঁটতে পারি না। অথচ আমার বিরুদ্ধে ৫০ থেকে ৬০ জন সন্ত্রাসী নিয়ে মন্দিরে হামলা, ভাঙচুর ও ৩ লাখ টাকার মালামাল লুট করার অভিযোগে মামলা হয়েছে। এমনকি মামলার এজাহারে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আমি দৌড়ে পালিয়েছি—এ কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে হয়রানি করতে আমাকে ওই মামলার আসামি করা হয়েছে।’

উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ঐক্যফ্রন্টের সভাপতি দুলু রায় ও সাধারণ সম্পাদক মানিক মুখার্জী বলেন, একজন প্রতিবন্ধীকে মন্দিরে হামলার অভিযোগে করা মামলায় জড়ানো অমানবিক এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে বিতর্কিত করার শামিল। তাঁকে মানবিক কারণে ওই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া উচিত।

গৌরনদী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল হক বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তে প্রতিবন্ধীকে নির্দোষ পাওয়া গেলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিলেট নগরের হাওলাদারপাড়া এলাকার দুটি পূজামণ্ডপে ১৫ অক্টোবর দুপুরে হামলার ঘটনায় ৪২ জনের নাম উল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করে মামলা করেছিল সিলেট মহানগরের জালালাবাদ থানা-পুলিশ। এ ঘটনায় ১৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে এজাহারভুক্ত ১২ আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর থেকে শনিবার পর্যন্ত এ মামলায় নতুন কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। গ্রেপ্তারকৃত ১২ জনের কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পুলিশ পায়নি বলে জানিয়েছেন জালালাবাদ থানার ওসি নাজমুল হুদা খান।

কুমিল্লা নগরের নানুয়া দীঘির পাড় পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননাকে কেন্দ্র করে ১৩ অক্টোবর নগরের বিভিন্ন এলাকাসহ সদর দক্ষিণ, দেবীদ্বার ও দাউদকান্দি উপজেলার মন্দির ও পূজামণ্ডপে অগ্নিসংযোগ, হামলা, ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ও ফেসবুকে উসকানিমূলক বক্তব্য ছড়ানোর অভিযোগে নয়টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের জামায়াতের সমর্থিত তিন কাউন্সিলরসহ এজাহারনামীয় আসামি ৯২ জন ও অজ্ঞাতনামা ৭০০ জন। গ্রেপ্তার হয়েছেন ৫৬ জন।

কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি আনওয়ারুল আজিম বলেন, কোনো রাজনৈতিক নেতাকে এখন পর্যন্ত এসব মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়নি।

তবে কুমিল্লা নগরের ঠাকুরপাড়া কালীতলা এলাকার রক্ষাময়ী কালীমন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর, আগুন লাগানো ও মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পুলিশ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ মামলায় কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর গোলাম কিবরিয়া, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোশাররফ হোসেন এবং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একরাম হোসেনকে আসামি করা হয়েছে। তবে তাঁরা কেউ গ্রেপ্তার হননি।

মামলা ও গ্রেপ্তার বেশি দুই স্থানে

নোয়াখালী ও চট্টগ্রাম—এ দুই স্থানে মামলা সবচেয়ে বেশি। মামলার বিপরীতে আসামির সংখ্যাও এ দুই স্থানেই সবচেয়ে বেশি। নোয়াখালীতে ২৪ মামলায় ৭ হাজার ৯৬১ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৬২ জনকে। আর চট্টগ্রামে ৭ মামলায় আসামি ৩ হাজার ৮৫০ জন। এর মধ্যে ২০১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন থানা থেকে পাওয়া তথ্যে জানা গেছে, ১৩ থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বিভিন্ন মন্দির, পূজামণ্ডপ, দোকানপাট, বাড়িঘরে হামলা–ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। এসব ঘটনায় গত শুক্রবার পর্যন্ত বেগমগঞ্জে ১০টি, হাতিয়ায় ১০টি এবং চাটখিল, সোনাইমুড়ী, সেনবাগ ও কবিরহাট থানায় একটি করে মামলা হয়েছে।

চট্টগ্রাম নগর ও জেলায় পূজামণ্ডপে হামলা ও তোরণ ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক সাতটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ৩৫০ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় সাড়ে ৩ হাজার জনকে আসামি করা হয়।

[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার নিজস্ব প্রতিবেদক প্রতিনিধিরা]